ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কত সালে জন্মগ্রহন করেন
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নামটি শুনলেই শ্রদ্ধায় বুক ভরে আসে। বাংলায় এই মহান ব্যক্তির অবদান অনস্বীকার্য। আর তাই বাঙালি হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনি সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের জানা উচিত। চলুন তার সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
মধুকবির এই সত্যোচারন কোন অতিশয় উক্তি বা উচ্ছ্বাসে প্রকাশ নয়। বিদ্যাসাগর প্রকৃতই বিদ্যার সাগর এবং ভারত তথা বিশ্বের গর্ব, সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পান্ডিত্যের জন্য, তাঁর অসীম পান্ডিত্যের কারণে তাঁকে "বিদ্যাসাগর" উপাধি দেওয়া হয়।
'বিধবাবিবাহ চলিত হওয়া উচিৎ কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব' (১৮৫৫)
'বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিৎ কিনা এতদ্বিষয়ক বিচার' (১৮৭১)
'অতি অল্প হইল' (১৮৭৩)
'আবার অতি অল্প হইল' (১৮৭৩)
'ব্রজবিলাস' (১৮৪৮)
ভূমিকা
"বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে, করুনার সিন্ধু হাম, সেই জানে মনে, দীন যে দীনের বন্ধ"মধুকবির এই সত্যোচারন কোন অতিশয় উক্তি বা উচ্ছ্বাসে প্রকাশ নয়। বিদ্যাসাগর প্রকৃতই বিদ্যার সাগর এবং ভারত তথা বিশ্বের গর্ব, সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অগাধ পান্ডিত্যের জন্য, তাঁর অসীম পান্ডিত্যের কারণে তাঁকে "বিদ্যাসাগর" উপাধি দেওয়া হয়।
এছাড়া তিনি সর্বদা 'দরিদ্রদের সাহায্যে এগিয়ে যেতেন তাই তাঁকে অনেকে "দয়ার সাগর" নামে চেমে। বিদ্যাসাগরের সমগ্র জীবন থেকে থেকে আমরা জানতে পারি কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ তার জীবনের আদর্শের মাধ্যমে মহানতা অর্জন করে এবং অন্যদের একই আদর্শে জীবনযাপনে অনুপ্রানিত করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছেন.
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কত সালে জন্মগ্রহন করেন
১৮২০ খ্রীষ্টাব্দের ২৬ শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ আমে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর প্রকৃত নাম নঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়। তাঁর পিতা ছিলেন ঠাকুরদাস বন্দোপাধ্যায় এবং মাতা ভগবতী দেবী।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রকৃত নাম কি?
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রকৃত নাম হল ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি বিদ্যাসাগর নামেই পরিচিত ছিলেন।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ছদ্মনাম কি
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ছদ্মনাম হলো কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য, কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপো সহচরস্য।ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শিক্ষাজীবন
চার বছর নয় মাস বয়সে ঠাকুরদাস বালক ঈশ্বরচন্দ্রকে গ্রামের সনাতন বিশ্বাসের পাঠশালায় ভর্তি করেন। ১৮২৮ সালের নভেম্বর মাসে পাঠশালার শিক্ষা সমাপ্ত করে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য পিতার সঙ্গে কলকাতায় আসেন। পায়ে হেঁটে মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় আসার সময় পথের ধারে মাইল ফলকে ইংরাজী সংখ্যা গুলি দেখে তিনি সেগুলি সহজেই আয়ও করেন।১৮২৯ সালে কলকাতা গভর্নমেন্ট সংস্কৃত কলেজে ব্যাকরণে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৮৩৬ পালে অলংকার পাঠ শেষ করেন। ১৮৩৭ সালে তিনি স্মৃতি শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৮৩৯ সালে হিন্দু ল' কমিটির পরীক্ষা দেন নঈশ্বরচন্দ্র। ১৮৪১ সালের ডিসেম্বর মাসে কলেজের অধ্যিাপকগন নঈশ্বরচন্দ্রকে "বিদ্যাসাগর” নামে অভিহিত করেন।
আরো পড়ুনঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কর্মজীবন
১৮৪১ সালে সংস্কৃত কলেজে শিক্ষা সমাপ্ত হবার পর সেই বছরই মাত্র ২১ বছর বয়সে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের সেরেস্তাদার ও প্রধান পণ্ডিতের পদে যোগ দেন। বেতন ছিল মাসে ৫০ টাকা ১৮৪৬ সালের ৬ই এপ্রিল একই বেতন হারে সংস্কৃত কলেজের সহকারি সম্পাদকের ভার গ্রহণ করেন তিনি।তখন তাঁর বয়স ২৫ বছর পরবর্তীতে ফোর্ট উইলিয়ামের কাব্য ইস্তফা দিয়ে সাংস্কৃত কলেজে সাহিত্যের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। অন্যদিকে বিদ্যাসাগর মহাশয় ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারকও, তিনি সর্বদা দরিদ্র, অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যেতেন তাই তাঁকে"দয়ার সাগর" নামে ডাকা হতো।
ঈশ্বরচন্দ্র “বিদ্যাসাগর” উপাধি লাভ করেন কবে
'তত্ত্ববোধিনী' পত্রিকার প্রথম সম্পাদক অক্ষয়কুমার অসুস্থ হলে বিদ্যাসাগর সম্পাদক হন এবং ১৮৪৭ - ১৮৬৫ পর্যন্ত এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে এবং স্মৃতিশাস্ত্রে অভাবনীয় কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে ঈশ্বরচন্দ ১৮৩৯ন্সালে 'ৰিদ্যাসাগর' উপাধি লাভ করেন।বাংলা গদ্য সাহিত্য বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান
উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার মাটিতে যে সমস্ত মহামানবদের আবির্ভাব ঘটেছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর | বাংলা গদ্য সাহিত্য বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান অবিস্মরণীয়। বিদ্যাসাগরের হাতেই সাহিত্যিক গদ্যের জন্ম। বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যকে দিয়েছেন স্বাতন্ত্র্য ও আভিজাত্য। তিনি বাংলা গদ্যের একটি রাজপথ তৈরি করে দিয়েছিলেন সেই পথে পরবর্তীকালে বহুপদাতিকের আগমন হয়েছে । অ্যাডিশন ইংরেজি সাহিত্যের গদ্যের যা করেছেন বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্য সাহিত্যের জন্য সেই কাজ করেছেন। প্রাক্ আধুনিক বাংলা সাহিত্যে গদ্যের প্রচলন ছিল না। তখন যা কিছু রচিত হত তা ছিল পদ্যে লেখা।
উত্তরকালে পর্তুগীজ মিশনারি দোম আন্তেনিও এবং মানো-এল-দা আসসুম্পসাঁউ বাংলা গদ্য রচনার জন্য সচেষ্ট হন।। তবে তাদের এহেন প্রয়াস ও কর্মকাণ্ড প্রত্নতত্ত্বের নজির হিসেবে উল্লেখযোগ্য। কারণ বাংলা গদ্য সাহিত্যের সঙ্গে তাঁদের সংযোগ ছিল যৎ সামান্য। তথাপি বাংলা গদ্য সাহিত্যের ইতিহাসে শ্রীরামপুর মিশনের মিশনারিদের অবদান উল্লেখযোগ্য।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-১৮৯১) আবির্ভাব একটি শুভ সংকেত। মূলত সমাজ সংস্কারের জন্যই তাঁর 'কর্মী বিদ্যাসাগর' থেকে 'শিল্পী বিদ্যাসাগর' হয়ে ওঠা। একদিকে সমাজসংস্কার ও অন্যদিকে সৃষ্টি এহেন উভয়দিকে এগিয়ে চলে সব্যসাচী বিদ্যাসাগরের কর্মপন্থা।
বস্তুত পাণ্ডিত্যের গভীরতা, মানবিক উদারতা ও সমাজ সংস্কারের তৎপরতায় বিদ্যাসাগরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এদেশের সমাজ সংস্কৃতির ইতিহাসে স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল। মেদনীপুরের রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের ঘরে জন্মে অসাধারণ প্রতিভার বলে তিনি বাঙালি হৃদ্পদ্মে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
এপ্রসঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্ত বলেছেন- 'প্রাচীন ঋষিজ্ঞান ও প্রতিভায় ইংরেজদের কর্মসূত্রে এবং বাঙালি মায়ের হৃদয় দিয়ে তাঁর (বিদ্যাসাগর) ব্যক্তিত্ব কঠিন।' প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরই বাঙালি জাতিকে মানবপ্রেমে দীক্ষা দিয়ে গেছেন। প্রেমের সঙ্গে বীর্য, আবেগের সঙ্গে পৌরুষ, জ্ঞানের সঙ্গে কর্ম- এর আশ্চর্য মিলন তাঁর মধ্যে সার্থক হয়েছে।
আসলে রামমোহন যেমন এ জাতির মূল্যতাকে দূর করতে চেয়েছেন, বিদ্যাসাগরও তেমনি কর্ম ও প্রয়াসে সচেষ্ট হয়েছিলেন। আর একারণেই বিদ্যাসাগর বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্বাক্ষর রেখে গেছেন। পদ্যের মতো গদ্যেরও যে একটা নিজস্ব তাল ও ছন্দ আছে বিদ্যাসাগরই তা প্রথম আবিষ্কার করেন।
মূলত তিনি প্রথম বাংলা গদ্যের 'যতি' সন্নিবেশ করে পদবন্ধে ভাগ করে তথ্যের ভাষাকে রসের ভাষায় পরিণত করেন। বলা যায় বাংলা গদ্যের বিকাশে 'সাহিত্যিক গদ্যের' সূত্রপাত বিদ্যাসাগরেরই হাতে। উত্তরকালে তাঁর প্রদর্শিত পথ অতিক্রম করে সাহিত্যিক গদ্য এক উচ্চ শিখরে উন্নতি হয়।
এপ্রসঙ্গে তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন- বাংলা গদ্যের বিকাশে 'সাহিত্যিক গদ্যের' সূত্রপাত বিদ্যাসাগরেরই হাতে। উত্তরকালে তাঁর প্রদর্শিত পথ অতিক্রম করে সাহিত্যিক গদ্য এক উচ্চ শিখরে উন্নতি হয়।
এপ্রসঙ্গে তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন - 'বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্য ভাষার উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সুবিন্যস্ত, সুপরিচ্ছন্ন এবং সুসংযত করিয়া তাহাকে সহজ গতি ও কর্মকুশলতা দান করিয়াছেন।'-বাংলা গদ্যের ক্রম বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের এহেন উক্তি অক্ষরে অক্ষরে সত্য।
একারণে বলা যায় বিদ্যাসাগর সমাজ-সংস্কারক হলেও ভাষা সংস্কারক হিসেবে তাঁর কৃতিত্ব কম নয়। তাঁর গদ্যরীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
- প্রথমতঃ বাংলা বাক্যগুলিতে বাক্যাংশে বিভক্ত ও স্বরাঘাতের ব্যবহার।
- দ্বিতীয়তঃ- সংস্কৃত শব্দ ও ক্রিয়াপদ গঠন।
- তৃতীয়ঃ- ছেদ ও যতির স্বচ্ছ ব্যবহার
- চতুর্থঃ- অর্থানুসারে 'কমা'(,), ড্যাশ (-), সেমিকোলন (;) প্রভৃতির ব্যাবহার।
- এছাড়াও ব্যক্তিনিষ্ঠা, পরিমাণবোধ, স্বাভাবিকতা, সাবলীলতা সবমিলিয়ে বিদ্যাসাগরের গদ্য মিলনশ্রী হয়ে উঠেছে।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সাহিত্য কর্ম
বিদ্যাসাগরই সর্বপ্রথম উপলব্ধি করেছিলেন যে, শিশু শিক্ষার বিকাশ না ঘটলে জাতীয় জীবনে কোন উন্নতি হবে না। আর এই জন্যই শিশুশিক্ষার বৃত্তি প্রস্তুত নির্মাণে সচেষ্ট হয়েছিলেন। বিদ্যাসাগর রচিত শিশু শিক্ষা বিষয়ক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল-১. বাঙ্গালার ইতিকথা (১৮৪৮)
২. জীবনচরিত (১৮৪৯)
৩. বোধোদয় (১৮৫১)
৪. কথামালা (১৮৫৬)
৫. বর্ণ পরিচয় (১৮৫৫)
৬. আখ্যানমঞ্জরি (১৮৬৩)
অনুবাদ গ্রন্থ
- বেতাল পঞ্চবিংশতি (১৮৪৭): প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ। হিন্দি 'বৈতাল পৈচ্চিসি' র অনুবাদ। ঈশ্বরচন্দ্র ছিলেন বাংলা সাহিত্যে বিরাম বা যতি চিহ্ন প্রবর্তক। এই গ্রন্থে তিনি সর্বপ্রথম যতি চিহ্ন এর সফল ব্যবহার করেন। যতি চিহ্ন ব্যবহার পূর্বক এ গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে নতুন যুগের সূচনা হয়।
- ভ্রান্তিবিলাস: শেক্সপিয়ারের 'Comedy of Errors' এর বাংলা রূপ। সীতার বনবাস: বাল্মীকির রামায়ণ অবলম্বনে রচিত।
- শকুন্তলা : কালিদাসের' অভিজ্ঞান শকুন্তলম' এর অনুবাদ।
- মৌলিক গ্রন্থ: প্রভাবতী সম্ভাষণ (১৮৯২): বাংলা সাহিত্যের প্রথম মৌলিক গ্রন্থ। একটি শোকগাথা।
- ভবভূতীর উত্তরচরিত এবং বাল্মিকী রামায়ণ থেকে - সীতার বনবাস (১৮৬০)
- শেক্সপিয়রের কমেডি অফ এররস থেকে- ভ্রান্তিবিলাস (১৮৬৯)
- মার্শম্যানের History of Bengal থেকে- বাংলার ইতিহাস (১৮৪৮)
- ঈশপের ফেবলস থেকে - কথামালা (১৮৫৬)
সমাজ-সংস্কারমূলক প্রবন্ধ
শুধু তাই নয়, বিদ্যাসাগর স্বনামে ও বেনামে সমাজ-সংস্কারমূলক প্রবন্ধ রচনা করেছেন, সেগুলি বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখযোগ্য।'বিধবাবিবাহ চলিত হওয়া উচিৎ কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব' (১৮৫৫)
'বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিৎ কিনা এতদ্বিষয়ক বিচার' (১৮৭১)
'অতি অল্প হইল' (১৮৭৩)
'আবার অতি অল্প হইল' (১৮৭৩)
'ব্রজবিলাস' (১৮৪৮)
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিখ্যাত ৫০ টি উক্তি
- যে ব্যক্তি শ্রমবিমুখ হইয়া আলস্যে কালক্ষেপন করে তাহার দুঃখ ও অভাব চিরকাল থাকে।
- যাহাদের অভিপ্রায় সৎ ও প্রশংসনীয় এরুপ লোক অতি বিরল এবং শুভ ও শ্রেয়স্কর বিষয়ে বাধা ও ব্যাঘাত জন্মাইবার লোক সহস্র সহস্র।
- যে ব্যক্তি সংযমের সাথে নিয়মানুবর্তিতা করে এবং তার জ্ঞান দ্বারা সকলকে দান করে, শুধু ইহকালেই নয় পরকালেও তিনি পূজিত হন।
- আপনি যদি সফল এবং মর্যাদাবান হতে চান, তাহলে মাথা নত করতে শিখুন। কারণ যারা মাথা নত করে না, সময়ের বাতাস তাদের মাথা নত করে দিয়ে যায়।
- তোমার অবস্থা যত মন্দ হউক না কেন অন্যের অবস্থা এত মন্দ আছে যে তাহার সহিত তুলনা করিলে, তোমার অবস্থা অনেক ভালো বোধ হইবে।
- পরিশ্রম না করিলে স্বাস্থ্যরক্ষা ও সুখলাভ হয় না। যে ব্যক্তি শ্রম করে সে কখনও কষ্ট পায় না।
- মাতা পিতার সেবাই শ্রেষ্ঠ পূজা এবং সন্তানের সর্ব প্রধান ও পবিত্রতম কর্তব্য।
- যার নিজস্ব বিবেক নেই, সে হালকা বাতাসেও নড়ে।
- যে ব্যক্তি সংযমের সাথে নিয়মানুবর্তিতা করে এবং তার জ্ঞান দ্বারা সকলকে দান করে, শুধু ইহকালেই নয় পরকালেও তিনি পূজিত হন।
- আপনি যদি সফল এবং মর্যাদাবান হতে চান, তাহলে মাথা নত করতে শিখুন। কারণ যারা মাথা নত করে না, সময়ের বাতাস তাদের মাথা নত করে দিয়ে যায়।
- শিক্ষকের দায়িত্বপূর্ণ কর্তব্যভার গ্রহণ করিতে পারে, এমন একদল লোক সৃষ্টি করিতে হইবে; তাহা হইলেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল হইবে।
- চোখের সামনে মানুষ অনাহারে মরবে,ব্যাধি, জরা ,মহামারিতে উজাড় হয়ে যাবে আর দেশের মানুষ চোখ বুজে ভগবান ভগবান করবে এমন ভগবৎ প্রেম আমার নেই, আমার ভগবান আছেন মাটির পৃথিবীতে, স্বর্গ চাই না , মোক্ষ চাই না বারে বারে ফিরে আসি এই বাংলায়।
- শাস্ত্রের দোহাই দিয়া যথেচ্ছাপ্রবৃত্ত বহুবিধবাকাণ্ড বৈধ বলিয়া প্রচার করিলে নিরপরাধ শাস্ত্রকারদিগকে নরকে নিক্ষিপ্ত করা হয়।
- শাস্ত্রের অর্থ না বুঝিয়া অথবা ভুল অর্থ বুঝিয়া কিংবা অভিপ্রেত সিদ্ধির নিমিত্ত স্বেচ্ছানুরূপ অর্থান্তর কল্পনা
- করিয়া,
- স্নেহ অতি বিষম বস্তু।
- যদি কেহ আপনি আপনার প্রশংসা করে, কিংবা আপনার কথা অধিক করিয়া বলে অথবা কোন রূপে ইহা ব্যক্ত করে যে, সে আপনি আপনাকে বড় জ্ঞান করে, তাহা হইলে, সে নিঃসন্দেহে উপহাস্যাস্পদ হয়।
- পরের উপকার করতে গেলে মাঝে মধ্যে ঠকতে হয়। ঠকানোর চেয়ে ঠকা ভালো।
- যে ব্যক্তি অন্যের কাজে আসেনা, সে আসলে মানুষ নয়।
- কাহারও উপর দয়াপ্রকাশ করিলে, তাহা প্রায় নিস্ফল হয় না।
- কর্তব্য সাধিতে খল তোষামোদ করে।
- নিকৃষ্টকে যেমন প্রধানের সমাদর ও মর্যাদা করিতে হয়, নিকৃষ্টের প্রতি সেইরূপ করা প্রধানেরও অবশ্য কর্তব্য।
- নিকৃষ্টের কর্তব্য আপন অপেক্ষা প্রধান ব্যক্তিদের সমাদর মর্যাদা করা। কিন্তু কাহারও নিকট নিতান্ত নম্র অথবা চাটুকার হওয়া অনুচিত।
- বাল্যবিবাহের দোষ ও বিধবা বিবাহের প্রথা প্রচলিত হইলে অসহ্য বৈধব্য যন্ত্রণা, ব্যভিচার দোষ ও দ্রুণহত্যা পাপের নিবারণ ও তিন কুলের কলঙ্ক নিরাকরণ হইতে পারে।
- মানুষ ততই বড় হওয়া যাক না কেনো তাকে সর্বদা তার অতীত কে মনে রাখা দরকার, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যত্ এর দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার।
- যাহার যে অবস্থা, সে যদি তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকে, তাহা হইলে তাহাকে কাহারও নিকট অপদস্থ ও অপমানিত হইতে হয় না।
- সেই সাহিত্যকে আমরা সঠিক সাহিত্য বলবো যা মানুষের মধ্যে শুভবোধ জাগ্রত করবে।
- যথার্থ সাধুদিগকেও সঙ্গদোষে, বিপদে পড়িতে হয়।
- দরিদ্র ব্যক্তিদের অভুক্ত রেখে মাটির প্রতিমাকে ষোড়শোপচারে পূজা করাকে আমি যথার্থ মনে করি না।
- মাতৃভাষায় সম্পূর্ণ দখল, প্রয়োজনীয় বহুবিধ তথ্যে যথেষ্ট জ্ঞান, দেশের কুসংস্কারের কবল হইতে মুক্তি শিক্ষকদের এই গুণগুলি থাকা চাই।
- আমাদের নিজেদের স্বার্থ দেখার আগে, সমাজ এবং দেশ এর সর্থ দেখা উচিত সেটাই হলো প্রকৃত বিবেক ধর্মী।
- গৃহস্থাশ্রম সকল আশ্রমের মূল এবং সকল আশ্রম অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। বিশেষতঃ পরমগুরু পিতা মাতার শুশ্রুষা করাই পুত্রের প্রধান ধর্মী
- আমাদের সমাজ নানা ধরনের কু সংস্কারে পরিপূর্ণ। কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য সকল বুদ্ধিজীবীর কায়িক এবং মানসিক পরিশ্রম করা উচিৎ।
- নারী জাতি এখনও দ্বিতীয় শ্রেণী মানুষ হিসাবে বিবেচিত, এমন হলে সমাজের সার্বিক উন্নতি কখনও সম্ভব নয়।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কবে মৃত্যুবরণ করেন
বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রয়াত হন ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই, বাংলা ১২৯৮ সনের ১৩ শ্রাবণ, রাত্রি দুটো আঠারো মিনিটে তার কলকাতার বাদুড়বাগানস্থ বাসভবনে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর ১০ মাস ৪ দিন। মৃত্যুর কারণ, ডাক্তারের মতে, লিভারের ক্যানসার।লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আর্টিকেলটিতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম থেকে শুরু করে তার শৈশবকাল যৌবনকাল শিক্ষা জীবন কর্মজীবন তার রচিত সাহিত্য সামগ্রী বাংলা সাহিত্যের অবদান তাদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে প্রত্যেকেই জানা উচিত। সেই দিক বিবেচনা করেই আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেল করে আপনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে বিস্তর ধারণা লাভ করবেন যা আপনার জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবে।
এই পোস্ট যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে তারাও এই মহান ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে পারে। আর এই পোস্ট সম্পর্কিত যদি কোন মতামত প্রশ্ন কিংবা পরামর্শ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন।
চেষ্টা করব কমেন্টের উত্তর দিতে কিংবা মূল্যায়ন করতে। আর এ ধরনের মহান ব্যক্তিবর্গদের সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েব সাইটটিতে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। কারণ এই ধরনের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশিত হয় এছাড়াও বিভিন্ন জ্ঞান-ধর্মী বিজ্ঞানমূল ও সামাজিক দিক নিয়েও আমরা আর্টিকেল প্রকাশ করা যায়।
উক্ত আর্টিকেলগুলো পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকের মত এখানে শেষ করছে। পরিশেষে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।
বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url