জিআইএস এর ধারণা ও কার্যপ্রণালী

সাধারণ অর্থে জিআইএস বলতে স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্ত সংগ্রহ করে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে সমন্বয় ঘটিয়ে তা মানচিত্রে উপস্থাপন করাকে বুঝায়। অর্থাৎ, পরিকল্পনা অনুযায়ী কম্পিউটার সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি বা হাতিয়ারের সাহায্যে ভূ-পৃষ্ঠের যে কোন স্থানের ভৌগোলিক উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সংস্করণ, সমন্বয়ণ, বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করার প্রক্রিয়া হল জিআইএস।
জিআইএস এর ধারণা ও কার্যপ্রণালী


ভূমিকাঃ

জিআইএস বিষয়টি আজ উন্নত বিশ্বের উন্নতির হাতিয়ার হিসাবে কাজ করছে। এই প্রযুক্তিটি এমন এক প্রযুক্তি যার সাহায্যে বিভিন্ন উপাত্ত ব্যবহার করে বিশাল তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলা সম্ভব, যা দিয়ে একটি দেশের সার্বিক উন্নতি বিবেচনা করা যায়। আধুনিক যুগ তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ। কোন দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন।

তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যতিরেকে কোন দেশের উন্নতি আজ আর সম্ভব নয়। তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সঠিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ছাড়া কোন দেশ কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না। আজ যে দেশ যত বেশী তথ্য-প্রযুক্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে, সেই দেশ তত বেশী উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃজিআইএস এর উপাত্ত কি?
 বিশ্বের উন্নত দেশগুলো তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে আজ উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করেছে। আর এই তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে উন্নত বিশ্বের দেশসমূহ ভূমি ব্যবহার সহ সকল উন্নয়নের সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ব্যবহার করছে "ভৌগোলিক তথ্য পদ্ধতি” (Geographic Information System) বা GIS.

GIS (জিআইএস) প্রযুক্তি ভূ-পৃষ্ঠের প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সংযোজন, সংস্করণ ও বিশ্লেষণ করে উন্নয়নকল্পে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সাহায্য করে।

জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সঠিক তথ্য সম্বলিত কোন স্থানের মানচিত্র তৈরী করতে পারি। এ মানচিত্র থেকে সহজেই উক্ত স্থানের সুবিধা-অসুবিধা বা কোন সমস্যা অনুধাবন করে সঠিক পরিকল্পনা প্রনয়ণ করা সম্ভব। সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনার জন্য এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উন্নত বিশ্বে কম্পিউটার প্রযুক্তিকে যাদুর বাক্স হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আর এই যাদুর বাক্সের মাধ্যমে জিআইএস সফট্ওয়্যার ব্যবহার করে পরিকল্পনাবিদরা খুব কম সময়ে সংগৃহিত তথ্য দিয়ে উন্নয়নের জন্য মডেল দাঁড় করাতে পারেন।

উন্নত বিশ্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের তথা পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বনজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কৃষি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, নগর পরিকল্পনা, সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার প্রভৃতি ক্ষেত্রে সফলতা পেয়েছে। আর এই সফলতার অন্তরালের চালক জিআইএস প্রযুক্তি।

১৯৬০ সালের শেষের দিকে জিআইএস প্রযুক্তির উদ্ভব হলেও আজ পর্যন্ত এর ব্যবহার উন্নত দেশেই সীমাবদ্ধ আছে। কম্পিউটার যন্ত্রপাতি, কারিগরি জ্ঞান ও অর্থাভাবে উন্নয়নশীল দেশ গুলোতে জিআইএস প্রযুক্তি এখনও তেমন প্রসার লাভ করেনি।

বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহারে যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছে, তবে সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলো এই প্রযুক্তিতে তেমন অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। বর্তমানে সরকারী ভাবে এল.লি.ই.ডি, স্পার্সো, পরিসংখ্যান অধিদপ্তর, সার্ভে অফ বাংলাদেশ সহ গুটিকতক প্রতিষ্ঠান।

জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে অগ্রসর হলেও অন্য কোন সরকারী প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে তেমন এগুচ্ছে না। আমাদের দেশের দ্রুত উন্নতির জন্য সরকারী ভাবে জিআইএস প্রযুক্তির ব্যবহার বেগবান করা উচিত। জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশে কোথায় কি করা উচিৎ তা ঘরে বসেই। লক্ষ্য করা যায় এবং এর ভিত্তিতে দেশের পরিকল্পিত উন্নয়ন করা সম্ভব।

বিশেষ করে ভূমি জরিপের ক্ষেত্রে জিআইএস প্রযুক্তি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। জিআইএস এর মাধ্যমে আমাদের দেশের ভূমি জরিপ করে মৌজা মানচিত্রগুলি ডিজিটাল করলে দেশের সাধারণ মানুষ জমিজমার বিভিন্ন সমস্যা থেকে নিস্কৃতি পাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পূর্ব শর্ত হওয়া উচিত মৌজা মানচিত্র ডিজিটাইজ করা।

জিআইএস এর কার্য প্রণালীঃ

(Function/Operation of GIS)

 জিআইএস প্রযুক্তি নিম্নলিখিত কার্যাবলী সম্পাদন করে:

১। উপাত্ত আহরণ: (Data Capture / Collection)
ভূ-ভাগ থেকে মানুষ নানা কৌশল ও পদ্ধতি অবলম্বন করে উপাত্ত সংগ্রহ করে। জরিপকারীদল ভূমি জরিপের মাধ্যমে ভূ-সংস্থানিক মানচিত্র তৈরী করে। এ ধরণের মানচিত্র প্রস্তুত করতে অনেক সময়, অর্থ ও লোকবলের প্রয়োজন। উনিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে তৎকালীন বৃটিশ সরকার ভূ-সংস্থানিক মানচিত্র তৈরী করেছিল।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানচিত্রে প্রদর্শিত স্থানের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক বিষয়াবলীর ব্যাপক পরিবর্তন হয়। জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে এ ধরনের ভূ- সংস্থানিক মানচিত্র স্ক্যান (Scan) করে নতুন নতুন উপাত্ত সংযোজন এবং তা থেকেও অনেক উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্বব। 
আরো পড়ুনঃ জিআইএস এর উপাদান গুলো কি কি ?
ভূ-পৃষ্ঠের স্থানিক উপাত্ত আহরণের আধুনিকতম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো বিমান চিত্র ও দূর অনুধাবন চিত্র (Aerial photoও Satellite image)।জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা এরিয়াল ফটো ও স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে গুরত্বপূর্ণ উপাত্ত পেয়ে থাকি। 

কোন এলাকার ভূমি ব্যবহার সম্পর্কে দ্রুত ধারণা লাভ, কিংবা সঠিক পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য ভূমি ব্যবহার সম্পর্কে বা কোন বিষয়েরপরিবর্তন মনিটরিং করার জন্য জিআইএস হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে।সত্তরের দশকে U.S.A, রাশিয়া, ভারত প্রভৃতি দেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠায়। 

এর ফলে ভূমি ব্যবহার মানচিত্রায়নের ক্ষেত্রে দূর অনুধাবন কৌশল (Remote Sensing technique) এক নতুন যুগের সূচনা করে। এ কৃত্রিম উপগ্রহগুলো LANDSATS উপগ্রহ নামে পরিচিত। ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় নির্ভুল উপাত্ত প্রেরণ করে LANDSATS উপগ্রহগুলো অনেক প্রশংসা পাচ্ছে।

সুতরাং পুরানো ভূ-সংস্থানিক মানচিত্র, বিমানচিত্র, স্যাটেলাইট ইমেজ, জিপিএস ডেটা, পরিসংখ্যান উপাত্ত প্রভৃতি মাধ্যম থেকে জিআইএস এর জন্য উপাত্ত আহরণ করা হয়ে থাকে। Data Storage & Retrieval)তারা

২। উপাত্ত সংরক্ষণ ও আদান প্রদান:
 জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে আহরণকৃত বা সংগৃহীত উপাত্ত কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা জিআইএস সফ্টওয়্যার এ ব্যবহার করে এক উপাত্ত ভান্ডার গড়ে তোলা হয়। উপাত্ত সমৃদ্ধ উপাত্ত ভান্ডার কম্পিউটারে নিদ্দিষ্ট কোন স্থানে সংরক্ষণ করা হয়। যার থেকে কম্পিউটার ব্যবহারকারী ইচ্ছামত উপাত্ত ব্যবহার করতে পারে।

উপাত্ত ভান্ডার থেকে উপাত্ত ব্যবহার করে মানচিত্রে তথ্য উপস্থাপন, তথ্য সারণী তৈরী, চার্ট তৈরী সহ প্রভৃতি প্রস্তুত করেও কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হয়। উপাত্ত ভান্ডার থেকে অস্থানিক উপাত্তের সাথে স্থানিক উপাত্তের সমন্বয় ঘটিয়ে মানচিত্রে তা তথ্য আকারে উপস্থাপন করা যায়।
আরো পড়ুনঃ জিআইএস এর উপাদান সমুহের বিস্তারিত বর্ণনা।
এছাড়া সংগৃহীত উপাত্ত ও মানচিত্র অন্যদের সাথে আদান-প্রদান করাও হয়ে থাকে। আজকাল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সংগৃহীত উপাত্ত ও তথ্য সিডি তে সংরক্ষণ করে এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি বা চুক্তি ভিত্তিক আদান প্রদান করে থাকে।

৩। উপাত্ত সংস্করণ: (Data Update / Manipulation)
কম্পিউটারে সংগৃহীত উপাত্ত ব্যবহার উপযোগী বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তা কোন ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে উপাত্ত সংস্করণ, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন করা হয়। পাশাপাশি স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্তের সমন্বয় ও তা একই সারণীতে এনে উপস্থাপন করার জন্য উপাত্তের পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃরাস্টার উপাত্ত তো কাকে বলে ও এর কাজ কি?
আর এ সব উপাত্ত সংস্করণ করা হয় জিআইএস সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে। পুরানো উপাত্তের সাথে নতুন উপাত্তের সমন্বয় ঘটিয়ে নতুন সংস্করণের উপাত্ত ফাইল তৈরী করা হয়। উপাত্ত সংস্করণ করা জিআইএস সফ্টওয়্যারের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

৪। উপাত্ত বিশ্লেষণ: (Data Analysis)
কম্পিউটারে সংরক্ষিত উপাত্তভিত্তি বা ডেটাবেজ (Database) থেকে উদ্দেশ্য অনুসারে মানচিত্র, মানচিত্র টেবিল, সারণী, গ্রাফ, ডায়াগ্রাম, চার্ট প্রভৃতি তৈরী করা যায়। এ সকল উপাত্ত দিয়ে বিভিন্ন প্রতীক বা রং দ্বারা মানচিত্রে তথ্য উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।

কোন নির্দিষ্ট স্থানের দুইটি সময়ের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে চার্ট, ডায়াগ্রাম, আয়তক্ষেত্র, গনসংখ্যা বহুভূজ প্রভৃতি তৈরী করলে বা মানচিত্রে উপস্থাপন করলে খুব সহজে পরিবর্তন বুঝা যায়। এছাড়া উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে সহজেই অতিত ও বর্তমানের চিত্র ফুটে ওঠে। আর এই উপাত্ত বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জিআইএস প্রযুক্তি।

৫। উপাত্ত উপস্থাপন : (Data Presentation)
জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে সংগৃহীত উপাত্ত সংস্করণ ও বিশ্লেষণ করে ফলাফল প্রকাশ বা উপস্থাপন করা হয়। এ ফলাফল উপস্থাপন থেকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহন করে কোন এলাকার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। এছাড়া বিশ্লেষিত ফলাফল এর মাধ্যমে নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহন করে সহজেই কোন বিষয়ের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ ভেক্টর উপাত্ত কাকে বলে ও এর কাজ কি?
 এসব ক্ষেত্রে ফলাফল সাধারণতঃ মানচিত্রে আকর্ষনীয় ভাবে উপস্থাপন করা হয়। আর উপস্থাপিত তথ্যবহুল মানচিত্রের অন্তরালে থাকে থিম টেবিল নামক বিশাল উপাত্তভান্ডার, এ সব উপাত্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নতুন উপাত্ত অর্ন্তভূক্ত ও সংশোধন করে নানা ভাবে ফলাফলকে আকর্ষনীয় ও তথ্যবহুল করা হয়। নিম্নলিখিত ডায়াগ্রামটির মত জিআইএস ফলাফল উপস্থাপন করে।

৬। উপাত্ত ব্যবস্থাপনা: (Data Management)
উপাত্ত ব্যবস্থাপনা জিআইএস প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বিভিন্ন ধরনের উপাত্ত আহরণ করে জিআইএস সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে তা বিভিন্ন ভাবে সাজাতে হয়। সংরক্ষিত উপাত্ত সাজিয়ে তা থেকে সহজেই বিভিন্ন তথ্য মানচিত্রে উপস্থাপন করা যায়।সুতরাং উপাত্ত ব্যবস্থাপনার কাজ যত সুন্দর করা যায় মানচিত্রে উপস্থাপন তা তত সহজ ও সুন্দর হয়। 

উপাত্ত গুলি টেবিলে অৰ্ম্মর্ভূক্ত করে তা বিভিন্ন ফিল্ড ও রেকর্ড তৈরী করে সাজাতে হয় এবং নতুন উপাত্ত টেবিলে অৰ্ম্মভূক্ত ও পরিবর্তন পরিমার্জন করা হয়। এছাড়া একটি ফিল্ডের উপাত্ত দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরণের উপাত্ত ফিল্ড তৈরী করাও এ প্রযুক্তিতে সম্ভব। এ ধরণের কাজগুলি উপাত্ত ব্যবস্থাপনার অর্ম্মভূক্ত।

জিআইএস এর উপাদান গুলো কি কি?(Components of GIS)

জিআইএস প্রযুক্তি প্রয়োগের জন্য যা যা প্রয়োজন হয় তাই হল জিআইএস এর উপাদান। জিআইএস এর সংজ্ঞার মত এর উপাদান নিয়েও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে আমরা মনে করি জিআইএস এর উপাদান ৫টি। যথাঃ

১। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার (Computer Hardware)
২। কম্পিউটার সফ্টওয়্যার (Computer Software)
৩। স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্ত (Spatial data & Non Spatial data)
৪। উপাত্ত ভিত্তি (Database)
৫। মানুষ (Man)

নিম্নে জিআইএস এর উপাদান সমূহের বিস্তারিত বর্ণনা 


১। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার: (Computer Hardware)
কম্পিউটার অনেকগুলো বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত। এ যন্ত্রাংশের কোন একটা অচল হলে সম্পূর্ণ সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়। কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের মধ্যে রয়েছে মাদারবোর্ড, প্রসেসর, র‍্যাম, হার্ডডিস্ক, মনিটর, কি বোর্ড, মাউস, ক্যাসিং, প্রিন্টার প্রভৃতি। এই সব যন্ত্রাংশকে বলে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার (Hardware)।

আর এইসব যন্ত্রাংশ মিলেই তৈরী হয় একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার। এছাড়া জিআইএস এর তথ্য ইনপুট (Input) করার জন্য উন্নতমানের ডিজিটাইজার (Digitizers), স্ক্যানার (Scanner), গ্রাফিক্স স্কিন (Graphics Screen) প্রভৃতি অতিরিক্ত থাকতে হবে।

সুতরাং উপরোক্ত হার্ডওয়্যার সম্বলিত একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটার জিআইএস প্রযুক্তির জন্য অত্যাবশ্যক, কম্পিউটার ছাড়া জিআইএস প্রযুক্তি অচল। এক্ষেত্রে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার জিআইএস এর প্রধানতম উপাদান। পরবর্তী অংশে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে

২। কম্পিউটার সফটওয়্যার: (Computer Software)
কম্পিউটারকে সচল রাখার জন্য অপারেটিং সফটওয়্যার তো লাগবেই, এছাড়া জিআইএস প্রযুক্তির জন্য কম্পিউটারে নির্দিষ্ট কিছু জিআইএস সফটওয়‍্যার ইন্সটল করতে হয়। প্রত্যেকটি জিআইএস সফটওয়্যারের নির্দিষ্ট কিছু কার্যক্ষমতা আছে।সুতরাং উদ্দেশ্য অনুযায়ী জিআইএস সফটওয়্যার নির্বাচন করে কাজ করতে হয়।

 Arc/Info, Idrisi, ERDAS Imagine, Arc View, Arc GIS প্রভৃতি জিআইএস প্রযুক্তির সফটওয়্যার। জিআইএস সফটওয়্যার ব্যতীত জিআইএস প্রযুক্তির কাজ করা সম্ভব নয়। অতএব সফটওয়্যার জিআইএস এর অপর একটি গুরুত্বপর্ণ উপাদান। পরবর্তী অংশে কয়েকটি জিআইএস সফটওয়্যার এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

৩। স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্ত: (Spatial data & Non Spatial data)
স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্ত হলো জিআইএস এর প্রাণ। স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্ত ছাড়া জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন কিছুই করা সম্ভব নয়। আমরা জানি স্থানিক উপাত্ত হলো নদী-নালা, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, বাড়ী-ঘর, রাস্তা-ঘাট, কোন প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি। অর্থাৎ আমরা ভূ-পৃষ্ঠে যা কিছু দেখতে প্রায় তার সবই।

 সুতরাং এই সব উপাত্ত দিয়ে জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরী করা হয় ফিচার ম্যাপ। অতএব স্থানিক উপাত্ত ছাড়া কোন ক্রমেই জিআইএস প্রযুক্তি চালানো সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি স্থানিক উপাত্ত জিআইএস প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

এছাড়া অস্থানিক উপাত্ত হলো- অদৃশ্য গুনবাচক উপাত্ত, অর্থাৎ কোন এলাকার শিক্ষার হার, জনসংখ্যার ঘনত্ব, ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা, মৃত্যু হার, জন্ম হার প্রভৃতি অস্থানিক উপাত্ত। অস্থানিক উপাত্তকে এট্রিবিউট (Attribute Data) উপাত্তও বলা হয়। অস্থানিক উপাত্তের সাথে স্থানিক উপাত্তের সমন্বয় ঘটিয়ে জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন ফিচারকে তথ্যবহুল করে উপস্থাপন করা যায়।

অতএব, স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্ত জিআইএস প্রযুক্তির অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।

৪। উপাত্ত ভিত্তি: (Database)
উপাত্তভিত্তি বা ডেটাবেস জিআইএস প্রযুক্তির অপর আর একটি উপাদান। উপাত্তভিত্তির উপর নির্ভর করেই জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে অতি গুরুত্তপূর্ণ সব তথ্য মানচিত্রে বা কোন ফিচারে উপস্থাপন করা হয়।

কম্পিউটারে ডেটাবেস সফ্টওয়্যারের (একসিস, এক্সেল, ফক্স-প্রো প্রভৃতি) মাধ্যমে তৈরী করা হয় ডেটাবেস ফাইল, যা অতি সহজেই জিআইএস সফ্টওয়্যারে অর্ন্তভূক্ত করে সংযোজন, বিয়োজন বা সংশোধনের মাধ্যমে এট্রিবিউট টেবিলে যুক্ত করা যায়। এর ফলে উপাত্তভান্ডার হয় শক্তিশালী। আর এই উপাত্তভিত্তি মূলতঃ স্থানিক ও অস্থানিক উপাত্তের সংশোধিত বা পরিমার্জিত রূপ।

৫। মানুষ: (Man)
মানুষ জিআইএস প্রযুক্তির উপাদান একথা বলতে কোন দিধা নেই, কারন মানুষ ছাড়া জিআইএস প্রযুক্তি কে চালাবে, আর কেই বা তৈরী করবে বিশাল উপাত্তভান্ডার। উপাত্ত সংগ্রহ থেকে শুরু করে কম্পিউটারে উপাত্ত সংযোজন এবং তা সংশোধন এর মাধ্যমে ফিচার মানচিত্র তৈরী ও তাতে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন সহ জিআইএস প্রযুক্তির যাবতীয় কাজ মানুষের হাতের ছোঁয়া ছাড়া সম্ভব হয় না। সুতরাং, মানুষ জিআইএস প্রযুক্তির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যক উপাদান।

জিআইএস এর উপাত্ত: (Data of GIS)

কম্পিউটারের মাধ্যমে জিআইএস সফটওয়্যারে কাজ করতে হলে প্রথমেই জিআইএস এর উপাত সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। উপাত্ত ভুল হলে ফলাফল ভুল আসবে অথবা সঠিক তথ্য মানচিত্রে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে না। নিম্নে জিআইএস এর উপাত্ত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

স্থানের উপর ভিত্তি করে জিআইএস এর উপাত্তকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: স্থানিক উপাত্ত (Spatial data) ও অস্থানিক উপাত্ত (Non spatial data)। নিম্নে এগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হল।

স্থানিক উপাত্ত (Spatial data) :
কোন স্থানের স্থানভিত্তিক দৃশ্যমান উপাত্তকে স্থানিক উপাত্ত বলে। যেমন: কোন স্থানের নদ-নদী, খাল- বিল, পুকুর, বাড়ী-ঘর, পাহাড়-পর্বত, কৃষি জমি, বনভূমি প্রভৃতি। সাধারণত স্থানিক উপাত্ত ভূ-পৃষ্ঠের কোন নির্দিষ্ট স্থানে দৃশ্যমান অবস্থায় থাকে।

স্থানিক উপাত্তকে পুনরায় ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ রাস্টার উপাত্ত ও ভেক্টর উপাত্ত।

রাস্টার উপাত্ত: (Raster data)
রাস্টার উপাত্ত বা রাস্টার ডেটা বলতে স্যাটেলাইট ইমেজ (Satellite Image) বা স্ক্যান করা মানচিত্র বা কোন ছবিকে বুঝায়। জিআইএস প্রযুক্তি রাস্টার ডেটাকে বিশ্লেষণ করে আমাদের অনেক তথ্য দিতে পারে। রাস্টার ডেটার উপর আমরা লাইন, পয়েন্ট ও পলিগন অংকন করে ভেক্টর ডেটাতে রূপান্তর করতে পারি।

 মূলত রাস্টার ডেটা অনেক গুলি Pixel এর সমন্বয়ে গঠিত চিত্র বা ছবি। রাস্টার মানচিত্রের বা ইমেজ চিত্রের Pixel এর রং বা ধরণের ভিত্তিতে কোন ভৌগোলিক উপাত্ত উপস্থাপন করা যায়। প্রতিটি Pixel এর একটি নির্দিষ্ট মান থাকে। ভূ-পৃষ্ঠের কোন নির্দিষ্ট অবস্থানের স্থানিক উপাত্তের চিত্র বিমানের সাহায্যে ধারণ করলে বা স্যাটেলাইট ইমেজ নিলে সেটা রাস্টার ডেটা হবে।

 বস্তুর আলো প্রতিফলনের উপর নির্ভর করে Pixel এর রং নির্ধারণ হয়। কোন ইমেজকে Zoom করে বড় করলে ঐ ইমেজের Pixel গুলি দৃশ্যমান হয়। Pixel আসলে কোন চিত্রের অতি ক্ষুদ্র অংশমাত্র, প্রকৃত অর্থে Pixel কে আমরা কোন ইমেজের অনু বলতে পারি।লক্ষ লক্ষ Pixel এর মাধ্যমে তৈরী হয় একটি ইমেজ চিত্র।

প্রতিটি Pixel বর্গাকৃতির হয়ে থাকে এবং Pixel গুলি পাশাপাশি অবস্থান করে। Pixel গুলির কাছাকাছি বা দূরে দূরে অবস্থানের মাত্রাকে ইমেজের রেজুলেশন (Resolution) বলে। অর্থাৎ কোন ইমেজে যদি প্রতি ইঞ্চিতে লম্বালম্বি ভাবে ৮০০ এবং উলম্ব ভাবে ৮০০ Pixel থাকে তবে বলা হয় ইমেজটির রেজুলেশন ৮০০ Pixel/Inches।

 সুতরাং কোন ইমেজে প্রতি ইঞ্চিতে যতবেশী Pixel থাকবে ইমেজটি তত সুন্দর ও স্বচ্ছ হবে।

ভেক্টর উপাত্ত: (Vector data)
জিআইএস সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারে যখন বিন্দু, রেখা ও ক্ষেত্র (Point, Line, Polygon) ব্যবহার করে মানচিত্রে বিভিন্ন উপাদান উপস্থাপন করা হয় তখন তাকে ভেক্টর উপাত্ত বলে। মানচিত্রে বিন্দু, রেখা ও ক্ষেত্র অংকিত হয় অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ এর মানের ভিত্তিতে।

অস্থানিক উপাত্ত (Non spatial data):
হামিদৃশ্য গুণবাচক উপাত্তকে অস্থানিক উপাত্ত বলে। এই উপাত্ত স্থানান্তরিত হতে পারে। যেমনঃ কোন এলাকার মানুষের শিক্ষিতের হার, মাথাপিছু আয়, প্রসূতি মাতার মৃত্যু হার, জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রভৃতি। অন্যভাবে বলা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানিক উপাত্ত আর ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষার মান ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রভৃতি অস্থানিক উপাত্ত।

 অস্থানিক উপাত্তকে আবার বর্ণনামূলক উপাত্তও (Attribute data) বলে। জিআইএস প্রযুক্তি অস্থানিক উপাত্তের মাধ্যমে কোন মানচিত্রকে তথ্যবহুল করে তোলে, এর ফলে মানচিত্র হয়ে যায় অর্থবহ।

উপাত্ত ও তথ্য: (Data and Information)

উপাত্ত (Data) :
কোন বিষয় পর্যবেক্ষণ বা কোন অনুসন্ধান এর মাধ্যমে যে সকল উপাদান সংগ্রহ করা হয় সেই সকল উপাদানকেই উপাত্ত বলা হয়ে থাকে। উপাত্ত গুলি বিভিন্ন পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে, যেমন- সাক্ষাৎকার পদ্ধতি, প্রশ্নমালা পদ্ধতি প্রভৃতি। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সব উপাত্ত অতি সহজেই পাওয়া যায়।

মনে করি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাংশা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের ফলাফল সংগ্রহ করা হল, এই ফলাফল বা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বরকে আমরা উপাত্ত বলতে পারি। উক্ত ফলাফল থেকে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে শুধু একজন একজন করে ছাত্র-ছাত্রীর পাশের বিভাগ বা মোট নম্বর বলতে পারবো।

 কিন্তু সার্বিক ফলাফলের উপর মন্তব্য করা কঠিন হয়ে যাবে। তবে ফলাফলটি বিভিন্ন ভাবে বিশ্লেষণ করে মন্তব্য করা আবার অতি সহজ। সুতরাং উপাত্ত হচ্ছে বিচ্ছিন্ন কোন সংগৃহীত উপাদান, যা থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ কোন মন্তব্য আশা করা যায় না।

তথ্য (Information) :- উপাত্তকে কোন প্রক্রিয়ায় বিশ্লেষণ করলে কোন না কোন ফলাফল পাওয়া যায়, প্রাপ্ত ফলাফল থেকে যদি অর্থবহ কোন উত্তর বা মন্তব্য করা যায় তবে ঐ বিশ্লেষিত ফলাফলকে তথ্য (Information) বলে। সুতরাং কোন উপাত্ত থেকেই তথ্যের উৎপত্তি। উপাত্ত থেকে ব্যাপক উত্তর পাওয়া যায় না তবে তথ্য থেকে ব্যাপক উত্তর পাওয়া সম্ভব।

 যেমন- উপাত্ত আলোচনায় পাংশা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের ফলাফল বা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর প্রাপ্ত নম্বর প্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে। উক্ত ফলাফল থেকে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে শুধু একজন একজন করে ছাত্র-ছাত্রীর পাশের বিভাগ বা মোট নম্বর কত তা বলতে পেরেছি।

এখন যদি উক্ত ফলাফলকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় অর্থাৎ গড়, মধ্যমা, প্রচুরক, পরিমিত ব্যবধান প্রভৃতির মাধ্যমে উত্তর নির্ণয় করি, তবে তা থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব বা মন্তব্য করা সম্ভব। যেমন- উক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাশের হার কত, গড় নম্বর কত, নম্বরের পরিমিত ব্যবধান কত প্রভৃতি।

অতএব বলা যায় উপাত্ত সুশৃংখল উত্তর দিতে পারে না কিন্তু তথ্য সুশৃংখল উত্তর দিতে পারে। সুতরাং তথ্য হচ্ছে বিশ্লেষিত কোন সংগৃহীত উপাদান, যা থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ কোন মন্তব্য বা উত্তর আশা করা যায়।

লেখকের মন্তব্যঃ

প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলটিতে জিআইএস এর প্রাথমিক ধারণা ও প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি ইতিমধ্যেই আপনারা জিআইএস-এর সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন। 

যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন যাতে করে তারাও এই সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে। আর যদি এই বিষয়ে কোন মতামত কিংবা পরামর্শ দেওয়ার থাকে তাহলে তা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন।

পরিশেষে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url