কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কত সালে

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের জাতীয় কবি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত। চলুন জেনে নেয়া যাক বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কত সালে এবং তার জীবনী।
কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কত সালে

ভূমিকা

যে কবির কবিতা পাঠে হৃদয়ে স্পন্দন জাগে, রক্তে তোলে শিহরণ, তিনি আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, তিনি বিদ্রোহী কবি, মানবতার কবি, প্রেমের কবি। একবিংশ শতাব্দীর বাংলা মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম।

তিনি একাধারে সাহিত্যিক কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসাবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল ইসলাম: সর্বদাই ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। বাংলা কাব্য-সাহিত্যের অর্জুনে কবি নজরুল একটি বিস্ময়কর নাম। এককথায়- সবার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনায় কাজি নজরুল ইসলাম।

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কত সালে

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও বংশ পরিচয়ঃ কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালে ২৪ শে মে
(১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে এক পীর বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কাজী ফকির মোহাম্মদ, মাতার নাম জাহেদা খাতুন।

তাঁদের চার পুত্রের অকাল মৃত্যুর পর নজরুলের জন্ম হওয়ায় তাঁর নাম রাখা হয 'দুখু মিয়া' কাজী নজরুলের পূর্বপুরুষরা ছিলেন বিহার প্রদেশের অধিবাসী, আসানসোলে এরা কাজীর দায়িত্ব পালন করতেন। নজরুল বাল্য- কালেই তার পিতামাতাকে হারান।

কাজী নজরুল ইসলাম কবে মৃত্যুবরণ করেন

বিদ্রোহী কবি যখন সকল সবিনার উর্ধ্বে তখন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর বাকশক্তি হারিয়ে যায়, হারানো বাকশক্তি তিনি আর ফিরে পাননি। দীর্য প্রচেষ্ঠার পরেও তাঁকে সুস্থ করা যায়নি অবশেষে ১৯৭৬ খ্রী:- ২৯ শে আগস্ট সাতাত্তর বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

 কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর মৃত্যুতে দেশের আপামর জনসাধারন শোকে অভিভূত হয়ে পড়ে।
"মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই”
- তাঁর এ গানের তাৎপর্য অনুসরণ করে তাঁর মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।

কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষাজীবন

চলুন জেনে নেওয়া যাক কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন : নজরুলের শৈশব ছিল বড়ই করুন। মাত্র নয় বছর বয়সে তিনি তাঁর পিতাকে হারান, পিতাকে হারানোর পর তার সংসারে আসে অভাবের ছায়া, তাই মাত্র দশ বছর বয়সে তাকে লেখাপড়া বাদ দিয়ে রুটির দোকানে কাজ শুরু করতে হয়।

এলাকার মক্তব থেকে তিনি নিম্ন মাধ্যমিক পাশ ব মেই মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন। সেই সাথে সেই এলাকার হাজি পালোমানের কবরের সেবক এবং একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজে নিযুক্ত হন তিনি, নজরুল বারো বছর বয়সে লেটোর গানের দলে যোগ দেন।

সেখান থেকেও তিনি সামান্য কিছু রোজগার করতেন এরপর তিনি চাকরী ছেড়ে প্রথমে রানিগঞ্জের সিয়ারশোল স্কুলে এবং পরে বর্ধমানের মাথরুন উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, তিনি যখন দশম শ্রেণীর ছাত্র তখন শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। নজরুল তখন বেঙ্গলি রেজিমেন্টে যোগ দেন। সুদূর রনাঙ্গনে সূচনা হয় তার সৈনিক জীবনের।

কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিভার বিকাশ

১৯১৮ খ্রীষ্টাব্দ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে। বেঙ্গলি রেজিমেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়, এইসময় স্বদেশে ফেরত আসেন নজরুল, তাঁর জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। যুদ্ধের রক্তাক্ত স্মৃতি তাঁর চেতনায় নিয়ে আসে এক পরিনতি। তিনি অনুভব করতে পারেন পরাধীনতার অপমান।

যুদ্ধ চলাকালীনই তিনি লিখেছিলেন "বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী" এবং "রিক্তের বেদন” নামে দুই উপন্যাস, যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে তিনি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে বাংলা কাব্য সাহিত্যের জগতে নিয়োজিত করেন, এইসময় বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভা উজ্বল নক্ষত্রের মতো অন্যান্য সবাইকে আড়াল রেখেছিল।

 কিন্তু নজরুল তাঁর লেখারম মধ্যে এমন এক করে নবীনতাকে নিয়ে এলেন যে বাঙালি পাঠকগণ তাঁকে সাগ্রহে বরণ করে নিলেন।

কাজী নজরুল ইসলামের যৌবনকাল কেমন ছিল

জাগরণ ও যৌবনের কবি: নজরুল ছিলেন জাগরণ ও মেরিনের কবি, তিনি কারতা ও গানের মাধ্যমে জড় জনগনকে জাগাতে চাইলেন, তাই তিনি অজস্র গান ও কবিতা রচনা করে চললেন। তাঁর গান ও কবিতার বানী ও ছন্দে জাগরিত হল পরাধীন দেশের চেতনা শূন্য জনগন, যুবশক্তি, তিনি লিখলেন

- "কারার ঐ লৌহকপাট / ভেঙে ফেশ কররে লোপাট/রক্ত-জমাট শিকল-পূজার পাষান - দেবী" বিদ্রোহী কবিতায় বজ্রকণ্ঠে ঘোষিত হল- "আমি বেদুইন, আমি চেঙ্গিস / আমি আপনারে ছাড়া করিনা কাহারে কুর্নিশ বিদ্রোহের বাণী-সমৃদ্ধ তাঁর "অগ্নিবীনা", "বিষের বাঁশি", "সর্বহারা" "ফনিমনসা" প্রভৃতি

 কাব্যগ্রন্থগুলি অত্যাচার, অবিচার, অনাচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ খড়গ অভিযানের সামিল- বিদ্রোহের সোচার জয়ধ্বনি। বিদেশী ইংরেজ শাসক তাঁর কাব্যের তাৎপর্য উপলব্ধি করে তাঁকে কারাগারে প্রেরণ করেন। নজরুল হিন্দু-মুসলমানকে সমান চোখে দেখতেন এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অটুট মৈত্রী কামনা করতেন।

১৯২৬ খ্রী:- হিমু- মুসলিম সাম্প্রদায়িক বিরোধ ও দাঙ্গার বিরুদ্ধে তিনি লিখলেন - "কান্ডারী হুঁশিয়ার" "পথের দিশা" "হিন্দু-মুসলম যুদ্ধ” " ইত্যাদি নজরুলকে বলা হয় সাম্যের কবি, মানবতার কবি, তার চোখে নারী-পুরুষ ছিল সমান, সাম্য নিয়ে তিনি লিখেছেন -সাম্যের গান গাই – আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।

- বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর” নজরুল তাঁর কবিতায় মানুষের স্থান নির্দেশ করেছিলেন সবার ওপরে লিখেছেন - "মানুষের চেয়ে বড়কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান"

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ 

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থের তালিকা
  • “অগ্নিবীণা”১৯২২
  • “দোলনচাঁপা” ১৯২৩
  • “ ভাঙ্গার গান” ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • “বিষের বাঁশি” ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • “ছায়ানট” ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • “চিত্তনামা” ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • “সাম্যবাদী” ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • “পুবের হাওয়া” ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • “সর্বহারা” ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ
  • “ঝিঙ্গে ফুল” ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ
  • “ফণিমনসা” ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ
  • “সিন্ধু হিন্দোল” ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ
  • “সঞ্চিতা” ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ
  • “জিঞ্জির” ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ
  • “চক্রবাক” ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ
  • “সন্ধ্যা” ১৯২৯খ্রিস্টাব্দ
  • “প্রলয়শিখা” ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ
  • “নির্ঝর” ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ
  • “নতুন চাঁদ” ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ
  • “মরুভাস্কর” ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে
  • “সঞ্চয়ন” ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ
  • “শেষ সওগাত” ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ
  • “মধুবালা” ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ
  • “ঝড়” ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দ
  • “ধুমকেতু” ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দ
  • “রাঙ্গাজবা” ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ।

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • “অগ্নিবীণা”১৯২২ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থ যা ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়। এই কাব্যগ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা বারটি। আর এই কাব্যটি বারীন্দ্র কুমার ঘোষকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
  • “দোলনচাঁপা” ১৯২৩ খ্রীষ্টাব্দ কাব্যগ্রন্থটি কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ পায় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে। প্রথম সংস্করণে এই কাব্যগ্রন্থে ১৯ টি কবিতা ছিল।সূচিপত্রের আগে মুখ বন্ধরূপে সংযোজিত কবিতা “ আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে” ১৩৩০ বঙ্গাব্দের(১৯২৩ খ্রীষ্টাব্দ) জৈষ্ঠ মাসে কল্লোল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। “দোলনচাঁপা” কাব্যগ্রন্থের পরবর্তী সংস্করণে ৫০ কবিতার সংকলিত হয়।
  • “বিষের বাঁশি” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে। এই কাব্যগ্রন্থের মোট কবিতার সংখ্যা ২৭ টি। গ্রন্থটি তৎকালীন সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এই কাব্যের উৎসর্গ পত্রে কবি লিখেছেন, “ বাংলার স্বরূপা মা মিসেস এম রহমান সাহেবার পবিত্র চরণারবিন্দে”।
  • “ছায়ানট” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ পায় ১৯২৫ সালে। এই কাব্যে মোট কবিতার সংখ্যা ৫০ টি। কাব্যের কবিতাগুলো কল্লোল, মোসলেম ভারত, সহচর সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সুকুমার সেন বলেন ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দ এবং ভূদেব চৌধুরী বলেন ১৯২৫খ্রিস্টাব্দে।
  • “ভাঙার গান” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৪ সালে। এই কাব্যে মোট কবিতার সংখ্যা ১১ টি। তৎকালীন বঙ্গ সরকার এ গ্রন্থটিকে বাজেয়াপ্ত করেছিল। গ্রন্থের উৎসর্গ পত্রে লেখক লিখেছেন, “মেদিনীপুর” বাসীর উদ্দেশ্যে।
  • “চিত্তনামা” কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল। কাব্যটি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণ উপলক্ষে রচিত। এই কাব্যে মোট পাঁচটি কবিতা রয়েছে। আর কাব্যের কিছু কবিতাগুলো “বঙ্গবাণী”, “বিজলী”, “পত্রিকা” প্রকাশিত হয়।কবিতাগুলো হল- অর্ঘ্য, অকাল সন্ধ্যা, সান্তনা, ইন্দ্রপতন এবং রাজভিখারী। এই কাব্যগ্রন্থটি বাসন্তী দেবীকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
  • “সাম্যবাদী” কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল। এই কাব্যগ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ১১ টি। সবগুলোতেই মানুষের সমতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
  • “ঝিঙেফুল” ছড়াগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে। এ ছড়াগ্রন্থে মোট ১৪ টি ছাড়া রয়েছে। কাব্যটির উৎসর্গ পত্রে কবি লিখেছেন, “ বীর বাদলকে”।
  • “সর্বহারা” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে। মোট কবিতার সংখ্যা ১০ টি। কাব্যটি বিরজাসুন্দরী দেবীকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
  • “ ফনীমনসা” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৭ সালে। এই কাব্যে মোট কবিতার সংখ্যা ২৩ টি।
  • “ সিন্ধুহিন্দোল” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। এই কাব্যগ্রন্থের মোট কবিতার সংখ্যা ১৯ টি। গ্রন্থটির উৎসর্গ পত্রে কবি লিখেছেন, ‘ আমার এই লেখাগুলো বাহার ও নাহারকে দিলাম’।
  • “সঞ্চিতা” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে। এই কাব্যগ্রন্থটিতে রয়েছে ৭৮টি কবিতা ও ১৭ টি গান।
  • “ চক্রবাক” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৯ সালে। এই কাব্যগ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ১৯ টি। কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র কে।
  • “সন্ধ্যা” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় অনেক ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে। এ কাব্যগ্রন্থের মোট কবিতা ও গানের সংখ্যা ২৪ টি। কাব্যের উৎসর্গ পত্রে কবি লিখেছেন, ‘ মাদারীপুরে শান্তি-সেনার কর শতদলে ও বীর সেনানায়কের শ্রীচরণাম্বুজে’।

নজরুল ইসলাম রচিত অনুদিত গ্রন্থ

  • “ রুবাইয়াৎ-ই- হাফিজ প্রকাশকাল ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে।
  • “ কাব্য আমপারা” প্রকাশকাল ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে।
  • “রুবাইয়াৎ-ই- ওমর খৈয়াম” প্রকাশকাল ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ।

কাজী নজরুল ইসলামের সংগীত গ্রন্থ সমূহ

চলুন জেনে নেয়া যাক বিখ্যাত কবি কাজী নজরুল ইসলাম কোন কোন সংগীত গ্রন্থ সমূহ রচনা করেছেনঃ
  • নজরুল ইসলাম রচিত সঙ্গীত গ্রন্থ :-
  • বুলবুল (গান) ১৯২৮
  • সন্ধ্যা (গান) ১৯২৯
  • চোখের চাতক (গান) ১৯২৯
  • নজরুল গীতিকা (গান সংগ্রহ) ১৯৩০
  • সুরসাকী (গান) ১৯৩২
  • বনগীতি (গান) ১৯৩১
  • জুলফিকার (গান) ১৯৩১
  • গুল বাগিচা (গান) ১৯৩৩
  • নজরুল স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৩১
  • গীতি শতদল (গান) ১৯৩৪
  • চন্দ্রবিন্দু (গান) ১৯৩১
  • সুর মুকুর (স্বরলিপি) ১৯৩৪
  • গানের মালা (গান) ১৯৩৪
  • স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৪৯
  • বুলবুল দ্বিতীয় ভাগ (গান) ১৯৫২
  • রাঙ্গা জবা (শ্যামা সংগীত) ১৯৬৬
  • গানের মালা (গান) ১৯৩৪
  • স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৪৯
  • বুলবুল দ্বিতীয় ভাগ (গান) ১৯৫২
  • রাঙ্গা জবা (শ্যামা সংগীত) ১৯৬৬

কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস কয়টি ও কি কি

নজরুল ইসলাম রচিত উপন্যাস ৩ টি।এগুলো হলোঃ
  • 'বাঁধনহারা' উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে
  • 'মৃত্যুক্ষুধা' উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে
  • 'কুহেলিকা’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে

কাজী নজরুল ইসলামের রচিত গল্পগ্রন্থ

  • 'ব্যথার দান' প্রকাশিত হয় ১৯২২
  • 'রিক্তের বেদন' প্রকাশিত হয় ১৯২৫
  • 'শিউলি মালা' প্রকাশিত হয় ১৯৩১

কাজী নজরুল ইসলামের রচিত নাটক সমুহ

  • 'ঝিলিমিলি' (নাট্যগ্রন্থ) ১৯৩০
  • 'আলেয়া' (গীতিনাট্য) ১৯৩১
  • 'পুতুলের বিয়ে' (কিশোর নাটক)
  • 'মধুমালা' (গীতিনাট্য) ১৯৬০
  • 'ঝড়' (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬০
  • 'বিদ্যাপতি', 'বনের বেদে
  • কাজী নজরুল ইসলামের রচিত প্রবন্ধ :-
  • 'যুগবাণী' (১৯২২)
  • 'রুদ্রমঙ্গল' (১৯২৫)
  • 'দুর্দিনের যাত্রী' (১৯২৬)

কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত পত্রিকা

ধুমকেতু, যুগবানী, লাঙ্গল। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে সওগাত পত্রিকায় নজরুল ইসলামের প্রথম গল্প- অভিন্নলের আত্মকাহিলী প্রকাশিত হয়। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা "জুষ্টি" প্রকাশিত হয় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে। মোসলেম ভারত পত্রিকায় ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে নজরুল ইসলাম তাঁর প্রথম উপন্যাস স্বীধসাত্মা" লিখতে শুরু করেন।

কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত উক্তি সমূহ

প্রেম ও ভালোবাসা নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত বাণী ও উক্তি সমূহ:

১. "ভালবাসার কোন অর্থ বা পরিমাণ নেই।"

২."প্রেম হল ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।"

৩. "তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন, সে জানে তোমারে ভোলা। কি কঠিন।"

৪. 'তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ? চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ।"

৫. "ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা না পেলে তার জীবন দুঃখের ও জড়তার।"

৬. "ভালোবাসাকে যে জীবনে অপমান করে সে জীবনে আর ভালোবাসা পায় না।"

৭. 'আমার যাবার সময় হল দাও বিদায়, মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়।"

৮. "আমার বুকের যে কাঁটা-ঘা তোমায় ব্যথা হানত,। সেই আঘাতই যাচবে আবার হয়তো হয়ে শ্রান্ত। আসব তখন পান্থ!! হয়তো তখন আমার কোলে,/ সোহাগ লোভে পড়বে ঢ'লে। আপনি সেদিন সেধে-কেঁদে। চাপবে বুকে বাহু বেঁধে,। চরন চু'মে পূজবে - বুঝবে সেদিন বুঝবে!"

৯."কামনা আর প্রেম দুটি হচ্ছে সম্পূর্ণ আলাদা। কামনা একটা প্রবল সাময়িক উত্তেজনা মাত্র আর প্রেম হচ্ছে ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।"

১০. ভোলার মাঝে উঠবে বেঁচে, সেই তো আমার প্রাণ! নাই বা পেলাম, চেয়ে গেলাম, গেয়ে গেলাম গান!

১১. পাইনি বলে আজো তোমায় বাসছি ভালো, রাণি, মধ্যে সাগর, এ-পার ও-পার করছি কানাকানি! আমি এ-পার, তুমি ও-পার,মধ্যে কাঁদে বাধার পাথার।

১২." মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে বিরহের যন্ত্রণা যে কতো কঠিন, কতো ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভোগীই অনুভব করতে পারে।"

১৩." হয়তো তোমার পাব দেখা যেখানে ঐ নত আকাশ চুমছে বনের সবুজ রেখা।"

বিদ্রোহ ও প্রতিবাদ বিষয়ে উক্তি সমূহ

১৪. বল বীর-বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির।"- কাজী নজরুল ইসলাম (উৎস- 'বিদ্রোহী' কবিতা)

১৫. কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত- জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।" (উৎস- ভাঙ্গার গান' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত) ১৬. ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান আসি' অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান?" (উৎস- 'সর্বহারা' কাব্যের 'কান্ডারী হুঁশিয়ার')

১৭. আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন উৎস বিদ্রোহী' কবিতা)

১৮. "আমি বেদুইন, আমি চেঙ্গিস, আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ।"- (উৎস 'বিদ্রোহী' কবিতা)

১৯. "মহা - বিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত।যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-বিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত।"

২০." আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী, তন্বী নয়নে বহ্নি, আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি।"(উৎস- 'বিদ্রোহী' কবিতা)

নারী নিয়ে বিখ্যাত বাণী

২১. বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী। (উৎস- 'নারী' কবিতা)

২২. নর-ভাবে আমি বড় নারী ঘেঁষা! নারী ভাবে, নারী বিদ্বেষী!' (উৎস- 'সর্বহারা' কাব্যের 'আমার কৈফিয় কৈফিয়ৎ' কবিতা)

২৩. কোনকালে একা হয়নিকো জয়ী, পূরুষের তরবারী; প্রেরনা দিয়েছে, শক্তি দিয়াছে, বিজয়-লক্ষী নারী।" (উৎস-'নারী' কবিতা) 2:38 PM কেফিয়ৎ

২৪. "আপনারে আজ প্রকাশের তব নাই সেই ব্যাকুলতা আজ তুমি ভীরু আড়ালে থাকিয়া নেপথ্যে কও কথা! চোখে চোখে আজ চাহিতে পার না: হাতে রুলি, পায়ে মল,মাথায় ঘোমটা, ছিঁড়ে ফেল নারী, ভেঙে ফেল ও শিকল! যে-ঘোমটা তোমায় করিয়াছে ভীরু ওড়াও সে আবরণ! দূর করে দাও দাসীর চিহ্ন ঐ যতো আবরণ।" (উৎস- 'নারী' কবিতা)

২৫. "সর্বসহা কন্যা মোর! সর্বহারা মাতা! শূন্য নাহি রহে কভূ মাতা ও বিধাতা!" (উৎস- 'সর্বহারা' কাব্যগ্রন্থের 'মা'কবিতা)

২৬. তোমার মমতা-মানিক আলোকে চিনিনু... মাতা তুমি লাঞ্ছিতা বিশ্ব-জননী। তোমার আঁচল পাতা নিখিল দুঃখী-নিপীড়িত তবে, বিষ শুধু তোমা দহে যথা তব মাগো পীড়িত নিখিল ধরণীর ভার বহে।"- কাজী নজরুল ইসলাম।

২৭. "ভগবান! তুমি চাহিতে পার কি ঐ দুটি নারীর পানে? জানি না, তোমায় বাঁচাবে কে যদি ওরা অভিশাপ হানে!" 

২৮. "খেলে চঞ্চলা বরষা-বালিকা মেঘের এলোকেশে ওড়ে পুবালি বায় দোলে গলায় বলাকার মালিকা।" 

২৯. "কান্না হাসির খেলার মোহে অনেক আমার কাটল বেলা কখন তুমি ডাক দেবে মা, কখন আমি ভাঙব খেলা?" (উৎস- "উপেক্ষিত" কবিতা)
ধর্ম, মানবতা ও সমাজ নিয়ে উক্তি :-

৩০. 'নামাজ পড়, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই, তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই।"

৩১. "মৌ-লোভী যত মৌলবি আর মোল-লা'রা কন হাত নেড়ে দেব-দেবী নাম মুখে আনে সবে দাও পাজিটার জাত মেরে ফতোয়া দিলাম কাফের কাজী ও যদিও শহীদ হইতে রাজি ও আমপারা পড়া হামবড়া মোরা এখনও বেড়াই ভাত মেরে হিন্দুরা ভাবে পার্শী শব্দে কবিতা লেখে ও পা'ত নেড়ে।"

৩২. "পুঁথির বিধান যাক পুড়ে তোর বিধির বিধান সত্য হোক।" (উৎস- সত্য-মন্ত্র" কবিতা)

৩৩. "যুগের ধর্ম এই- পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই।"

৩৪. "গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে মহীয়ান।" (উৎস- 'মানুষ'কবিতা)

৩৫. "অসুন্দর পৃথিবীকে সুন্দর করতে; সর্বনির্যাতন থেকে মুক্ত করতেই মানুষের জন্ম।"

৩৬. হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে, কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র।"(উৎস-"কান্ডারী হুঁশিয়ার" কবিতা)

৩৭. "জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্মসম সহনশীল তাই কি ভাই ভাঙতে পারে ছোঁওয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল? যে জাত-ধর্ম ঠুনকো এত আজ না হয় কাল ভাঙবে সে ত। যাক না সে জাত জাহান্নামে রইবে মানুষ নাই পরোয়া!"

৩৮. যেথা সবে-সম-পাপী আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের অন্যের পাপ মাপি জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি। দেবতাই হও টুপি পড়ে টিকি রেখে সদা বলো যেন তুমি পাপী নও পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং ট্রেডমার্কার ধুম পুলিশি পোশাক পরিয়া হয়েছ পাপের আসামী গুম। "(উৎস-'পাপ' কবিতা

৩৯." মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।"

৪০. "খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে। প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা প্রভু নিরজনে।"

৪১. "দূর আজানের মধুর ধ্বনি, বাজে, বাজে মসজিদের-ই মিনারে। মনেতে জাগে, হাজার বছর আগে, হজরত বেলালের অনুরাগে। তার খাস এলাহান, মাতাইতো প্রাণ। ভাঙ্গাইতো পাষান, জাগাইতো মহিমারে। দূর আজানের মধুর ধ্বনি, বাজে, বাজে মসজিদের-ই মিনারে।"

৪২. বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে, আমরা তখনও বসে- বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি, ফিকাহ ও হাদিস চষে।"

৪৩. "মরিছে হিন্দু, মরে মুসলিম এ উহার ঘায়ে আজ, বেঁচে আছে যারা মরিতেছে তারা, এ-মরণে নাহি লাজ! জেগেছে শক্তি তাই হানাহানি, অস্ত্রে অস্ত্রে নব জানাজানি! আজি পরীক্ষা-কাহার দস্ত হয়েছে, কত দরাজ! কে মরিবে কাল সম্মুখ-রণে, মরিতে কা 'রা নারাজ!" (উৎস-হিন্দু- মুসলিম যুদ্ধ' কবিতা)

৪৪. "বাহিরের স্বাধীনতা গিয়াছে বলিয়া অন্তরের স্বাধীনতাকেও আমরা যেন বিসর্জন না দিই।"

৪৫. "হেথা সবে সম পাপী, আপন পাপের বাটখারা দিয়ে তান্যের পাপ মাপি!"

৪৬. ও কারা কোরাণ বেদ বাইবেল চুম্বিছে মরি মরিও মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মুর্খরা সব শোন মানুষ এনেছে গ্রন্থ: গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনও।"- (উৎস-'মানুষ' কবিতা)

৪৭. 'আমি এই দেশে, এই সমাজে জন্মেছি বলেই শুধু এই দেশের, এই সমাজেরই নই, আমি সকল দেশের সকল মানুষের।"

৪৮. "সত্য যদি হয় ধ্রুব তোর কর্মে যদি না রয় ছল, ধর্ম দুগ্ধে না রয় জল সত্যের জয় হবেই হবে আজ নয় কাল মিলবেই ফল।" - (উৎস-সত্য-মন্ত্র'কবিতা)

৪৯. মিথ্যা শুনিনি ভাই এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনও মন্দির-কাবা নাই।" ৫০. রাখাল বলিয়া কারে করো হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে! হয়তো গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে!"- (উৎস 'মানুষ' কবিতা) ৫১. "সত্যকে অস্বীকার করিয়া ভন্ডামি দিয়া কখনো মঙ্গল করে ভিত্তি না গাঁথলে তার ওপর ইমারত যতবার খাঁড়া করা যাবে, ততবার তা পড়ে

৫৩. তিনিই আর্টিস্ট, যিনি আর্ট ফুটাইয়া তুলিতে পারেন। আর্টের অর্থ সত্য প্রকাশ এবং সত্য মানেই সুন্দর; সত্য চিরমঙ্গলময় উৎসবের কল্যাণ প্রদীপ জ্বলিবে না।"

৫২. যার ভিত্তি পচে গেছে, তাকে একদম উপড়ে ফেলে নতুন

৫৪. শোন মর্ত্যের জীব অন্যের যত করিবে পীড়ন নিজে হবে তত ক্লীব।"

৫৫. "অনেক সময় খুব বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে নিজের সত্যেকে অস্বীকার করে ফেলা হয়। তাতে মানুষকে ক্রমেই ছোট করে ফেলে, মাথা নিচু করে আনে ও রকম মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক ভালো।"

৫৬. "শাস্ত্র না ঘেটে ডুব দাও সখা সত্য সিন্ধু জলে।"- কাজী নজরুল ইসলাম (উৎস 'ঈশ্বর' কবিতা)

৫৭. "পশুর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে আমাদের লাভ কী, যদি আমাদের গৌরব করার মতো কিছু না-ই থাকে।"

৫৮." শিহরি উঠো না শাস্ত্রবিদেরের ক'রোনা ক' বীর ভয় তাহারা খোদার খোদ 'প্রাইভেট সেক্রেটারি' তো নয়।

৫৯. ব্যর্থ না হওয়ার সব চাইতে নিশ্চিন্ত পথ হলো সাফল্য অর্জনে দৃঢ় সঙ্কল্প হওয়া।"

৬০. অন্ধের মতো কিছু না বুঝিয়া, না শুনিয়া, ভেড়ার মতো পেছন ধরিয়া চলিও না। নিজের বুদ্ধি, নিজের কার্যশক্তিকে জাগাইয়া তোলে।"

৬১. বহু যুবককে দেখিয়াছি যাহাদের যৌবনের উর্দির নিচে বার্ধকের কঙ্গাল মূর্তি।'

৬২. আসবে ঝড়, নাচবে তুফান, টুটবে সকল বন্ধন, কাঁপবে কুটীর সেদিন ব্রাসে, জাগবে বুকে ক্রন্দন- টুটবে যবে বন্ধন!পড়বে মনে, নেই সে সাথে বুঝবে সেদিন বুঝবে।"

৬৩. "আমরা রচি ভালোবাসার আশার ভবিষ্যৎ মোদের স্বর্গ-পথের আভাস দেখায় আকাশ-ছায়াপথ! মোদের চোখে বিশ্ববাসীর স্বপ্ন দেখা হোক সফল। আমরা ছাত্রদল।-(উৎস- 'ছাত্রদল' কবিতা) ৬৪. সত্য যদি লক্ষ্য হয়, সুন্দর ও মঙ্গলের সৃষ্টি সাধনা ব্রত হয়, তবে তাহার লেখা সম্মান লাভ করিবেই করিবে।"

৬৫. রক্ত ঝরাতে পারি না তো একা, তাই লিখে যাই এ রক্ত লেখা।"

৬৬. আজি হ'তে শত বর্ষে আগে, কে কবি,স্মরণ তুমি করেছিলে আমাদের শত অনুরাগে।কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আজি হতে শতবর্ষ পরে" পড়ে-১৪০০ সাল কবিতা

দুঃখ ও বিরহ স্ট্যটাস

৬৭." যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুঁছবে বুঝবে সেদিন বুঝবে। "- (উৎস- 'অভিশাপ' কবিতা)

৬৮." আসবে আবার আশিন-হাওয়া, শিশির-ছেঁচা রাত্রি, থাকবে সবাই থাকবে না এই মরণ-পথের যাত্রী! আসবে শিশির-রাত্রি! থাকবে পাশে বন্ধু স্বজন, থাকবে রাতে বাহুর বাঁধন, বঁধুর বুকের পরশনে আমার পরশ আনবে মনে- বিষিয়ে ও-বুক উঠবে- বুঝবে সেদিন বুঝবে!"-(উৎস- 'অভিশাপ' কবিতা 4

৬৯." স্বপন ভেঙ্গে নিশুত রাতে, জাগবে হঠাৎ চমকে কাহার যেন চেনা ছোয়ায় উঠবে ও-বুক ছমকে- জাগবে হঠাৎ ছমকে, ভাববে বুঝি আমিই এসে বসনু বুকের কোলটি ঘেষে ধরতে গিয়ে দেখবে যখন শূন্য শয্যা মিথ্যা স্বপন বেদনাতে চোখ বুজবে- বুঝবে সেদিন বুঝবে।"- (উৎস- 'অভিশাপ' কবিতা)

৭০. "কপালে সুখ লেখা না থাকলে সে কপাল পাথরে ঠুকেও লাভ নেই। এতে কপাল যথেষ্টই ফোলে, কিন্তু ভাগ্য একটুও ফোলে না।"

৭১." এই নীরব নিশীথ রাতে শুধু জল আসে আঁখিপাতে!"-(উৎস- 'ব্যথা নিশীথ' কবিতা:

৭২." হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে ক'রেছ মহান! তুমি মরে দানিয়াছ খ্রিষ্টের সম্মান।"- (উৎস- দারিদ্র্য' কবিতা)

৭৩. "আমাদের শত ব্যথিত হৃদয়ে জাগিয়া রহিবে তুমি ব্যথা হ'য়ে, হ'লে পরিজন চির-পরিচয়ে- পুনঃ পাব তব দরশন, এ নহে পথের আলাপন।"- (উৎস- 'বিদায়- স্মরণে' কবিতা) ৭৪. "নুড়ি হাজার বছর ঝরণায় ডুবে থেকেও রস পায় না।"

৭৫. হাসি দিয়ে যদি লুকালে তোমার সারা জীবনের বেদনা আজো তবে শুধু হেসে যাও, আজ বিদায়ের দিনে কেঁদোনা।"

৭৬. "মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে বিরহের যন্ত্রণা যে কতো কঠিন, কতো ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভুগিই অনুভব করতে পারে"।

৭৭. "আমার যাবার সময় হল দাও বিদায় মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়।"

৭৮. "আমি নিজেই নিজের ব্যথা করি সৃজন শেষে সেই আমারে কাঁদায়, যারে করি আপনারি জন।" ৭৯. "গাইতে গিয়ে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না বলবে সবাই- সেই যে পথিক তার শোনানো গান না?- আসবে ভেঙ্গে কান্না, পড়বে মন আমার সোহাগ কন্ঠে তোমার কাদবে বেহাগ পড়বে মনে আমার ফাকি অশ্রুহারা কঠিন আখি ঘন ঘন মুছবে, বুঝবে সেদিন বুঝবে।"

৮০." স্বপনে কি যে কয়েছি তাই গিয়াছে চলে জাগিয়া কেঁদে ডাকি দেবতায় প্রিয়তম প্রিয়তম প্রিয়তম।।"

৮২. বসন্ত মুখর আজি দক্ষিণ সমীরণে মর্মর গুঞ্জনেবনে বনে বিহ্বল বাণী ওঠে বাজি।"

৮৩." বসন্ত এলো এলো এলোরে পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে মুহু মুহু কুহু কুহু তানে মাধবী নিকুঞ্জে পুঞ্জে পুঞ্জে ভ্রমর গুঞ্জে গুঞ্জে গুনগুন গানে।"

৮৪. আসে বসন্ত ফুল বনে সাজে বনভূমি সুন্দরী; চরণে পায়েলা রুমুঝুমু মধুপ উঠিছে গুঞ্জরি।"

লেখকের মন্তব্যঃ

প্রিয় পাঠক উপলক্ষে আর্টিকেলটিতে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। উক্ত আর্টিকেলটিতে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু তিনি আমাদের জাতীয় কবি তাই দেশের একজন সচেতন নাগর হিসেবে তার সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।

কারণ বাংলায় তার অবদান অনস্বীকার্য। এর সাথে এই আর্টিকেল কবির জন্ম-মৃত্যু, শৈশবকাল, যৌবন কাল, শিক্ষা জীবন, তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস , ছোট গল্প এবং তার বিখ্যাত যত বাণী রয়েছে সেই বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এখানে চেষ্টা করা হয়েছে যথাসম্ভব সর্বোচ্চ সঠিক তথ্য প্রদানের। আশা করি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন।

যদি পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন যাতে করে তারাও আমাদের জাতীয় ও বিদ্রোহী কবির সম্পর্কে আরো পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারে। সেই সাথে আরো অন্যান্য বিখ্যাত কবিদের সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করতে পারেন।

আর এই পোস্ট সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন মতামত কিংবা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। যাতে করে আপনার মাধ্যমে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। পরিশেষে পোস্টটি সম্পন্ন পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url