চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাসমূহ

চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বৃহত্তম বিভাগ। ভাগ এই বিভাগ রয়েছে অনেক জেলা ও উপজেলা। চলুন জেনে নেয়া যাক চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা সমূহ কি কি। সেই সাথে চট্টগ্রাম সম্পর্কে আরো অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন এই আর্টিকেল থেকে।
চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাসমূহ



ভুমিকাঃ

চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান সদর দপ্তর এবং চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলার আয়তন ৫২৮৩ বর্গ কিলোমিটার।অবস্থানগত কারণে চট্টগ্রাম জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম লীলাভূমি।

 চট্টগ্রাম জেলাতে রয়েছে পাহাড়, সমুদ্র, উপত্যকা, বন-বনানী ইত্যাদি কারণে পর্যটকদের জন্য চট্টগ্রাম জেলা খুবই আকর্ষণীয়।চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। চট্টগ্রাম সঠিক বন্দর নগরী হিসেবে সুপরিচিত এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য প্রাচ্যের রানী হিসেবে বিখ্যাত, কর্ণফুলী নদীর তীরে এই শহরটি অবস্থিত।

চট্টগ্রাম শহরটি চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান সদর দপ্তর। চট্টগ্রাম বিভাগ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিভাগ তেমনি দেশের সবচেয়ে বেশি এগিয়ে থাকা বিভাগও এটি। চট্টগ্রাম বিভাগ প্রাকৃতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক সব দিক থেকে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিভাগ এবং বাণিজ্যিক দিক থেকে সবচেয়ে বেশি স্বয়ং সম্পুর্ন। চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে বেশ অনেকগুলো শক্তিশালী পদক্ষেপ যার ফলে দেশের অনেক পরিবর্তন বয়ে আসবে। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর শহর গুলোর একটি।  

চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাসমূহ

চট্টগ্রাম বিভাগে মোট ১১ টি জেলা এবং ১০৩ টি উপজেলা রয়েছে। জেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • কুমিল্লা,
  • ফেনী , 
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া , 
  • রাঙ্গামাটি , 
  • নোয়াখালী , 
  • চাঁদপুর , 
  • লক্ষীপুর , 
  • চট্টগ্রাম , 
  • কক্সবাজার , 
  • খাগড়াছড়ি , 
  • বান্দরবান।

চট্টগ্রাম জেলায় কয়টি উপজেলা সমূহ

চট্টগ্রাম জেলা ১৫টি উপজেলা, ৩৩টি থানা (উপজেলায় ১৭টি ও ১৬টি মেট্রোপলিটন থানা), ৪১ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১৫টি পৌরসভা, ১৯০টি ইউনিয়ন, ৮৯০টি মৌজা, ১২৬৭টি গ্রাম ও ১৬টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহেররা নাম গুলো হলঃ
  • রাঙ্গুনিয়া
  • সীতাকুণ্ড
  • মীরসরাই
  • পটিয়া
  • সন্দীপ
  • বাঁশখালী
  • বোয়ালখালী
  • আনোয়ারা
  • চন্দনাইশ
  • সাতকানিয়া
  • লোহাগাড়া
  • হাটহাজারী
  • ফটিকছড়ি
  • রাউজান
  • কর্ণফুলী

কক্সবাজার জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

কক্সবাজার জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৪টি পৌরসভা, ৭১টি ইউনিয়ন, ১৮৮টি মৌজা, ৯৯২টি গ্রাম,ও ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • কক্সবাজার সদর
  • চকরিয়া
  • কুতুবদিয়া
  • উখিয়া
  • মহেশখালী
  • পেকুয়া
  • রামু
  • টেকনাফ

কুমিল্লা জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

কুমিল্লা জেলা ১৭টি উপজেলা, ১৮টি থানা, ২৭ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১টি সিটি কর্পোরেশন, ৮টি পৌরসভা, ১৯২টি ইউনিয়ন, ৩,৬৮৭টি গ্রাম ও ১১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • দেবিদ্বার
  • চৌদ্দগ্রাম
  • বরুড়া
  • ব্রাহ্মণপাড়া
  • চান্দিনা
  • দাউদকান্দি
  • হোমনা
  • লাকসাম
  • মুরাদনগর
  • লাঙ্গলকোট
  • কুমিল্লা সদর
  • মেঘনা
  • মনোহরগঞ্জ
  • সদর দক্ষিণ
  • তিতাস
  • বুড়িচং
  •  লালমাই

ফেনী জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

ফেনী জেলায় ৬টি উপজেলা, ৬টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৪৩টি ইউনিয়ন, ৫৬৪টি গ্রাম ও ৫৪০টি মৌজা রয়েছে।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • ছাগলনাইয়া
  • ফুলগাজী
  • ফেনী সদর
  • পরশুরাম
  • সোনাগাজী
  • দাগনভূঞা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ১০০টি ইউনিয়ন, ৯৯৩টি মৌজা, ১৩৩১টি গ্রাম ও ৬টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর
  • সরাইল
  • নবীনগর
  • কসবা
  • নাসিরনগর
  • আশুগঞ্জ
  • আখাউড়া
  • বিজয়নগর
  • বাঞ্ছারামপুর

রাঙ্গামাটি জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

রাঙ্গামাটি জেলা ১০টি উপজেলা, ১২টি থানা, ২টি পৌরসভা, ৫০টি ইউনিয়ন, ১৫৯টি মৌজা, ১৩৪৭টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • রাঙ্গামাটি সদর
  • বাঘাইছড়ি
  • রাজস্থলী
  • নানিয়ারচর
  • কাপ্তাই
  • বরকল
  • বিলাইছড়ি
  • কাউখালী
  • লংগদু
  • জুরাছড়ি

নোয়াখালী জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

নোয়াখালী জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৮টি পৌরসভা, ৯৩টি ইউনিয়ন, ৮৮২টি মৌজা, ৯৬৭টি গ্রাম ও ৬টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • নোয়াখালী , 
  • কোম্পানীগঞ্জ , 
  • বেগমগঞ্জ , 
  •  হাতিয়া , 
  • সুবর্ণচর , 
  • কবিরহাট , 
  • সেনবাগ , 
  • চাটখিল , 
  • সোনাইমুড়ি।

চাঁদপুর জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

চাঁদপুর জেলা ৮টি উপজেলা, ৮টি থানা, ৮টি পৌরসভা, ৮৯টি ইউনিয়ন, ১০৪১টি মৌজা, ১৩৬৫টি গ্রাম ও ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।। উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • চাঁদপুর সদর,
  • হাইমচর ,
  • কচুয়া , 
  •  শাহরাস্তি, 
  •  মতলব উত্তর, 
  •  মতলব দক্ষিণ , 
  • হাজিগঞ্জ, 
  •  ফরিদগঞ্জ।

লক্ষ্মীপুর জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

লক্ষ্মীপুর জেলা ৫টি উপজেলা, ৬টি থানা, ৪টি পৌরসভা, ৫৮টি ইউনিয়ন, ৪৪৫টি মৌজা, ৫৩৬টি গ্রাম ও ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।
উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • লক্ষ্মীপুর সদর , 
  • কমলনগর , 
  • রায়পুর , 
  • রামগতি এবং 
  • রামগঞ্জ।

খাগড়াছড়ি জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

খাগড়াছড়ি জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৩টি পৌরসভা, ৩৮টি ইউনিয়ন, ১২১টি মৌজা, ১৩৮১টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • খাগড়াছড়ি সদর
  • দীঘিনালা
  • পানছড়ি
  • লক্ষ্মীছড়ি
  • মহলছড়ি
  • মানিকছড়ি
  • রামগড়
  • মাটিরাঙ্গা
  • গুইমারা

বান্দরবান জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে

বান্দরবান জেলা ৭টি উপজেলা, ৭টি থানা, ২টি পৌরসভা, ৩৩টি ইউনিয়ন, ৯৬টি মৌজা, ১৪৮২টি গ্রাম ও ১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ
  • বান্দরবান সদর
  • আলীকদম
  • নাইক্ষ্যংছড়ি
  • বোয়াংছড়ি
  • লামা
  • রুমা
  • থানচি

চট্টগ্রাম জেলার ইতিহাস

চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। অবস্থানগত কারণে চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা পাহাড়, সমুদ্র, উপত্যকা, বন-বনানীর কারণে চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম লীলাভূমি। চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী বলা হয়।
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ জেলা ভেঙ্গে কক্সবাজার জেলা গঠিত হয়।

চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান কোথায়

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৫৯ কিলোমিটার।

এ জেলার দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা; পূর্বে বান্দরবান জেলা, রাঙ্গামাটি জেলা ও খাগড়াছড়ি জেলা; উত্তরে ফেনী জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এছাড়া দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপ চট্টগ্রামের অংশ।

চট্টগ্রাম জেলার আয়তন ও জনসংখ্যা কত

চট্টগ্রাম জেলার মোট আয়তন ৫,২৮২.৯২ বর্গ কিলোমিটার।আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা।
২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলার মোট জনসংখ্যা ৯১,৬৩,৭৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫,৬৬,০৩৯ জন এবং মহিলা ৪৫,৯৭,০৭৬ জন।জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৭০০ জন।

চট্টগ্রাম জেলার নামকরন

চট্টগ্রামের প্রায় ৪৮টি নামের খোঁজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ‌ রম্যভুমি, চাটিগাঁ, চাতগাঁও, রোসাং, চিতাগঞ্জ, জাটিগ্রাম ইত্যাদি। চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতভেদ রয়েছে। পণ্ডিত বার্নোলির মতে, আরবি "শ্যাত (খণ্ড)" অর্থ বদ্বীপ, গাঙ্গ অর্থ গঙ্গা নদী‌ এ থেকে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি।

 অপর এক মত অনুসারে ত্রয়োদশ শতকে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করতে বার জন আউলিয়া এসেছিলেন, তারা একটি বড় বাতি বা চেরাগ জ্বালিয়ে উঁচু জায়গায় স্থাপন করেছিলেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় 'চাটি' অর্থ বাতি বা চেরাগ এবং 'গাঁও' অর্থ গ্রাম। এ থেকে নাম হয় 'চাটি গাঁও'।

আবার এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোন্সের মতে এ এলাকার একটি ক্ষুদ্র পাখির নাম থেকে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি। চট্টগ্রাম ১৬৬৬ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ হয়। আরাকানীদের হটিয়ে মুঘলরা এর নাম রাখে ইসলামাবাদ। মোগলরা এর প্রশাসনিক সীমানা চিহ্নিত করে।

১৭৬০ সালে নবাব মীর কাশিম আলী খান ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে এটি হস্তান্তর করেন। ব্রিটিশরা এর নাম রাখে 'চিটাগাং'।

খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দী থেকেই আরবগণ চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে পরিচিত ছিল। এশিয়ার ঘটনাবলী বর্ণনা করেছেন এমন বিখ্যাত পর্তুগিজদের মধ্যে প্রথম ঐতিহাসিক ডি বারোস ১৫৫২ সালে চট্টগ্রামকে এর বন্দরের জন্য বাংলারাজ্যের সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত ও সম্পদশালী নগরী বলে বর্ণনা করেছেন; যেখানে পূর্বাঞ্চলের সকল বাণিজ্য জাহাজ সমবেত হত।

বর্মি ঘটনাপঞ্জিতে আরাকান অঞ্চলের নরপতিদের এক দীর্ঘ তালিকা পাওয়া যায়। ষষ্ঠ ও সপ্তম শতকে চট্টগ্রাম আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সকল নরপতির নামের শেষে চন্দ্র পদবী যুক্ত ছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশগণ চট্টগ্রামকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে চট্টগ্রাম জাপানি আক্রমণের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়।
 

চট্টগ্রাম জেলা কয়টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত

চট্টগ্রাম জেলা ৪১ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১৫টি উপজেলা, ৩৩টি থানা (উপজেলায় ১৭টি ও ১৬টি মেট্রোপলিটন থানা), ১৫টি পৌরসভা, ১৯০টি ইউনিয়ন, ৮৯০টি মৌজা, ১২৬৭টি গ্রাম ও ১৬টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।

চট্টগ্রাম কিসের জন্য বিখ্যাত

দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে স্বীকৃত হাজার বছরের পুরাতন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অধিকারী হলো চট্টগ্রাম। বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি, প্রাচ্যের রাণী বীর প্রসবিনী, আধ্যাত্মিক রাজধানী, বন্দরনগরী, আন্তর্জাতিক পর্যটন নগরী, কল্যাণময় নগরী এমন অসংখ্য নামে পরিচিত এই চট্টগ্রাম। জব্বারের বলীখেলা, মাজার, পান-সুপারী ইত্যাদি জন্য বিখ্যাত চট্টগ্রাম জেলা।

চট্টগ্রামের বিখ্যাত খাবার গুলো কি কি

বাঙালি জাতি হিসাবে আমরা ভোজন বিলাসী,তাই আমাদের রয়েছে এক এক জায়গার বিখ্যাত সব খাবার। সেটাই তুলে ধরার প্রয়াস মাত্র।দেশের প্রত্যেকটি জেলায় রয়েছে নিজস্ব কিছু খাবার; যেগুলোর সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশে। যেমন, চট্টগ্রামের মেজবানি মাংস।

আপনার জানা থাকলে নিশ্চয়ই চট্টগ্রাম গেলে এই খাবারের আসল স্বাদ না নিয়ে ফিরতে চাইবেন না। এই আয়োজনে থাকছে দেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারগুলোর নাম। যাতে কখনো কোনো জেলায় গেলে সেখানকার বিখ্যাত খাবারের স্বাদ নিয়ে ফিরতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক চট্টগ্রামের বিখ্যাত খাবার গুলো কি কি
 
মেজবানি গোশত, কালাভুনা, শুটকি, মধুভাত, বেলা বিস্কুট, দুরুস, বাকরখানি, লক্ষিশাক, গরুর গোস্ত ভুনা, ফেলন ডাল, বিরিয়ানি, আফলাতুন হালুয়া, তালের পিঠা, নোনা ইলিশ প্রভৃতি চট্টগ্রামের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী খাবারের অন্তর্ভুক্ত। এবং আসলেই এই খাবার গুলো অনেক সুস্বাদু।চট্টগ্রামে আসলে অবশ্যই এই খাবার গুলো খেয়ে দেখতে পারেন।

চট্টগ্রামের বিখ্যাত ব্যাক্তি

চট্টগ্রামের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ গুলো হলেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, অনুপম সেন, সূর্য সেনে,ড. মুহাম্মদ ইউনুসের, পদার্থবিদ ড. জামাল নজরুল ইসলাম, জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম, সাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এবং আবুল ফজল এরা সবাই চট্টগ্রাম জেলার সন্তান।এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী, আ জ ম নাছির উদ্দিন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সহ অনেক বিখ্যাত রাজনীতিবিদ চট্টগ্রাম জেলার সন্তান। 

কুমার বিশ্বজিৎ, আইয়ুব বাচ্চু, পার্থ বড়ুয়া সহ অনেক বিখ্যাত গায়ক চট্টগ্রাম জেলার সন্তান।

চট্টগ্রামের প্রধান নদী গুলোর নাম কি

চট্টগ্রাম জেলার প্রধান নদীর মধ্যে কর্ণফুলী নদী, হালদা নদী, সাঙ্গু নদী এবং মুহুরী নদী উল্লেখযোগ্য।

চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ

চট্টগ্রাম বিভাগে সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যার মধ্যে চারটি চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে। 2020 সালে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্তির জন্য ক্লাস্টার পদ্ধতি চালু করেছে। এই ব্যবস্থা অনুযায়ী বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঁচটি ক্লাস্টারে সাজাতে হবে।

 কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি; একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য, একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য এবং শেষটি সাধারণ স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য। নিম্নলিখিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক:
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  (CU) https://cu.ac.bd/
  • চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(CUET) -https://www.cuet.ac.bd/
  • চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (CVASU)-https://cvasu.ac.bd/
  • চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (CMU)- https://www.cmu.edu.bd/
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (COU)https://www.cou.ac.bd/
  • নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (NSTU)-  https://nstu.edu.bd/
  • রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (RMSTU)- https://rmstu.edu.bd/

চট্টগ্রামের দর্শনীয় স্থান

চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর জেলা। চট্টগ্রামে অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সবচেয়ে সুন্দর দর্শনীয় স্থান। আপনি সেখানে বন্ধু এবং পরিবারের সাথে আপনার সময় উপভোগ করতে পারেন। এগুলো বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।

এসব স্থানের মধ্যে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত সবচেয়ে জনপ্রিয়। এটি চট্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় 14 কিলোমিটার দূরে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দর্শনার্থীরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের অনুভূতি পান।
চন্দ্রনাথ পাহাড় দ্বিতীয় সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন আকর্ষণ। এটি শীতাকুণ্ডের কাছে অবস্থিত।

এর পরে, ফয়েজ লেক বিনোদন পার্ক আরেকটি দর্শনীয় স্থান। এটি চট্টগ্রামের একটি থিম পার্ক। মানুষ বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে সেখানে যায়। সীতাকুণ্ডের বাশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত নামে চট্টগ্রামে কয়েকটি সমুদ্র সৈকত রয়েছে, সীতাকুণ্ড থেকে প্রায় 5 কিলোমিটার দূরে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত,

 পারকি সমুদ্র সৈকত কর্ণফুলী নদী চ্যানেল, খেজুর টোলা সমুদ্র সৈকত যেখানে আপনি স্টিল মিল এলাকা পেরিয়ে যেতে পারেন।এছাড়া চট্টগ্রামে আরো দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেমন বাটালী পাহাড়, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো পার্ক, বাশখালী উপজেলার বেলগাঁও চাঁদপুর টি এস্টেট, শান্তিনোটা কমপ্লেক্স যা মিনি বাংলাদেশ নামেও পরিচিত,

 স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র কালুরঘাটের পাশে। মোহামায়া লেক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ। আগ্রাবাদের জাম্বোরি পার্ক, বাটারফ্লাই পার্ক পরিবারের লোকদের সাথে দেখার জন্য আরেকটি সুন্দর জায়গা হিসাবে পরিচিত। ভাটিয়ারী লেক এবং ভাটিয়ারী সানসেট পয়েন্ট প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে খুবই সুন্দর এলাকা।

চিড়িয়াখানা ছাড়াও দেখার জন্য আরেকটি স্পট যেখানে দর্শনার্থীরা পশু-পাখি দেখতে পায়। বিশেষ করে শিশুরা সেখানে অনেক উপভোগ করে। প্রতিদিন অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে যান।
বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার নাসিরাবাদ বায়েজিদ বোস্তামী রোডে আরেকটি জায়গা।

আগ্রাবাদ ইন্ডুয়াট্রিয়াল এলাকায় এনথোলজিক্যাল মিউজিয়ামও দেখার জন্য একটি জনপ্রিয় জায়গা।
চলুন একনজরে জেনে নেওয়া যাক চট্টগ্রামের ৫০টি দর্শনীয় স্থান

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম । পাহাড় ও সমুদ্রে ঘেরা চট্টগ্রাম জেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর । পাহাড়, সমুদ্র, উপত্যকা, বন-বনানীর কারণে চট্টগ্রামের মতো ভৌগোলিক বৈচিত্র জেলা বাংলাদেশে আর নেই । তাই চট্টগ্রাম জেলাকে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে ডাকা হয় ।

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বৈচিত্রময় ভৌগোলিক কারনে চট্টগ্রাম জেলায় দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আনাগোনা থাকে সবচেয়ে বেশি ।দর্শনীয় স্থানসমূহ হলো:
১. পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

২. ফয়’স লেক

৩. ওয়ার সিমেট্রি

৪. ভাটিয়ারী লেক

৫. ডিসি হিল

৬. বাটালি হিল

৭. বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার

৮. চন্দ্রনাথ পাহাড়

৯. বাঁশখালী ইকোপার্ক

১০. জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর

১১. বাঁশখালী চা বাগান

১২. মহামায়া লেক

১৩. মহুরি প্রজেক্ট

১৪. খৈইয়াছরা ঝরনা

১৫. বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

১৬. গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

১৭. পারকি সমুদ্র সৈকত ও সন্দ্বীপ

১৮. আগুনিয়া চা বাগান

১৯. চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা

২০. সন্দ্বীপ সমুদ্র সৈকত

২১. আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ

২২. কালুরঘাট ব্রিজ

২৩. কর্ণফুলী নদী

২৪. খানখানাবাদ সমুদ্র সৈকত

২৫. খিরাম সংরক্ষিত বনাঞ্চল

২৬. চন্দ্রনাথ মন্দির

২৭. সীতাকুন্ড

২৮. চেরাগী পাহাড়

২৯. বেলগাঁও চা বাগান

৩০. বাঁশখালী ইকোপার্ক

৩১. বানৌজা ঈসা খান

৩২. লালদিঘি

৩৩. মহামুনি বৌদ্ধ বিহার

৩৪. রাঙ্গনিয়া কোদালা চা বাগান

৩৫. ভূজপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চল

৩৬. বাটালী পাহাড়

৩৭. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

৩৮. বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি

৩৯. বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক

৪০. পদ্মপুকুর

৪১. বৌদ্ধ তীর্থ স্থান চক্রশালা পটিয়া

৪২. ভাটিয়ারি গল্ফ ক্লাব

৪৩. সুপ্তধারা ঝর্ণা

৪৪. মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ

৪৫. সহস্রধারা ঝর্ণা

৪৬. চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

৪৭. জাম্বুরী পার্ক আগ্রাবাদে

৪৮. চট্টগ্রাম বন্দর

৪৯. লোহাগাড়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য

৫০. শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

লেখকের মন্তব্যঃ

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আর্টিকেলটিতে চট্টগ্রাম বিভাগ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। যেমন চট্টগ্রাম বিভাগে কতটি জেলা আছে উপজেলা রয়েছে ইউনিয়ন রয়েছে, সেই সাথে চট্টগ্রামের ইতিহাস, বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, বিখ্যাত খাবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।

আশা করি উপলক্ষে তথ্য গুলো চট্টগ্রাম সম্পর্কে আপনার জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবেন। এছাড়াও এই ধরনের বিষয় থেকে অনেক সময় বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরি পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন।

যদি আর্টিকেলটি করে উপকৃত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এটি আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়স্বজন কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে তারাও চট্টগ্রাম বিভাগ সম্পর্কে জানতে পারে। আর এ পোস্ট সম্পর্কে যদি কোন মতামত প্রশ্ন কিংবা কোন তথ্য যোগ করতে চান তারা অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন।

এ ধরনের আর অন্যান্য বিভাগ সম্পর্কে এবং বিভিন্ন জ্ঞানমূলক অথবা বিজ্ঞানমূলক আর্টিকেল বা পোস্ট করতে আমাদের ওয়েব সাইটটিতে নিয়মিত করতে পারেন। পরিশেষে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url