কলা খাওয়ার ১৫ টি উপকারিতা

কলা হলো সুলভ মূল্যের একটি ফল। যদিও এটি সস্তা তারপরেও এর অনেক উপকারিতা ও কার্যকারিতা রয়েছে। যেগুলো আমাদের শরীর স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেয়া যাক কলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি
কলা খাওয়ার উপকারিতা

ভূমিকাঃ

বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক সুস্বাদু ফলমূল পাওয়া যায় যেমন কলা, আপেল, পেয়ারা, কমলালেবু, আম, জাম,কাঁঠাল ইত্যাদি। এই ফলগুলো যেমন সুস্বাদু তেমনি উপকারীও। এ ধরনের ফলমূল খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান পেতে পারি।

সেই সাথে আমাদের ও স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হয়। এরকমই কিছু ফলের উপকারিতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কলা খাওয়ার উপকারিতা

শুনতে কিছুটা অদ্ভুত হলেও দেহের এমন কিছু সমস্যা রয়েছে যা রোধে ওষুধের থেকে কলা অনেক কার্যকরী। কলার মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ; এটি খেতেও বেশ মজাদার। সম্প্রতি একটি গবেষণায় বলা হয়, এই ফল নারীর ঋতুস্রাবের সমস্যা সমাধান করে এবং দেহে শক্তি বাড়ায়।

কলায় থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। বিভিন্ন পরীক্ষা লব্ধ ফলাফল থেকে জানা যায় যে কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক কলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি
  • কলা শক্তির (এনার্জি) অত্যন্ত ভালো উৎস। এর ফলে অনেক খেলোয়াড়কে বেশি পরিমাণে কলা খেতে হয় সেই সাথে সাধারণ মানুষও তাদের খাদ্য তালিকায় একটি করে কলা রাখতে পারে।
  • কলার মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড, যেটি মানসিক চাপ হিসেবে কাজ করে। সুতরাং যদি প্রতিনিয়তই খাদ্য তালিকায় একটি করে কলা রাখা যায় তাহলে অনেকাংশে মানসিক চাপ একটু হলেও লাঘব হবে।
  • এই ফলের মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম যা বিষন্নতা রোধেও কাজ করে। অতএব যদি আপনি কখনো একাকীত্ব বা বিষন্নতায় ভোগেন তাহলে কলা খেতে পারেন।
  • কলার মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ লবণ যা হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে থাকে।
  • প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া আপনার স্মৃতিশক্তিকে বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করবে।
  • এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং যেসব রোগীর রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া রোগ রয়েছে তাদের জন্য এটি বেশ উপাদেয়।
  • কলা দেহের হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • সন্তান সম্ভবা নারীর জন্য কলা খাওয়া খুবই উপকারী কেননা এটি সকাল বেলার দুর্বলতা কাটাতে কাজ করে এবং রক্তে শর্করার সামঞ্জস্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
  • কলা পাকস্থলীর এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাকস্থলীর আলসার রোধে কাজ করে।
  • এর মধ্যে ৬ ধরনের ভিটামিন রয়েছে যা রক্তের শর্করা গঠনে কাজ করে।
  • এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর ফাইবার। রোজ সকালে একটি করে পাকা কলা খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখবে।
আরো পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা

সুতরাং যেহেতু আপনারা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলেন সেহেতু আপনাদের প্রত্যেকের উচিত খাদ্য তালিকায় একটি করে হলেও কলা রাখা উচিত।

কলা খাওয়ার অপকারিতা

আমরা অত্যধিক কলা খাওয়ার স্বাস্থ্যের ফলাফলগুলি অন্বেষণ করব এবং একটি সুষম খাদ্য এবং সর্বোত্তম স্বাস্থ্য বজায় রাখতে আপনার যা জানা দরকার তার উপর আলোকপাত করব।
কলা নিঃসন্দেহে একটি পুষ্টিকর ফল, যা অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন, মিনারেল এবং ডায়েটারি ফাইবারে পরিপূর্ণ।

যাইহোক, এগুলি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে যা আপনি জানেন না।এখন অত্যধিক কলা খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য স্বাস্থ্যগত পরিণতি নিয়ে আলোচনা করব, যার মধ্যে রয়েছে:
  • ওজন বৃদ্ধিঃকলায় কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক শর্করা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। অংশের আকার বিবেচনা না করে অনেক বেশি কলা খাওয়া ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে, বিশেষ করে যদি সেগুলি ইতিমধ্যেই কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি খাওয়া হয়।
  • ব্লাড সুগার স্পাইকসঃকলার উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে, যার মানে বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে তারা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে। ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন প্রতিরোধী ব্যক্তিদের জন্য, অত্যধিক কলা সেবনের ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, সম্ভাব্যভাবে তাদের অবস্থা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • হজমের অস্বস্তিঃযদিও কলা খাদ্যতালিকাগত ফাইবারের একটি ভাল উৎস, তবে এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে হজমের অস্বস্তি, ফোলাভাব, গ্যাস এবং এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে, বিশেষ করে সংবেদনশীল পাচনতন্ত্রের ব্যক্তিদের জন্য।
  • হাইপারক্যালেমিয়াঃকলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে, যা বিভিন্ন শারীরিক কাজের জন্য অপরিহার্য। যাইহোক, কলার মতো পটাসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবারের অত্যধিক ব্যবহার
 হাইপারক্যালেমিয়া নামক অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা রক্তে পটাসিয়ামের উচ্চ মাত্রা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।এই অবস্থার কারণে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, পেশী দুর্বলতা এবং গুরুতর ক্ষেত্রে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে।
  • দাঁতের সমস্যাঃকলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, যা দাঁতের ক্ষয় এবং গহ্বরে অবদান রাখতে পারে, বিশেষ করে যদি সঠিক মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করা হয়। খুব বেশি কলা খাওয়া, বিশেষ করে শুকনো কলা বা কলা-ভিত্তিক স্ন্যাকস, দাঁতের সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

একটি সুষম খাদ্যের অংশ হিসাবে কলা উপভোগ করা এবং অতিরিক্ত সেবনের সাথে সম্পর্কিত সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি এড়াতে অংশ নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন করা অপরিহার্য। মনে রাখবেন, সর্বোত্তম স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বজায় রাখার জন্য সংযম চাবিকাঠি।

আপনার খাদ্যাভ্যাস বা স্বাস্থ্য সম্পর্কে আপনার যদি কোনো উদ্বেগ থাকে, ব্যক্তিগত নির্দেশনার জন্য একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার বা নিবন্ধিত খাদ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

খালি পেটে কলা খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনি কি সকালে খালি পেটে কলা খান? জানেন এতে করে আপনার কি হচ্ছে? চলুন জেনে নেয়া যাক সকাল বেলা খালি পেটে কলা খেলে কি হয়

ডিম ও দুধের পাশাপাশি সকালের খাবারের তালিকায় কলা রাখতে দেখা যায় অনেককেই। এর অবশ্য কারণও আছে অনেক। কলায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। দ্রুত শক্তি যোগাতে ও কলার জুড়ি নেই। তাই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সকালের খাবারে জায়গা দেয়া হয় কলাকে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিলেও বিশেষজ্ঞরা নিষেধ করেছেন সকালের খাবারের তালিকায় কলা নামক ফলটি রাখতে। খালি পেটে কলা খেলে সত্যিই কি কোন সমস্যা হয়? আর এর কারণই বা কি ।নিম্নে বিস্তারিতঃ

কলায় ভিটামিন বি ৬ থাকে প্রচুর পরিমাণে। যদিও এর সঙ্গে ভিটামিন সি এর কোন সম্পর্ক নেই। একটি মাঝারি মাপের কলা আপনাকে শরীরে ১০ শতাংশ প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি দিতে পারে।কলা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ, আছে ফাইবার ও। গ্যাস- অম্বল ও হজমের সমস্যা দূর করে কলা। এতে তিনটি ন্যাচারাল সুগার থাকে, সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ।

এতে কোলেস্টরল ফ্রি এনার্জি তৈরি হয় শরীরে। কলায় থাকা সুগার শরীরের প্রায় ২৫% প্রয়োজন মেটায়। কিন্তু যুক্ত হয়ে শরীরে প্রবেশ করলে এসিডিক ন্যাচার গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। দিনের শুরুতে কলা খেলে, এর ফলে আপনার আরো ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত লাগতে শুরু করে। সে ক্ষেত্রে শরীরে ক্ষতি হয় অনেক বেশি।

ক্ষুধা এতটায় বাড়তে থাকে যে খাওয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে শরীরে ওজন বাড়তে থাকে। তাই খালি পেটে নয়, সকালের খাবারের অন্তত আধাঘন্টা পরে খেতে পারেন কলা।

লেবু খাওয়ার উপকারিতা

নিয়মিত লেবু পানি খেলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্তি মেদ ঝরে যায়। কারণ লেবুর পেকটিন অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বার বার খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে কম ক্যালরি প্রবেশ করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না।

হাজারো বিউটি প্রডাক্ট যা করে উঠতে পারেনি, লেবু পানি নিমেষে করে ফেলতে পারে। পানীয় ত্বকের হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে। সঙ্গে ত্বকের বয়স কমানোর পাশাপাশি ব্ল‍্যাক হেডস এবং বলিরেখা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গরমকালে ত্বক ঠাণ্ডা এবং ঘামমুক্ত রাখতে লেবুর পানি দিয়ে বারে বারে মুখ ধুতে পারেন, উপকার পাবেন।

লেবু খেলে যেমন মুখে রুচি বাড়ে তেমনি আমাদের শরীরে ভিটামিনের অভাবও পূরণ করে। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি যা ত্বক সুন্দর করে। ভিটামিন সি রোদে বা তাপে নষ্ট হয়ে যায় তাই ত্বক সুস্থ রাখতে আমাদের বারবার ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন যা ভাতের সাথে লেবু খাওয়ার মাধ্যমে পূরণ হয়ে থাকে।

আপনি কি কখনও রসুনের গন্ধ বা অন্য কোনও তীব্র গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে হাতে লেবু ঘষেছেন? রসুন, পিঁয়াজ বা মাছের মতো তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের ক্ষেত্রেও একই প্রতিকার প্রযোজ্য হতে পারে। খাবারের পরে এবং সকালে প্রথমে এক গ্লাস লেবু পানি পান করে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এড়ানো যেতেপারে।

তাছাড়া লেবু লালাগ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে। ফলে মুখগহ্বর শুষ্ক হয় না ও ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধর আশঙ্কা কমে।

লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। সাইট্রেট, সাইট্রিক অ্যাসিডের একটি উপাদান, যা প্রস্রাবের অম্লত্ব হ্রাস করে এবং এমনকি ছোট পাথর ভেঙে ফেলতেও সহায়তা করতে পারে।

সেই সঙ্গে পাথর প্রতিরোধ বা ফ্লাশ করার জন্য প্রয়োজনীয় পানিও পাওয় পাওয়া যায়।লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে ও চুলের বৃদ্ধি করে। এটি চুলের ফলিকলগুলিকে উদ্দীপিত করে। যা চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

লেবুর খোসার উপকারিতা

লেবুর খোসায় ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, জিঞ্জিভাইটিসসহ একাধিক রোগ প্রতিরোধ করে। লেবুর খোসায় সাইট্রাস বায়ো ফ্লেভোনয়েড থাকে, যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।তাই ঠোঁটের কালচেভাব দূর করতেও লেবু দারুণ কার্যকর।

এক টুকরা লেবু নিয়ে ঠোঁটে ঘষে নিলেই উপকার পাওয়া যাবে। প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে লেবুর রস মেখে ঘুমালে উপকার পাওয়া যাবে। এক চামচ লেবুর রস, সামান্য নারিকেল তেল ও দুই চামচ চিনি ভালোভাবে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।

লেবু খাওয়ার ৩০ উপকারীতা

লেবুতে থাকে ইলেকট্রোলাইটস (যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি)। সকালবেলা লেবু পানি আপনাকে হাইড্রেট করে, শরীরে যোগান দেয় প্রয়োজনীয় উপাদানের যা দেহের পানিশূন্যতা দূর করে 

  • হাড় Joint ও muscle pain কমায় দ্রুত
  • কৃমির আক্রমন প্রতিরোধ করে।
  • অন্য যে কোন খাবারের চাইতে লেবু পানির ব্যবহারে লিভার অনেক বেশী দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করতে পারে।
  • লেবু পানি টক্সিক উপাদান দূর করে লিভারকে পরিষ্কার রাখে।
  • পেট পরিষ্কার ও ভালো টয়লেট হতে সহায়তা করে।
  • লেবুপানি আমাদের দেহের মেটাবোলিজম বৃদ্ধি করে ও লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • আপনার নার্ভাস সিস্টেমে দারুণ কাজ করে। লেবুর পটাশিয়াম আপনার বিষণ্ণতা ও উৎকণ্ঠা দূর করতে সহায়ক।
  • লেবু পানি শরীরের রক্তবাহী ধমনী ও শিরাগুলোকে পরিষ্কার রাখে।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
  • কিডনী ও প্যানক্রিয়াসের পাথর দূর করতে অসাধারণ কার্যকর।
  • ওজন দ্রুত কমাতে সহায়তা করে। লেবুতে থাকে পেকটিন ফাইবার যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
  •  শরীরের পি এইচ লেভেল উন্নত করে। পি এইচ লেভেল যত উন্নত, শরীর রোগের সাথে লড়াই করতে তত সক্ষম।
  • ইউরিক এসিড সমস্যা দূর করতে সহায়ক।
  • লেবুপানি দেহের ত্বকের জন্য খুবই ভাল। লেবুর ভিটামিন সি উপাদান দেহের ত্বক ও টিস্যুর জন্য খুব জরুরি। তাই ত্বকের যে কোন সমস্যা রোধ করতে প্রতিদিন লেবুপানি পান করুন।
  • আপনার ত্বককে করে তোলে সুন্দর ও পরিষ্কার।
  • লেবুপানি দেহের গিটে গিটে ব্যথা দূর করে।
  • দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। দাঁতব্যথা কমায়।
  • ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • মেটাবলিজম বা হজমশক্তি বাড়ায়। ওজন কমাতেও সহায়তা।
  • দেহের প্রদাহ দূর করে, গলা ব্যথা, টনসিলের সমস্যা, শ্বাসযন্ত্রের ইনফেকশনও সাড়িয়ে তোলে।
  • দেহের কোন অংশ পুড়ে গেলে তা লেবুপানি দিয়েই চিকিৎসা করা যাবে। আধা ঘন্টা পানির সাথে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে পোড়া ত্বকে লাগিয়ে নিন। এছাড়া লেবু পানি নতুন কোষগুলোকে সজীব করে তোলে বিধায় যে কোন ক্ষত দ্রুত নিরাময় হয়।
  • লেবুপানি পিত্তথলী, অগ্নাশয় ও কিডনির পাথর রোধ করে।
  • বুক জ্বালা পড়া দূর করে। যাদের এই সমস্যা আছে রোজ আধা কাপ পানির মাঝে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
  • গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই ভালো লেবু পানি। এটা শুধু শরীরই ভালো রাখে না। গর্ভের শিশুর অনেক বেশী উপকার করে। লেবুর ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শিশুর হাড়, মস্তিষ্ক ও দেহের কোষ গঠনে সহায়তা করে।
  •  মাকেও গর্ভকালীন সময় রোগ বালাই থেকে লেবুপানি দেহের ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রনে রাখে।
  • রোজ পান করলে হাই ব্লাড প্রেশার ১০% কমে যায়।
  • লেবুপানি ক্যানসার রোগও প্রতিরোধ করে।
  • লেবুতে আছে এলকালাইন উপাদান এবং বিজ্ঞানীরা বলেছেন ক্যানসারের কোষ এলকালাইন উপাদান এর সাথে থাকতে পারেনা।
  • মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
  • সর্দি কাশি প্রতিরোধ করে।

আপেল খাওয়ার উপকারিতা

আপেল একটি সুস্বাদু ফল। এটি যেমন খেতেও সুস্বাদু তেমনি এর উপকারও অনেক।তো চলুন জেনে  নেওয়া যাক আপেলের কোন কোন গুণ আমাদের কিভাবে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

  • আপেল খেলে দাঁতের দারুন উপকার হয় তার কারণ আপেলে কামড় দিয়ে যখন আমরা চিবতে শুরু করি তখন আমাদের মুখের ভিতর লালার সৃষ্টি হয় এই পদ্ধতিতে দাঁতের কোনা থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে। এর ফলে সেই ব্যাকটেরিয়া আর দাঁতের কোন ক্ষতি করতে পারে না। তাই বলে শুধু আপেল খেয়ে দাঁতের যত্ন নিলে হবে না। মনে করে ব্রাশ করে দাঁতের যত্ন নিতে হবে।
  • আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আপেল খেলে অগ্ন্যাসয়ে ক্যান্সারের সম্ভাবনা প্রায় ২৩% হারে কমে। কারণ আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্লাবনল থাকে এছাড়াও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা আপেলের মধ্যে এমন কিছু উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন যা ট্রিটারপেনয়েডস নামে পরিচিত। এই উপাদানটি লিভার, স্তন এবং কোলন এর মধ্যে ক্যান্সারের কোচ বেড়ে উঠতে বাধা দেয়।
  • ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ইন দা ইউ এস- এর গবেষণা থেকে জানা যায় আপেলের মধ্যে যে পরিমাণে ফাইবার থাকে তা মলাশয়ের ক্যান্সার রোধে সাহায্য করে।
  • যে সকল ব্যক্তিরা প্রতিদিন আপেল খান তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ কমে যায় তার কারণ আপেলের মধ্যে যে ফাইবার থাকে তার রক্তের শর্করার পরিমাণ সঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • আপেলের মধ্যে যে ফাইবার থাকে তা অন্ত্রের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক থাকে। আর একবার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করলে হার্টের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
  • আপেলের খোসার মধ্যে যে ফ্রেন্ডলিগ উপাদান থাকে তার রক্তনালিকা থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্টে রক্ত চলাচলস্বাভাবিক থাকে।ফলে হৃদযন্ত্রের কোন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
  • অনেক সময় আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য বা ভালো মতো পেট পরিষ্কার না হতে পারে। এ ধরনের সমস্যার সমাধানের জন্য, আপেল খেতে হবে কারণ আপেল প্রয়োজন অনুযায়ী বর্জ্য থেকে অতিরিক্ত পানি টেনে রাখতে পারে। এর ফলে একদিকে যেমন বারবার বাথরুমে যেতে হয় না তেমনি হজম শক্তিও বৃদ্ধি পায়। সেইসাথে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা ও দূর করে।
  • আপেল ওজন কমাতে সাহায্য করে। এমন অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত ওজনের কারণে জর্জরিত আবার শুধুমাত্র এই কারণে নানা রকম রোগ ও শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এমনকি ডায়াবেটিস, হাড়ের রোগ কত কিছুই না হয় তাই সেই সমস্ত রোগকে যদি বিদায় জানাতে চান তাহলে নিয়ম করে আপেল খান।

পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

পেয়ারা খেতে পছন্দ করেন না এমন ব্যক্তি হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেশি ফল হিসেবে এর বেশ সুনাম রয়েছে। এই ফল দেখতে সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু এবং এর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পেয়ারায় ৪টি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ, এবং ভিটামিন সি রয়েছে। একটি পেয়ারায় রয়েছে চারটি আপেল ও চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ।

এতে আছে প্রচুর পরিমাণ পানি, ফাইবার, ভিটামিন এ, বি, কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ। পেয়ারা ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। অনেকেই পেয়ারা মরিচ ও লবণ দিয়ে খেতে বেশি পছন্দ করেন। ছোট্ট এই ফলটিতে রয়েছে অবিশ্বাস্য যত অপকারিতা। চলুন জেনে নেয়া যাক পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা কি কি
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃপেয়ারাতেপ্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে । যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যে কোন ইনফেকশন থেকেও পেয়ারা শরীরে সুস্থ রাখে।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃপেয়ারাতে লাইকোপেন, কোয়ারকেটিন, ভিটামিন সি ও পলিফেনল আছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর এই এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে প্রোস্টেট ক্যান্সার কমাতে অনেক সাহায্য করে পেয়ারা। ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়।
  • ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃপেয়ারাতে ফাইবার ও কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় এটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। এর কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমে যায়।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃপেয়ারা শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বাড়াই। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করেঃপেয়ারা ট্রাইগ্লিসারাইড ও এলডিএল নামক খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। যার ফলে হার্টের বিভিন্ন সমস্যা অনেক কমে যায়। পেয়ারা এইচডিএল নামক কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াই যা হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করেঃযেহেতু পেয়ারা একটি ফাইবার জাতীয় ফল তাই এটি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। যাদের পায়খানা ঠিকমতো হয় না তারা পেয়ারা খেয়েই এর সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
  • দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃএই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যার দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও চোখের ছানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়।
  • গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতাঃএই ফলে উপস্থিত ফলিক এসিড গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজন। ফলিক এসিড গর্ভের বাচ্চার নার্ভাস সিস্টেমকে উন্নত করে। সেইসঙ্গে এটি বাচ্চাদের নিউরোলজিক ডিজঅর্ডার থেকে দূরে রাখে। 
পেয়ারায় ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন বি৯ থাকে। যা শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়ক। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ফলিক অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এটি স্পিনিয়া বিফিডার মতো নিউরাল টিউব ডিফেক্ট প্রতিরোধ করতে সহায়ক। গর্ভাবস্থায় পুরো পাকা পেয়ারা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  • খালি পেটে পেয়েরা খাওয়ার উপকারিতাঃপাইলস রোগে উপকারে আসে পেয়ারা। যেহেতু কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলসের প্রধান কারণ, তাই খালি পেটে পেয়ারা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় পেয়ারা আপনার ত্বকের জন্যও উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বলিরেখা আটকায়

লেখকের মন্তব্যঃ

প্রিয় পাঠক,উপরোক্ত আর্টিকেলটিতে বিভিন্ন ধরনের ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এমন সুস্বাদু ফল কার না খেতে ভালো লাগে এই ফলগুলো যেমন সুস্বাদু তেমনি অবিশ্বাস্য পুষ্টিগুণে ভরপুর। আজকের আর্টিকেলটিতে কোন ফলের উপকারিতা কি সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে ফল খাওয়ার উপর আগ্রহ আপনার বেড়েছে। শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ফলের গুরুত্ব অনেক। তবে চেষ্টা করবেন ফরমালিন মুক্ত ফল খেতে। তাহলেই প্রকৃত ভাবে উপকৃত হবেন। আশা করি পোস্টটি পড়ে উপলব্ধ ফলগুলোর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

যদি পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই এটি আপনার বন্ধুবান্ধব কিংবা পাড়া-প্রতিবেশীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে তারাও এই বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। আর যদি এই পোস্ট সম্পর্কে কোন মতামত প্রশ্ন কিংবা কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন। যাতে করে অন্যরাও উপকৃত হতে পারে।

আর এ ধরনের জ্ঞান-ধর্মী পোস্ট করতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। কারণ শুধুমাত্র ফলমূল নয় বরং বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক আর্টিকেল পোস্ট করে থাকি। সেই সাথে বিজ্ঞানমূলক আর্টিকেলও আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত প্রকাশিত হয়। উক্ত আর্টিকেলগুলো পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে শেষ করছি।

পরিশেষে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url