ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি ও এর প্রতিকার
ডায়াবেটিস মূলত একটি বিপাক জনিত রোগ। এটি এমন এক ধরনের সমস্যা যার কোন স্থায়ী সমাধান নেই। তবে এর লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জেনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে জীবন ধারণ করলে অনেকাংশেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি ও এর প্রতিকার
- প্রথমত জেলা কোনটি দেখা যায় সেটি হচ্ছে পিপাসা পাওয়া এবং গলা শুকিয়ে যাওয়া।
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বিশেষ করে রাত্রেবেলা ঘন ঘন প্রসবের কারণে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া। সাধারণত একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের দিনে বা 24 ঘন্টায় সাত থেকে আট বার প্রসাব হতে পারে। কিন্তু এর থেকে বেশি প্রসাব হলে ডায়াবেটিস চেক করে দেখতে হবে।
- কোন কারণ ছাড়াই ক্ষুধার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
- শরীরের কোন ঘা বা কাটা দাগ যেগুলো অনেকদিন যাবত রয়েছে কিন্তু শুকাচ্ছে না। দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক ও মলম ব্যবহার করেও না শুকালে এটি ডায়াবেটিসের দিকে ধাবিত করে। যদি এরকমটা হয় তাহলে অবশ্যই করা উচিত।
- চোখে ঝাপসা দেখা বা আবছা দেখা। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে চোখের রেটিনা আক্রান্ত হতে পারে এটি কে রেটিওপ্যাথি বলে। আর রেজিওপ্যাথি হলে চোখের দৃষ্টি ক্ষমতা কমে যেতে পারে।
- ঘনঘন মাথায় ঝিম ধরা, যদি এরকমটা মনে হয় যে প্রায়শই মাথা ঝিমঝিম করছে তাহলে অবশ্যই ডায়াবেটিস চেক করতে হবে।
- শারীরিক দুর্বলতা অর্থাৎ পূর্বে যে কাজটি সামর্থ্য সাথে করা যেত বর্তমানে সেরকম সামর্থের সাথে কাজ করতে না পারা এবং দুর্বলতা অনুভব করা।
- হাত পায়ে জ্বালাপোড়া করা এছাড়াও অনেকের মনে হতে পারে হাত-পা ঝিমঝিম করছে। অল্প অল্প ব্যথা অনুভূত হতে পারে বা হাত-পা কামড়াচ্ছে এ ধরনের লক্ষণও ডায়াবেটিসের অন্তর্ভুক্ত।
- সাধারণভাবে দেখা যায় প্রসবের সময় জ্বালাপোড়া করে এবং তলপেটে ব্যথা করে।
- হঠাৎ করে মোটা হয়ে যাওয়া অর্থাৎ পেটের মধ্যভাগ হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া হল ডায়াবেটিস এর পূর্বাভাস।
- গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস যদি একবার হয়ে থাকে অথবা যদি অতিরিক্ত ওজনের শিশুর জন্মগ্রহণ করে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে তার ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- যার বাবা মা কিংবা নিকট আত্মীয়ের ডায়াবেটিস হওয়ার ইতিহাস রয়েছে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
- যেসব ব্যাক্তির হাইপ্রেশার রয়েছে, রক্তের চর্বি ও কোলেস্টেরল আছে বা ফ্যাটি লিভার আছে তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা অনেক।
- যেকোনো ধরনের ইনফেকশন ছাড়তে দেরি হওয়া।
ডায়াবেটিস হলে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করব ?/ ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যে রোগটি একবার কারো হলে এটিকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা যায় না, তবে নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করা যায়। আর এই রোগ থেকে প্রতিরোধ করতে হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে হবে যে পদক্ষেপগুলো নিলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই ডায়াবেটিস হলে প্রতিরোধমূলক কয়েকটি কাজ যেগুলো ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে সেগুলো উল্লেখ করা হলোঃ
১। প্রথমত খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। জাতীয় খাদ্য বেশি খান তাদের এ ধরনের খাদ্যের পরিমাণ কমাতে হবে।
২। নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করতে হবে, আর এর জন্য শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে যেমন খেলাধুলা হাটাহাটি করা সাইকেল চালানো ও আরো বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম যেগুলো আপনার করতে ভালো লাগে সেগুলো করা।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগী কি মধু খেতে পারবে ?
৩। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যে খাবারগুলো উপযোগী সেই খাবারগুলোকে পরিমিতভাবে গ্রহণ করতে হবে এবং যে খাবারগুলো অনুপোযোগী সেগুলোকে ত্যাগ করতে হবে।
৪। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
৫। মিষ্টি জাতীয় খাবার এর পরিমাণ অনেক কমাতে হবে।
৬। প্যাকেট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করতে হবে।
৭। নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুমাতে হবে।
৮। ধূমপান ও নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। কারণ এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে।
৯। প্রচুর পরিমাণে মৌসুমী ফল খেতে হবে। যখন যে মৌসুমে যেরকম ফলমূল বা শাকসবজি পাওয়া যায় তখন সেটি খেতে হবে। এতে করে ফাইবারের ঘাটতি পূরণ হবে।
১০। নিয়মিত ডায়াবেটিস লেভেল চেক করতে হবে এবং দেখতে হবে যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে নাকি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। যদি ডায়াবেটিস লেভেল বেশি থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
ডায়াবেটিস কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি ?
ডায়াবেটিস কি
মানব দেহে এক ধরনের ইনসুলিন রয়েছে আর এই ইনসুলিন এর পরিমাণ কমে গেলে বিভিন্ন ধরনের বিপাকীয় ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় আর এই গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া টাকে ডায়াবেটিস বলে।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ
বিশেষজ্ঞদের মতে ডায়াবেটিস প্রধানত চার প্রকার-
- টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস
- টাইপ টু ডায়াবেটিস
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এবং
- অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণ ভিত্তিক ডায়াবেটিস
বর্তমানে টাইপ টু ডায়াবেটিস অন্যান্য ডায়াবেটিস এর থেকে ভয়ঙ্কর কারণ অধিকাংশ মানুষ টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস কাকে বলে ?
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস রোগ হিসেবে সেসব রোগীদের আওতাভুক্ত করা যায় যাদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না।সাধারণত ৩০ বছরের কম বয়সের মানুষের এ ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। তবে 10 থেকে 15 বছরের মধ্যে এ ধরনের ডায়াবেটিস সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। আর তাই এ ধরনের রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আলাদা ভাবে ইনজেকশন এর মাধ্যমে ইনসুলিন দিতে হয়। অন্যথায় রক্তে শর্করার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়ে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে রক্তের অম্লজাতীয় বিষক্রিয়ার ফলে জীবন অত্যন্ত ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে।
টাইপ টু ডায়াবেটিস কাকে বলে?
টাইপ টু ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রে আহতভুক্ত রোগীদের ইনসুলিন তৈরি হয় ঠিকই তবে বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য আলাদাভাবে ইনসুলিন ইনজেকশন এর মাধ্যমে দেওয়া হয়। এ ধরনের ডায়াবেটিসের রোগীদের বয়স প্রায় ৩০ এর উপরে তবে বর্তমানে এর কম বয়সেও টাইপ টু ডায়াবেটিস হতে পারে। এরা আসলে ইনসুলিন নির্ভরশীল নয়। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ ডায়াবেটিস রোগে টাইপ টু ডায়াবেটিস এর আওতভুক্ত।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কাকে বলে?
কোন নারী যখন গর্ভবতী অবস্থায় ডায়াবেটিস রোগের শিকার হয় তখন তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলে। গর্ভাবস্থায় এটি ওর মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক ডায়াবেটিস কাকে বলে?
জেনেটিক কারণে ইনসুলিন কম তৈরি হওয়া, জেনেটিক কারণে ইনসুলিন এর কার্যকারিতা কমে যাওয়া অগ্ন্যাসের বিভিন্ন রোগ এবং ঔষধ ও রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শের ফলে রোগীরা যে ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় তাকে অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণভিত্তিক ডায়াবেটিস বলে ।
ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন কমানোর কার্যকরী উপায়ঃ
ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে হঠাৎ করে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া। বিশেষ করে পেটের মধ্যভাগ বেড়ে যাওয়া এর কারণেই মূলত ওজন বৃদ্ধি পায়। আর শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ডায়াবেটিস লেভেলও বেড়ে যার ফলে পরবর্তীতে এটি নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ওজন কমানোর মাধ্যমে এই রোগের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এজন্য নিম্নে ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন কমানোর দশটি কার্যকরী উপায় উল্লেখ করা হলো যেগুলো অনুসরণ করলে একজন রোগীর ওজন কমবে।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীরা কোন কোন ফল খেতে পারেন ?
- সুগার জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করতে হবে
- প্রত্যেকদিন টাটকা ফল ও সবজি পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে
- যেসব খাবারের ফাইবারের বেশি রয়েছে সেসব খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। শারীরিকভাবে যে কাজটি করতে আপনার ভালো লাগে সে কাজটি একটু সময় নিয়ে করতে হবে।
- নিজেকে সবসময় দুশ্চিন্তা মুক্ত ও সৃষ্টিশীল রাখতে হবে।
- পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যে ১০ টি টক ফল খেতে হবেঃ
অনেক ডায়বেটিস রোগী হয়তো জানে না যে কয়েক ধরনের টক ফল আছে যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এরকমই ১০ টি টক ফলের উল্লেখ করা হলো যা এটা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলগুলো হল-
১। কুলঃ শীতকালে মূলত টাটকা বা সতেজ কুল পাওয়া যায় এবং সারাবছর শুকনো কুল পাওয়া যায়। টাটকা খুলে প্রতি ১০০ গ্রাম থেকে ১.২০ প্রোটিন পাওয়া যায়। আর নেট কার্বোহাইড্রেট ১০ গ্রাম ও ফাইবার ১০ গ্রাম। সেই সাথে এই ফলে ফ্যাট অনেক কম। এক্ষেত্রে ব্লাড সুগার তুলনামূলক ধীরে বাড়বে । কুল HbA1C উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে । তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে টাটকা কুল খাওয়া উচিত তবে শুকনো কুল একটু কম খাওয়া উচিত কারণ এতে জলের পরিমাণ কম থাকে।
২। পাতিলেবুঃ পাতিলেবুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ২০ এবং গ্লাইসেমিক লোড ১.৪০। প্রতি 100 গ্রাম বাতিল লেবু থেকে প্রায় তিন গ্রাম ফাইবার রয়েছে।পাতি লেবু সরাসরি ব্লাড সুগার না কমালেও অন্য যে সকল খাবারগুলো রয়েছে যেগুলো ব্লাড সুগার বাড়াই, তাদের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৩। আমড়াঃ বর্তমানে আমরা একটি জনপ্রিয় ফলগুলোর একটি কারণ অনেকে আচার চাটনি অথবা টাটকা খেতেও পছন্দ করেন। প্রতি .১০০গ্রাম আমড়া থেকে নেট কার্বোহাইড্রেট আট গ্রাম এবং ফাইবার প্রায় তিন গ্রাম থাকে। সেই সাথে আমরা পাতাও খাওয়া যায় কারণ এতে ব্লাড সুগার কমানোর ক্ষমতা রয়েছে।
৪। আমলকিঃ ডায়াবেটিসের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই আমলকির ব্যবহার রয়েছে। আমলকি ফাস্টিং ব্লাড সুগার, পোস্ট প্যারেন্টিয়াল ব্লাড সুগার, দুটিই উল্লেখযোগ্য হবে কমাতে পারে। আর তাই আমলকি নিয়মিত খাদ্য তালিকা রাখতে পারেন।
৫। জলপাইঃ প্রতি 100 গ্রাম জলপাই থেকে নেট কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় প্রায় দুই থেকে তিন গ্রাম এবং ফাইবার প্রায় ২ গ্রামের উপরে। জল পায়ে বেশ ভালো পরিমানে ফ্ল্যাভনয়েড,ট্যানিল,করোটিনয়েড ও ভিটামিন সি থাকে। এই উপাদানগুলো ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
৬। চালতাঃ প্রতি ১০০ গ্রাম চালতা থেকে নেট কার্বোহাইড্রেট প্রায় ১১ গ্রাম পাওয়া যায় এবং ফাইবার পাওয়া যায় ২.৫০ গ্রাম। সেই সাথে চালতায় রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েড ও বিভিন্ন রকম জৈব এসিড, যেগুলো নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
৭। কাঁচা আমঃ কাঁচা আমকে টক ফল হিসেবেও ধরা যায়। কারণ কাঁচা আমে পাকা আমের থেকে বেশি ফাইবার রেজিস্ট্যান্স স্টার্চ পেকটিন ও যৌগ এসিড থাকার কারণে এটি ব্লাড সুগার কমাতে সাহায্য করে। তবে বিভিন্ন ধরনের আচার ও চাটনি এ ধরনের খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এতে অনেক সুগার থাকে।
৮।কতবেলঃ প্রতি ১০০ গ্রাম কদবেল থেকে নেট কার্বোহাইড্রেট মাত্র ৩-৪ গ্রাম পাওয়া যায় এবং ফাইবার পাওয়া যায় প্রায় ৫-৬ গ্রাম। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে কদবেল ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৯।লেবুঃ লেবুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর পরিমাণ <৫৫ অর্থাৎ ৫৫র কম যা ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী।
১০। আমলকিঃ লেবুর মত আমলকিরও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর পরিমাণ ৫৫ থেকে কম। আর তাই ডায়াবেটিস রোগী আমলকীয় খেতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা কোন ধরনের ফল খাবে তা নির্ভর করে অনেকটা গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর পরিমাণের ওপর। কারণ কোন ফল রক্তে কতটুকু শর্করা বৃদ্ধি করবে তা নির্ভর করে তার গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স এর পরিমাণের উপর। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হল খাবার পেতে গিয়ে পরিপাকের পর কত দ্রুত কি হারে রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয় তা নির্ণয়ের একটি সূচক যা GI বা গ্লাইসেমিক ইনডেক্স নামে পরিচিত।
যে খাবারের জিয়াই যত কম সেই খাবার কম বা ধীরে রক্তে মেশে এবং শর্করা বাড়ায়. আবার উচ্চ জিআই সম্পন্ন ফল বা খাবার রক্তের দ্রুত মিশে গিয়ে রক্তের শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে যারা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর.
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর প্রকারভেদ
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সাধারণত তিনটি ভাগ রয়েছে যা Glycemic index chart নামেও পরিচিত. এই তিনটি ভাগ মূলত কোন ফলে অবস্থিত গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর পরিমাণ নির্দেশ করে. এবং এই পরিমাণ জেনে একজন ডায়াবেটিস কোন ফল গুলো খাওয়া উচিত এবং কোন ফল গুলো খাওয়া উচিত না সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট ধারণা পাওয়া যায়. নিম্নে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের প্রকারভেদের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
Low GI বা নিম্ন গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স:
যে ফল গুলোতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমান <৫৫অর্থাৎ ৫৫র নিচে সে ধরনের ফলগুলো নিম্ন গ্লাইসিমিক ইনডেক্স যুক্ত ফলের আওতাভুক্ত। এ ধরনের ফলগুলো ডায়াবেটিসের জন্য উপযুক্ত এবং এগুলো নির্দ্বিধায় খাওয়া যায়।
Medium GI বা মধ্যম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স:
যে ধরনের ফল গুলোতে ইনডেক্সের পরিমাণ ৫৫-৬৯ সেই ফলগুলো মধ্যম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর আওতাভুক্ত।এই ফলগুলো একজন ডায়াবেটিস রোগী খেতে পারে তবে পরিমিত। কারণ অধিক হারে এই ফলগুলো খেলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
High GI বা উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স :
যে ফল গুলোতে গ্লাইসেমিকস ইন্ডেক্স এর পরিমাণ ৭০ বা তার ওপরেএ ধরনের ফলগুলোকে উচ্চ গ্লাইসেমিকস ইনডেক্স এর আওতাভুক্ত হিসেবে গণ্য করা হয়। কোনভাবেই এই উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল গুলো একজন ডায়াবেটিস রোগীর খাওয়া উচিত নয়। কারণ এই ফলগুলো খাওয়ার ফলে ব্লাড সুগার আকর্ষিকভাবে বৃদ্ধি পায় যা নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে এবং স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়।
ডায়াবেটিস রোগীরা কোন কোন ফল খেতে পারেন ?
নিম্ন জি আই বা গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল গুলো ডায়াবেটিস রোগীরা কোনপ্রকার সাইড ইফেক্ট ছাড়াই খেতে পারে। কারণ এ ধরনের ফলে গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স এর পরিমান ৫৫ থেকে কম।আবার মধ্যম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল যে ফলগুলোর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর পরিমাণ ৫৫-৬৯ এর মধ্যে সেই ফলগুলো পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত।
আবার উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত ফল যে ফলগুলোর গ্লাসের পরিমাণ ৭০ এর বেশি সেসব ফলগুলো একজন রোগী হিসেবে খাওয়া কখনই উচিত নয় নিম্নে এরকমই কিছু ফলের উল্লেখ করা হলো যেগুলোর পরিমাণ দেখে খেতে পারেনঃ
এছাড়াও আরো অনেক ফল রয়েছে। তবে অবশ্যই যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকে সেক্ষেত্রে ফলগুলোর গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স এর পরিমাণ জেনে তারপর খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস রোগী কি মধু খেতে পারবে ?
বর্তমানে যারা ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে তাদের অনেকের মনে এই প্রশ্ন রয়েছে যে আসলে ডায়াবেটিস রোগী কি মধু খেতে পারবে নাকি পারবেনা। এ বিষয়টা জানার আগে প্রথমে জানতে হবে মধুর উপাদান সম্পর্কে যাতে করে একজন ডায়াবেটিস রোগী এ সম্পর্কে সচেতন হতে পারে।
মধু মানব শরীরের রক্তে গ্লুকোজ বৃদ্ধি করে তাই যথাসম্ভব মধু পরিহার করতে হবে। ডায়াবেটিস
ব্লাড সুগার কত হলে বুঝব ডায়াবেটিস হয়েছে ?
ডায়াবেটিস আছে কিনা তা ব্লাড সুগারের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। এর জন্য সকাল বেলা খালি পেটে একবার এবং খাবার পর প্রায় দুই ঘন্টার পর আরেকবার ব্লাড সুগার টেস্ট করতে হয়।
সকালে খালি পেটে যদি ব্লাড সুগারের পরিমাণ ৭ mmol/L হয় এবং নাস্তার দুই ঘন্টা পরে ব্লাড সুগারের পরিমান যদ১১.১mmol/L হয় তাহলে বুঝতে হবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত।
ডায়াবেটিস হলে কোন কোন ফল খাওয়া যাবে না
এমন কিছু ফল রয়েছে যে ফলগুলো খেলে ডায়াবেটিসের সময়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। নিম্নে ১১টি এমন ফলের উল্লেখ করা হলো যেগুলো ডায়াবেটিস অবস্থায় খাওয়া যাবেনা। কারণ গুলোতে গ্লাইসেনিক এনএক্স এর পরিমাণ বেশি থাকায় রক্তের শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে যা একজন ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফল গুলো হলঃ
- তরমুজ
- আনারস
- পাকা কলা
- পাকা আম
- খেজুর
- তেতুল
- কামরাঙ্গা
- সফেদা
- আঙ্গুর ও
- কাঁঠাল ইত্যাদি।
বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url