ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা সমূহ
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের বাংলাদেশের অষ্টম বিভাগীয় শহর ও কনিষ্ঠতম সিটি কর্পোরেশন। ময়মনসিংহ বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর। বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এটি ময়মনসিংহ জেলার প্রায় কেন্দ্রভাগে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত।চলুন জেনে নেওয়া যাক
ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা সমূহ সম্পর্কে।
১৯৭১-এর ২৫ মার্চে ঢাকা শহরে গণহত্যা শুরুর অব্যবহিত পরে ময়মনসিংহের সংগ্রামী জনতা খাগডহর তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প ঘেরাও করে এবং বাঙ্গালী ইপিআর সদস্যদের সহায়তায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা সমূহ সম্পর্কে।
ভূমিকাঃ
ময়মনসিংহ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। অবস্থানগত কারণে এটি বাংলাদেশের বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা। এই জেলা ছিল তৎকালীন ভারত উপ-মহাদেশের বৃহত্তম জেলা। এই ময়মনসিংহ জেলার আকার সময় সময় পরিবর্তিত হয়েছে।১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলা থেকে টাঙ্গাইল মহুকুমাকে পৃথক করে একটি জেলা উন্নীত করা হয়। ১৯৮০-এর দশকে আদি ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন মহকুমা যথা জামালপুর, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণাকে পৃথক পৃথক জেলায় উন্নীত করা হয়। এছাড়া জামালপুরের অন্তর্গত শেরপুরকেও একটি পৃথক জেলায় উন্নীত করা হয়।
এর আগে ব্রিটিশ আমলে ময়মনসিংহ জেলার কিছু কিছু অংশ সিলেট, ঢাকা, রংপুর ও পাবনা জেলার অঙ্গীভূত করা হয়েছিল। এই ভাবে ময়মনসিংহ জেলা যা কিনা ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ জেলা ছিল তার আকার ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসে।ময়মনসিংহ বিভাগে কয়টি জেলা ও উপজেলা রয়েছে
ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা সমূহ
ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ টি জেলা ও ৩৫ উপজেলা রয়েছে।ময়মনসিংহ বাংলাদেশের ৮ ম বিভাগ। জেলাগুলোর নাম হলঃ ময়মনসিংহ, জামালপুর,নেত্রকোনা ও শেরপুর।
ময়মনসিং জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে
ময়মনসিংহ জেলা ৩৩ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১৩টি উপজেলা, ১৪টি থানা, ১০টি পৌরসভা, ১৪৭টি ইউনিয়ন, ২১০১টি মৌজা, ২৭০৯টি গ্রাম ও ১১টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ- ময়মনসিংহ সদর ,
- ত্রিশাল , ভালুকা ,
- ফুলবাড়িয়া ,
- মুক্তাগাছা ,
- গফরগাঁও ,
- গৌরীপুর ,
- ঈশ্বরগঞ্জ ,
- নান্দাইল,
- তারাকান্দা ,
- ফুলপুর ,
- হালুয়াঘাট এবং
- ধোবাউড়া।
জামালপুর জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে
জামালপুর জেলা ৭টি উপজেলা, ৭টি থানা, ৮টি পৌরসভা, ৬৮টি ইউনিয়ন, ৮৪৪টি মৌজা, ১৩৪৬টি গ্রাম ও ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ- জামালপুর সদর,
- ইসলামপুর ,
- দেওয়ানগঞ্জ ,
- মাদারগঞ্জ ,
- মেলান্দহ ,
- সরিষাবাড়ী ,
- বকশীগঞ্জ ।
নেত্রকোনা জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে
নেত্রকোণা জেলা ১০টি উপজেলা, ১১টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৮৬টি ইউনিয়ন, ১৯৬৭টি মৌজা, ২২৯৯টি গ্রাম ও ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ- নেত্রকোনা সদর,
- পূর্বধলা,
- দুর্গাপুর ,
- বারহাট্ট ,
- আটপাড়া ,
- মদন ,
- কেন্দুয়া,
- মোহনগঞ্জ,
- কলমাকান্দা ,
- খালিয়াজুরী।
শেরপুর জেলায় কয়টি উপজেলা রয়েছে
শেরপুর জেলা ৫টি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা, ৫২টি ইউনিয়ন, ৪৫৮টি মৌজা, ৬৭৮টি গ্রাম ও ৩টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।।উপজেলা সমূহের নাম গুলো হলঃ- শেরপুর সদর ,
- নকলা ,
- ঝিনাইগাতী ,
- নালিতাবাড়ী ,
- শ্রীবরদী।
ময়মনসিংহ জেলার ইতিহাস
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রধান শহর এবং রাজধানী। ঢাকা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত, এটি উত্তর-মধ্য বাংলাদেশের একটি প্রধান আর্থিক কেন্দ্র এবং শিক্ষার কেন্দ্র। শহরটি ১ মে, ১৭৮৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দ্বারা গঠিত হয়েছিল।তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া১৯৭১-এর ২৫ মার্চে ঢাকা শহরে গণহত্যা শুরুর অব্যবহিত পরে ময়মনসিংহের সংগ্রামী জনতা খাগডহর তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প ঘেরাও করে এবং বাঙ্গালী ইপিআর সদস্যদের সহায়তায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
এ যুদ্ধে ইপিআর সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের ড্রাইভার পুত্র আবু তাহের মুকুল শাহাদাৎ বরণ করেন। মূপাকসেনাদের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলখানায় প্রেরণ করা হয়। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এক সকালে পুরাতন বিডিআর ভবনের ৩য় তলার শীর্ষে হাজার হাজার লোকের জয় বাংলা ধ্বনির মধ্যে বাংলাদেশের নকশা খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়।
ময়মনসিংহ জেলার অবস্থান
উত্তরে গারোপাহাড় ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে গাজীপুর জেলা, পূর্বে নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে শেরপুর, জামালপুর ও টাঙ্গাইল জেলা অবস্থিত।ময়মনসিংহ বাংলাদেশের ৮ম প্রশাসনিক বিভাগীয় সদর দপ্তর এবং১২তম সিটি কর্পোরেশন।ময়মনসিংহ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের সাথে সম্পর্কিত, নকশিকাঁথা নামক হস্তশিল্পের ডুয়েট এবং ময়মনসিংহ গীতিকা নামে একটি গ্রামীণ গীতিনাট্য। ময়মনসিংহ মেঘালয়ের একটি শহর তুরার কাছাকাছি এবং গোবরাকুড়া স্থলবন্দর থেকে প্রায় ৬৩ কিমি দূরে।
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের ষোলটি পুরানো জেলার মধ্যে একটি যা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১ মে ১৭৮৭ সালে গঠিত হয়েছিল।২২০ বছরেরও বেশি পুরানো হওয়ায় ময়মনসিংহের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে।
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের ষোলটি পুরানো জেলার মধ্যে একটি যা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১ মে ১৭৮৭ সালে গঠিত হয়েছিল।২২০ বছরেরও বেশি পুরানো হওয়ায় ময়মনসিংহের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে।
ময়মনসিংহ কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে
ময়মনসিংহ বিভাগে চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়মঞ্জুরি কমিশন শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্তির জন্য ক্লাস্টার পদ্ধতি চালু করেছে। এই ব্যবস্থা অনুযায়ী বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঁচটি ক্লাস্টারে সাজাতে হবে।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি; একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য, একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য এবং শেষটি সাধারণ স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য।
নিম্নলিখিত বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক:
নিম্নলিখিত বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্ক:
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়(BAU) প্রতিষ্ঠিত ১৯৬১ সাল :https://www.bau.edu.bd/
- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়(JKKNIU) প্রতিষ্ঠিত ২০০৬ সাল :https://jkkniu.edu.bd/
- শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (SHU)প্রতিষ্ঠিত২০১৮সাল
- বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(BSFMTU) প্রতিষ্ঠিত ২০০৭ সাল: https://bsfmstu.ac.bd/
ময়মনসিংহ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
ধান ও সবজি চাষ ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের অন্যতম পেশা। সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ আর বৈচিত্র্যপূর্ণ জনগোষ্ঠীর এক জনপদ এই জেলা। লোক সংস্কৃতি, লোক উৎসব, লোক সংগীত ও লোকগাঁথার দিক দিয়ে তীর্থস্থান ময়মনসিংহ। ময়মনসিংহ গীতিকা, দেওয়ানা মদিনা, চন্দ্রাবতী ও মহুয়ার জন্য বিখ্যাত এই অঞ্চল।ময়মনসিংহ জেলার নামকরনের ইতিহাস
ময়মনসিংহ জেলা গঠিত হয় ১৭৮৭ সালে। ময়মনসিংহ শহরের পূর্ব নাম ছিল নাসিরাবাদ। ঢাকা বিভাগের ১৭টি জেলার মধ্যে ময়মনসিংহ জেলার অবস্থান প্রথম। জেলার নাম ময়মনসিংহ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মাঝে ভিন্ন মত প্রচলিত আছে।আর ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাঁর পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ’র জন্য এ অঞ্চলে একটি নতুন রাজ্য গঠন করেছিলেন, সেই থেকেই নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি। সলিম যুগের উৎস হিসেবে নাসিরাবাদ, নামটিও আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কোথাও উল্লেখ করা হচ্ছে না।
১৭৭৯-তে প্রকাশিত রেনেল এর ম্যাপে মোমেসিং নামটি বর্তমান ’ময়মনসিংহ’ অঞ্চলকেই নির্দেশ করে। তার আগে আইন-ই-আকবরীতে ‘মিহমানশাহী’ এবং ‘মনমনিসিংহ’ সরকার বাজুহার পরগনা হিসাবে লিখিত আছে; যা বর্তমান ময়মনসিংহকেই ধরা যায়।
এসব বিবেচনায় বলা যায় সম্রাট আকবরের রাজত্ব কালের পূর্ব থেকেই ময়মনসিংহ নামটি প্রচলিত ছিলো। জেলা পত্তন কালে ময়মনসিংহ অঞ্চলের সমৃদ্ধ জমিদারগণ সরকারের কাছে জেলার নাম ময়মনসিংহ রাখার আবেদন করলে সরকার তা গ্রহণ করে নেন।
ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান
হাওর জঙ্গল মহিষের শিং, এই তিনে ময়মনসিং- প্রবাদ প্রবচনে এভাবেই পরিচয় করানো হতো এক সময় ভারতবর্ষের বৃহত্তম জেলা ময়মনসিংহকে। বাংলাদেশের সপ্তম বৃহত্তম শহর ময়মনসিংহ পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী নগরী। শিক্ষা নগরী হিসাবে সুপরিচিত ময়মনসিংহকে যুগে যুগে অসংখ্য গুণীজনেরা তাদের কাজের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করে গেছেন।আর সমৃদ্ধ এই জনপদে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শশী লজ, আলেকজান্ডার ক্যাসেল এবং জমিদার বাড়িসহ বেশকিছু দর্শনীয় ভ্রমণ স্থান। রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের অনেক জেলা থেকে অল্প সময়ে ময়মনসিংহ যাওয়া যায়।আর তাই একদিনে ভ্রমণের গন্তব্য হিসাবে এই জেলা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।ময়মনসিংহ জেলার ৩০টি দর্শনীয় স্থানসমূহ
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি
- আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ী
- বোটানিক্যাল গার্ডেন
- ময়না দ্বীপ
- আলেকজান্ডার ক্যাসেল
- শশী লজ
- সিলভার প্যালেস
- সার্কিট হাউজ
- গৌরীপুর লজ
- ময়মনসিংহ টাউন হল
- ব্রহ্মপুত্র নদ
- গারো পাহাড়
- ছালড়া শালবন
- অর্কিড বাগান
- সন্তোষপুর রাবার বাগান
- কাদিগড় জাতীয় উদ্যান
- কুমির প্রজনন কেন্দ্র
- তেপান্তর পিকনিক স্পট
- মেঘমাটি ভিলেজ রিসোর্ট
- বিপিন পার্ক
- আলাদীন'স পার্ক
- শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্ক
- শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা
- শহীদ আব্দুল জব্বার জাদুঘর
- ময়মনসিংহ জাদুঘর
- নজরুল স্মৃতি কেন্দ্র
- কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
- মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ি
- গৌরীপুর জমিদার বাড়ি
ময়মনসিংহ জেলার সংস্কৃতি
লোক সংস্কৃতি,লোক উৎসব, লোকসংগীত, যাত্রা পালা লোকগাঁথার দিক দিয়ে ময়মনসিংহ হলো তীর্থস্থান। ময়মনসিংহে একটি সংস্কৃতি ঐতিহ্য রয়েছে যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন সংগৃহীত ও সম্পাদিত মৈমনসিংহ গীতিকা ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় অনুদিত হয়ে বিশ্বসাহিত্যের মর্যাদা পেয়েছে। এই গীতিকায় মহুয়া, চন্দ্রাবতী, দেওয়ানা মদিনা ইত্যাদি পালার কথা কে না শুনেছে।
এছাড়াও রয়েছে মলুয়া, কমলা, দেওয়ান ভাবনা, দস্যু কেনারামের পালা, রূপবতী, কঙ্ক ও লীলা, কাজলরেখা ইত্যাদি পালা।
ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খাবার
- মুক্তাগাছার মণ্ডা
- জাকির মিয়ার টক জিলাপি
- কাঠকচুর বড়া
- চেপা-শুটকির পুলি ইত্যাদি।
ময়মনসিংহের বিখ্যাত ব্যক্তি
- আনন্দ মোহন বসুঃজন্ম ২৩শে সেপ্টেম্বর, ১৮৪৭ এবং মৃত্যু ২০শে আগস্ট, ১৯০৬, ময়মনসিংহ শহরে ময়মনসিংহ ইনস্টিটিউশন নামে বিদ্যালয় স্থাপন করেন (১৮৮৩), বর্তমানে আনন্দমোহন কলেজ (বাংলাদেশ)।ময়মনসিংহ জেলার জয়সিদ্ধি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন
- শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামজন্মঃ১৯২৫ সালে এবং মৃত্যু ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি।
- আবদুল জব্বারঃ জন্ম ১৯১৯ এবং মৃত্যু ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ তিনি হলেন মহান ভাষা আন্দোলনের অন্যতম বীর শহীদ ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
- শিল্পাচার্যজয়নুল আবেদিনঃজন্ম ২৯ ডিসেম্বর ১৯১৪, মৃত্যু ২৮ মে ১৯৭৬ ১৯৪৩ সালে অবিভক্ত বাংলার মন্বন্তরের আঁকা তার স্কেচসমূহ বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃস্টি করেন।
- ডক্টর জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাঃজন্ম ১০ জুলাই ১৯২০, মৃত্যু ২৭মার্চ ১৯৭১ জন্মস্থান ময়মনসিংহ সদর, ময়মনসিংহ শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তিবাদী ও প্রগতিশীল শিক্ষক ছিলেন
- নলিনীরঞ্জন সরকারঃজন্ম ১৮৮২, মৃত্যু ২৫ জানুয়ারি ১৯৫৩ নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার অদূরে সাজিউড়া নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।
- রফিক উদ্দিন ভূঞাঃজন্ম ২৫ জানুয়ারি ১৯২৬, মৃত্যু ১৯৯৪ জন্মস্থান মেরেঙ্গা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ তিনি ছিলেন ময়মনসিংহের অবিসংবাদিত নেতা। একাধিক বার জাতীয় সংসদ সদস্য
- মনোরঞ্জন ধরঃ জন্ম ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯০৪, মৃত্যু ১৯৮৬ জন্মস্থান মেরেঙ্গা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু মন্ত্রীসভার আইনমন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন
- মোস্তফা এম এ মতিনঃজন্ম ১ আগস্ট ১৯৩৪, মৃত্যু ২০০৪ জন্মস্থান সাতেঙ্গা, ভালুকা, ময়মনসিংহ আইনজীবী-রাজনীতিক ও সমাজসেবী
- শামসুল হুদা পাঁচবাগীঃজন্ম ১৮৬৯, মৃত্যু ৮ আক্টোবর ১৯৮৮ জন্মস্থান পাচবাগ, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ আইনজীবীরাজনীতিক ও সমাজসেবী
এছাড়াও আরো রয়েছেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী মিতালী মুখার্জী, চলচ্চিত্র অভিনেতা আরিফিন শুভ, বাংলাদেশের আলোচিত একজন সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব আনন্দকিশোর মজুমদার ,
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, এই তালিকায় আরো অনেকেই রয়েছেন। যা স্বল্প দৈর্ঘের তথ্য চিত্রে অর্ন্তভুক্ত করতে পারিনি।
ময়মনসিংহ জেলার প্রাকৃতিক সম্পদ
ময়মনসিংহ ব্রহ্মপূত্রের কোল ঘেঁষে বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ অঞ্চলের স্থাপনায় দেখা যায় প্রাচীন নির্মাণ শৈলীর ছোঁয়া আর মানুষের মধ্যে এগিয়ে যা্ওয়ার অদম্য স্পৃহা। অবারিত সবুজ আর বৈচিত্রময় ভৌগোলিক সৗন্দর্যের কারণে অঞ্চলটি দারুন দৃষ্টিনন্দন। ধান ও সবজি চাষ এ অঞ্চলের মানুষের অন্যতম পেশা।
তবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তত্বাবধানে এ অঞ্চলে বাড়ছে নতুন নতুন ফল ও ফসলের আবাদ। ময়মনসিংহ অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ হলো সাদা মাটি। নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুরে সাদা মাটির খনি যেন সৌন্দর্যে্র লীলাভূমি।
এখানকার চীনামাটি মূলত সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল। বিজয়পুরেই আছে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে বয়ে চলা দারুন চঞ্চলা নদী সোমেস্বরী। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সন্তোষপুরে আছে বিশাল রাবার বাগান। এই রাবার বাগানের সাথে জুড়ে আছে হাজারো মানুষের জীবিকা। বাণিজ্যিক দিক বিবেচনায় নিলে আনারস এখানকার গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফল।
এ অঞ্চলের আনারস দারুন রসালো আর মিষ্টি। ভৌগলিক সুবিধার জন্য মাছ চাষে বেশি আগ্রহ দেখা যায় এই অঞ্চলে। ত্রিশাল, ফুলপুর, ফুলবাড়ীয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর ও ভালুকায় মাছের খামার সবচেয়ে বেশি। সারাদেশের খুচরা বাজারগুলোর চালের যোগানের একটা বড় অংশ আসে এই অঞ্চল থেকে। শেরপুর সুগন্ধি চালের জন্য বিখ্যাত।
যার মধ্যে তুলশীমালা চালের সুনাম ও সমৃদ্ধি শতশত বছর আগের। ঐতিহ্যবাহী ‘সূচি শিল্প’ এগিয়ে নিতে ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলার ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দৃশ্যকে সূঁই-সুতার মাধ্যমে নকশি কাথাঁয় তুলে ধরেন জামালপুর এবং শেরপুর জেলার নারীরা।
একদিকে যেমন এখানকার নারীদের হাত ধরে্ এগিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি; কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও তার সহচর গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে অন্যদিকে নাকুগা্ঁও বন্দর অবদান রাখছে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে। তাই বৃহত্তর ময়মনসিংহ হতে পারে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের শক্ত এক স্তম্ভ।
লেখকের মন্তব্যঃ
প্রিয় পাঠক উপরুক্ত আর্টিকেলটিতে আমরা ময়মনসিং বিভাগের যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এখানে রয়েছে ময়মনসিং বিভাগের সকল জেলা উপজেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য। সেই সাথে আরও আলোচনা করার চেষ্টা করেছি ময়মনসিংহ বিভাগের ইতিহাস এখানকার সংস্কৃতি, বিখ্যাত খাবার, বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ ও আরো অন্যান্য বিষয়ের সম্পর্কে।আশা করি পোস্টটি পরে ময়মনসিং বিভাগের যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন। এ ধরনের বিষয়বলি থেকে বিভিন্ন ধরনের চাকরির পরীক্ষা কিংবা ভর্তি পরীক্ষাতেও প্রশ্ন আসতে পারে। সুতরাং এ সম্পর্কে যারা আমাদের জন্য অতীব জরুরী। আশা করি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন।
যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এটি আপনার বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন কিংবা প্রতিবেশিদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে তারাও এ বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারে। আর এ বিষয় সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন মতামত কিংবা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন।
আর এ ধরনের আর অন্যান্য বিভাগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এবং সেই সাথে জ্ঞানমূলক কিংবা বিজ্ঞানমূলক তথ্য সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হন সেক্ষেত্রে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। আগামী আর্টিকেলে আরো নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব। ততদিন ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। পরিশেষে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।
বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url