পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যা জানতে হবে
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানতে হবে সেগুলো পর্যায় ক্রমে আলোচনা করা হলো। বর্তমান সময়ে অনেকেই নতুন ল্যাপটপ এর পরিবর্তে পুরাতন ল্যাপটপ কেনার চিন্তা ভাবনা করছেন। আবার অনেকেই কিনে ফেলেছেন। অনেক সময় ল্যাপটপ কেনার পর দেখা যায় যে, ল্যাপটপ ঠিক মত কাজ করছে না বা লাকিং করছে অথবা স্পিড অনেক কম।
ভুমিকাঃ
আপাত দৃষ্টিতে ল্যাপটপের বাহ্যিক দিক দেখে পুরাতন লাপটপ কিনলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কারন ল্যাপটপ গুলো যেভাবে ডেকোরেশন করা থাকে তা দেখে বোঝার উপায় নেই যে ল্যাপটপ টি কত দিনের পুরনো।
এর ফলে অনেক দুর্ভোগের শিকার হতে হয় অনভিজ্ঞ ক্রেতাদের।আপনি যে ব্রান্ডের ল্যাপটপ ই কিনেন না কেন চেষ্টা করবেন বিজনেস সিরিজ ল্যাপটপ কেনার।
কারন বিজনেস সিরিজ ল্যাপটপ গুলো লং লাস্টিং হয়ে থাকে। এ ধরনের ল্যাপটপ গুলোর পারফরমেন্স অন্য ল্যাপটপ এর তুলনায় ভালো।
তাই পুরাতন ল্যাপটপ ক্রয়ের আগে যে বিষয় গুলো অবশ্যই জানতে হবে সেগুলো পরযায় ক্রমে আলোচোনা করা হলোঃ
ডিসপ্লে টেস্টঃ
ল্যাপটপ টি হাতে নেওয়ার পর দেকতে হবে যে কোনো প্রকার বাহ্যিক দাগ বা স্ক্রাচিং আছে কিনা। যদি কনো প্রকার স্ক্রাচিং না থাকে সেক্ষেত্রে এরপর ল্যাপটপ স্ক্রিনের ওপরে দেকতে হবে ,স্ক্রিন টি ফ্রেশ কি না। আর স্ক্রিন টি আসলেই ফ্রেশ কি না তা দেখার জন্য আমাদের ইন্টারনেট সংযোগ করে নিয়ে গুগোল বা ক্রোম এ গিয়ে লিখতে হবে Online display test এবং সার্চ অপশনে ক্লিক করতে হবে।
সার্চ দেওয়ার পর প্রথমেই যে সাইট টি আসবে সেই সাইটে প্রবেশ করতে হবে। সাইটে প্রবেশ করার পর প্রয়োজনীয় আক্সেস দিতে হবে। আক্সেস করা হয়ে গেলে প্রথমে নিম্নের ছবিটির মতো ইন্টেরফেস সো করবে।
এখানে ডিসপ্লে টেস্টের ক্ষেত্রে ১৩ টি টেস্টের কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন কালার দিয়ে টেস্ট করাবে, এবং বিভিন্ন লেখা বা রো তেও টেস্ট করাবে। তাই যদি ডিসপ্লের খুদ্র থেকে খুদ্রতর সমস্যা থাকে তাহলেও তা ধরা যাবে। প্রথমে স্ক্রিন টি ভালভাবে চেক করে স্ক্রল করে নিচের দিকে আসবেন। স্ক্রল করার সময় আপনাকে Step 1, Step2, Step3............ এইভাবে দেখাবে।
Step 2 তে দেকতে পাবেন যে ব্লাক কালারের ডিসপ্লে রাখা হয়েছে, কারন এখানে যদি আপনার ডিসপ্লে তে হয়াইট বা ব্লাক কোনো ধরনের স্ক্রাচ থাকে তাহলে তা অনায়াসেই দেখা যাবে। ডিসপ্লে টি ভালভাবে চেক করার পর , আবারও স্ক্রল করে Step 3 যেতে হবে। এখানে একটি হোয়াইট ডিসপ্লে দেখাবে অর্থাৎ এখানে যদি কোনো ব্লাক ফাঙ্গাস থাকে তাহলে বোঝা যাবে।
অতএব পুরো ডিসপ্লে টি ভালভাবে চেক করতে হবে। এভাবে স্ক্রল করলে, ডিসপ্লে তে পরযাইক্রমে যে ১৩ টি কালার গুলো এবং টেক্সট দেখাবে সেগুলো ভালমতো দেকতে হবে যে কোথাও কোনো ফাঙ্গাস বা স্কাচিং আছে কি না। যদি কোনো প্রকার স্ক্রাচিং থাকে তাহলে সেই ল্যাপটপ ক্রয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কীবোর্ড টেস্টঃ
কীবোর্ড হলো ল্যাপটপের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। পুরাতন ল্যাপটপের ক্ষেত্রে অনেক সময় কীবোর্ড এর সমস্যা থাকতে পারে। তাই ল্যাপটপ টি ক্রয় করার সময় অবশ্যয় কীবোর্ড চেক করে কিনতে হবে।
কিভাবে কীবোর্ডের প্রত্যেকটি বাটন চেক করা যায়?
কীবোর্ড টেস্ট করার জন্য প্রথমে একট ব্রাউজার ওপেন করতে হবে , এরপর Online keyboard test
লিখে সার্চ করতে হবে। সার্চ করার পর প্রথমে যে সাইট টা আসবে তা ওপেন করলে নিচের ছবির মতো ইন্টারফেস দেখাবে
এই ইন্টারফেসটি আসার পর প্রত্যেকটি কীবোর্ড অর্থাৎ A to Z বাটন প্রেস করে দেকতে হবে যে সবগুলো বাটন ঠিকঠাক মতো কাজ করছে কিনা। যদি কীবোর্ডের বাটন গুলো প্রেস করার পর , ডিসপ্লে তে প্রদর্শিত বাটন গুলো সাদা বা পুরন হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে বাটন গুলো ঠিক আছে।
কিন্তু যদি কীবোর্ডের বাটন গুলো প্রেস করার পর , ডিসপ্লে তে প্রদর্শিত বাটন গুলো সাদা বা পুরন না হয় তাহলে বুঝতে হবে বাটন গুলো অকেজো। তাই ল্যাপটপ কেনার সময় অবশ্যই সতর্কতার সাথে লাপ্টপের কীবোর্ড চেক করে কিনতে হবে।
ব্যাটারি টেস্টঃ
এবার ব্যাটারি টেস্ট, ব্যাটারি টা বর্তমানে কি রকম অবস্তায় আছে তা জানার জন্য কিছু ট্রিক্স জানতে হবে। প্রথমে ল্যাপটপের ডিসপ্লের ব্রাইটনেস যাই থাকুক না কেন তা সর্বোচ্চ দিয়ে, লাপ্টপের টেস্ট করার সুরুতে ব্যাটারি আইকনের ওপরে মাউস টি রেখে দেখে নিতে হবে যে কত পার্সেন্ট চার্জ আছে এবং কত ঘন্টা চলবে।
এরপর ল্যাপটপ টি ১০-১৫ মিনিট ব্যবহার করতে হবে। এবার এই ১০-১৫ মিনিট পরে পুনরায় চেক করতে হবে যে কত পার্সেন্ট কমেছে এবং কত ঘন্টা দেখাচ্ছে। আর এছারা আরেকটি উপায়ে ব্যটারি টেস্ট করা যায়। সেটি হলো , প্রথমে This PC তে গিয়ে তারপর C Drive ওপেন করতে হবে।
C Drive ওপেন করার পর নিচের দিকে Battery Report নামে একটি অপশন আছে সেখানে ক্লিক করলে নিচের ইন্টেরফেস টি ওপেন হবে।
লাপ্টপের কনফিগারেশন টেস্টঃ
লাপ্টপের This PC তে রইট সাইডে ক্লিক করলে Properties নামে একটি অপশন আসবে, সেই অপশনে ক্লিক করলে নিচের ইন্টারফেস টি ওপেন হবে।
এখানে দেখা যাবে ল্যাপটপের কনফিগারেশন। কনফিগারেশন বলতে বোঝায় ল্যাপটপ সার্বিক গঠন যেমন, ল্যাপটপ টির মডেল কত, ল্যাপটপ টি কোন জেনারেশন এর, গিগাহারজ কত, র্যাম কত ইত্যাদি সকল তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন। ল্যাপটপ পারফরমেন্সের ক্ষেত্রে আরো একটা বিষয় কাজ করে তা হলো, ল্যাপটপটি হার্ডডিক্স নাকি এসএসডি।
পুরাতন ল্যাপটপ এর ক্ষেত্রে অনেক সময় হার্ডডিক্স টা খুলে রেখে এস এস ডি ব্যবহার করা হয় ল্যাপটপ টা ফাস্ট করার জন্য , এটা খারাপ কিছু না । তবে ল্যাপটপ এ কি হার্ডডিক্স ব্যবহার করা আছে নাকি এসএস ডি ব্যবহার করা আছে সেটা চেক করার জন্য মাউস টি বার মেনুতে নিয়ে এসে রাইট সাইডে ক্লিক করলে Task Manager অপশন টি ওপেন হবে।
লেখকের মন্তব্যঃ
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই উপরোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে কিনলে ল্যাপটপ টি অবশ্যই ভালো মানের হবে। প্রিয়া পাঠক পুরাতন ল্যাপটপ কেনার সময় করনীয় দিকগুলো আজকের এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
পুরাতন ল্যাপটপ কেনার সময় সতর্ক হয়ে বা ল্যাপটপে চেক না করে কখনোই কেনা ঠিক হবে না। তাই উপরে বর্নিত দিকনির্দেশনা গুলো অনুসরণ করে পুরাতন ল্যাপটপ কিনলে অনেকটা ভালো মানের ল্যাপটপ পেতে পারেন। আশা করি তথ্যগুলো আপনার উপকারে আসবে।
এরকম আরো ভালো মানের টিপস ও তথ্যর জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। সর্বোপরি পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন যাতে তারা এই বিষয়ে সতর্ক হয়। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url