জসিম উদ্দিন কত সালে জন্ম গ্রহন করেন

কবি জসীমউদ্দীন হলেন বাংলাদেশের অন্যতম একজন বিখ্যাত কবি। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই পল্লীকবি জসীমউদ্দীন সম্পর্কে জানা উচিত। চলুন জেনে নেয়া যাক তার জন্ম ও সাহিত্য সম্পর্কে।
জসিম উদ্দিন কত সালে জন্ম গ্রহন করেন

ভুমিকা

জসীম উদ্দীন (জানুয়ারি ১, ১৯০৩ - মার্চ ১৩, ১৯৭৬) একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি। তিনি বাংলাদেশে 'পল্লী কবি' হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখা কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় অবদান। পুরো নাম জসীম উদ্দীন মোল্লা হলেও তিনি জসীম উদ্দীন নামেই পরিচিত। নকশী কাঁথার মাঠ কবির শ্রেষ্ঠ রচনা যা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

পল্লীকবি জসীমউদ্দিন আমাদের গ্রাম বাংলার কবি। গ্রাম বাংলারমানুষ,প্রকৃতি,লোকজীবন,লোকবিশ্বাস-সংস্কার প্রভৃতি নিয়ে তিনি কবিতা রচনা করেছেন। বৈষ্ণব পদকর্তা চণ্ডীদাসের মতো তিনি সহজ ভাবে সহজ সুরে কবিতা রচনা করেছিলেন, সেজন্য তার কবিতা পাঠকের কাছে এত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

বিশেষ করে তাঁর 'নক্সী কাঁথার মাঠ' পাঠক সমাজের মনের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে।

জসিম উদ্দিন কত সালে জন্ম গ্রহন করেন

তিনি ১৯০৩ সনের পহেলা জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার বাড়ি ছিলো একই জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। বাবার নাম আনসার উদ্দিন মোল্লা। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। মা আমিনা খাতুন ওরফে রাঙাছুট।

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের শিক্ষাজীবন

জসীম উদ্দীন ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার স্কুল, ও পরবর্তীতে ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে পড়ালেখা করেন। এখান থেকে তিনি তার প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৯২১ সনে উত্তীর্ন হন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এ. এবং এম. এ. শেষ করেন যথাক্রমে ১৯২৯ এবং ১৯৩১ সনে।

১৯৩৩ সনে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দীনেশ চন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে যোগ দেন। এরপর ১৯৩৮ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৯ সনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মান সূচক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেন।

কবি জসিম উদ্দিনের কর্মজীবন

১৯৩১ থেকে ১৯৩৭ পর্যন্ত, দীনেশচন্দ্র সেনের সাথে লোক সাহিত্য সংগ্রাহক হিসেবে জসীম উদ্দিন কাজ করেন।১৯৩৩ সনে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে যোগ দেন।১৯৩৮ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।

১৯৪৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগে যোগ দেন।১৯৬২ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে গেছেন।

জসিম উদ্দিন কীভাবে পল্লী কবি হলেন

গাঁয়ের লোকের দৃষ্টিতে গ্রাম্য জীবন এবং পরিবেশ-প্রকৃতি ফুটিয়ে তোলার জন্য জসীম উদ্দিন বিশেষভাবে পরিচিত। তার এই সুখ্যাতি তাকে পল্লি কবি উপাধি এনে দিয়েছে।
জসীম উদ্দিনের কাব্যগ্রন্থগুলি হল:
  • রাখালী' (১৯২৭),
  • নকসী কাঁথার মাঠ (১৯২৯),
  • 'ধানক্ষেত' (১৯৩১),
  • ' বালুচর' (১৯৩৪),
  • ' সোজন বাদিয়ার ঘাট' (১৯৩৪), 6)'রূপবতী' (১৯৪৬),
  • ' এক পয়সার বাঁশী (১৯৪৮),
  • 'মাটির কান্না' (১৯৫১),
  • 'সাকিনা' (১৯৫৯),
  • 'সুচয়নী' (১৯৬১),
  • 'মা যে জননী কান্দে' (১৯৬৩),
  • 'হলুদ বরণী' (১৯৬৬),
  • 'জলের লেখন' (১৯৬৯),
  • 'ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে' (১৯৭১),
  • 'মা গো জ্বালিয়ে রাখিস আলো (১৯৭৬) প্রভৃতি।
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত কল্লোল যুগ গ্রন্থে জসীমউদ্দীনের কবিতা সম্পর্কে বলেছেন, “ একেবারে সাদামাটা আত্মভোলা ছেলে এই জসিম উদ্দিন চুলে চিরুনি নেই, জামায় বোতাম নেই, বেশবাসে বিন্যাস নেই। হয়তো বা অভাবের চেয়েও ঔদাসীন্যই বেশি। সরল শ্যামলের প্রতিমূর্তি। যে গ্রাম তারই পরিবেশ তার ব্যক্তিত্বে, তার উপস্থিতিতে।

কোনো কারুকলায় কৃত্রিমতা নেই, নেই কোনো প্রসাধনের পারিপাট্য। একেবারে সোজাসুজি মর্মস্পর্শ করবার আকুলতা। কোনো ইজমে'র ছাঁচে ঢালাই করা নয় বলে তার কবিতা হয়তো জনতোষিণী নয়, কিন্তু মনোতোষিণী।"

এই উক্তি যথার্থ এই কারণে যে, কবি জসীমউদ্দীন পল্লী প্রকৃতির স্নিগ্ধ কমনীয় মাধুর্য এবং ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লোকজীবনের উপাদান দিয়ে তাঁর কাব্যজগৎ গড়ে তুলেছিলেন। জসীমউদ্দিন জীবনে যেমন ছিলেন আত্মভোলা, অগোছালো, তেমনি তাঁর শিল্পকলা ও অযত্নসম্ভূত এবং সহজ সরল।

অনায়াস সারল্য ও সহমর্মিতা তাঁর কবিদৃষ্টির দই প্রধান সম্পদ।তিনি সম্পূর্ণভাবে মাটির কাছাকাছি কবি। তাই তাঁর কাব্যে লেগে আছে মাটির গন্ধ।

জসীমউদ্দীনের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলো ছন্দে ছন্দে মনে রাখার কৌশল

“রঙ্গিলা নায়ের মা্ঝি” “হাসু” “রুপবতী” “সকিনা” ও “রাখালীকে” নিয়ে “বালুচরের” ধানক্ষেতের মধ্যে দিয়ে “সুজন বাদিয়ার ঘাটে” গিয়ে ছিল। সেখান থেকে “এক পয়সার বাঁশি” কিনে ফিরে আসার সময় “নকশী কাঁথার মাঠে” “মাটির কান্না দেখল”।

জসীম উদ্দিনের কাব্যগ্রন্থগুলির সংখিপ্ত পরিচিতি

“রাখালী”

কবি জসীমউদ্দিনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'রাখালী'। এই কাব্যের অন্যতম কবিতা হল 'পল্লীজননী', 'কবর' প্রভৃতি। 'কবর' কবিতাটি 'কল্লোল' পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর জসীমউদ্দীন পাঠকসমাজে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন।

কবিতাটির কয়েকটি পংক্তি উল্লেখযোগ্য,
এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে, তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
রাখালী'কাব্যগ্রন্থে কবি মেঠো সুরে গ্রামীণ জীবনের রাখালিয়া বাঁশির সুর শুনিয়েছেন আমাদের।
 তারাশঙ্কর যেমন মাটি ও মানুষের সম্পর্ককে তাঁর কথাসাহিত্যে প্রকাশ করেছেন তেমনি জসীমউদ্দিন তাঁর 'রাখালী' কাব্যগ্রন্থে মাটি ও মানুষ এবং গ্রামীণ জীবনের চালচিত্র অংকন করেছেন।

“নকসী কাঁথার মাঠ”

তাঁর 'নক্সী কাথার মাঠ' একটি প্রেমমূলক কাহিনি কাব্য।রূপাই ও সাজুর বিরহ- মিলনের কাহিনি এই কাব্যের মূল কথাবস্তু। এই কাব্যের কাহিনি হল, সাজুর স্বামী রূপাই একদিন ফেরার হল। সাজু স্বামীর ফিরে আসবার আশায় দিন গুণে আর একটি নক্সী কাথা সেলাই করে, কিন্তু স্বামী ফেরে না।

সাজুর মৃত্যু হল, মৃত্যুর পূর্বে সে বলে গেল, নক্সী কাঁথাখানি যেন তার বহুদিন পর গ্রামের লোক একদিন অবাক হয়ে দেখে।সাজুর কবরের পাশে সেই নক্সী কাঁথাখানি গায়ে জড়িয়ে একটি লোক মরে পড়ে আছে। সেই থেকে ঐ কাঁথার নামে সামনের মাঠটির নাম হল 'নক্সী কাঁথার মাঠ'। 'নক্সী কাঁথার মাঠ' তাই ঐ মাঠ ও মাঠের মানুষের কাব্য।

ঐ মাঠের বিবরণ দিতে গিয়ে কবি লিখেছেন,সোনার সীতারে হরেছে রাবণ, পল্লীর পথ পরে। মুঠি মুঠি ধানে গহনা তাহার পড়িয়াছে বুঝি ঝরে।এই কাব্যটি একটি শোকগাথা। কেননা রূপাই-সাজুর করুণ বিয়োগান্ত প্রেমকাহিনি এই কাব্যে অপরূপ রূপ লাভ করেছে।

বালুচর

তাঁর কাব্য 'বালুচর' রবীন্দ্রনাথের দ্বারাও প্রশংসিত হয়েছিল। কাব্যটিতে রয়েছে গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত প্রকৃতি ও পল্লী বাংলার ছবি। যেমন, কাল সে আসিবে, মুখখানি তার নতুন চরের মত চখা আর চখি নরম ডানায় মুছায়ে দিয়েছে কত।

ধানক্ষেত

তাঁর পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ 'ধানক্ষেত'। এই কাব্যে রয়েছে ছাব্বিশটি কবিতা। এই কবিতাগুলির মধ্যে গ্রাম বাংলার সুখ-দুঃখ ও প্রাকৃতিক রূপ চিত্রিত শিশির তাহারে মতির মালায় সাজায়ে সারাটি রাতি, জোনাকীরা তার পাতায় পাতায় দোলায় তারার বাতি।

সোজন বাদিয়ার ঘাট

জসীমউদ্দিনের আর একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ হল 'সোজন বাদিয়ার ঘাট"। কবি নিজেই এই কাব্যটির পরিচয় প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "দুটো নর-নারীর দাগহীন প্রেম ভালোবাসা কীভাবে দুটো ভিন্ন সমাজের নানা প্রতিকূল অবস্থায় বিষের পাহাড় গড়ে তুলতে পারে-এরই বেদনাবিধুর চিত্র

এঁকেছি 'সোজন বাদিয়ার ঘাট' কাব্যে।" সোজন ও দুলীর প্রেমকাহিনি এইকাব্যের মূল কথাবস্তু। প্রেম সম্পর্কের সহজ স্বাভাবিক রূপের প্রকাশে এই কাব্য পাঠকের কাছে আকর্ষণীয়। বর্ণনার মধ্যে রয়েছে স্বতঃস্ফূর্ততা, সোজনের সাথে তার ভারি ভাব, দুলীর ইচ্ছে করে, সোজনেরে সে যে লুকাইয়া রাখে সিঁদুর কৌটা ভরে।

আঁচল খানিরে টানিয়া টানিয়া বড় যদি করা যেত।সোজনেরে সে যে লুকাইয়া রাখিত কেহ নাহি খুঁজে পেত।

শিশুদের জন্য এবং শিশুমনস্তত্ত্বকে রূপ দেবার জন্য কবি কয়েকটি কাব্য রচনা করেছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল 'হাসু', 'এক পয়সার বাঁশী'। শান্তিনিকেতনের আশ্রমকন্যা হাসুকে কেন্দ্র করে 'হাসু' কাব্যটি রচিত। এই কাব্যে শিশুমনের আনন্দ-উল্লাস, অভিযোগ-অভিমান, কৌতুকময়তা প্রভৃতি স্বভাব বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়েছে। যেমন,

তাহলে কি লক্ষ্মীরা সব, মাঝে মাঝে খবর নিও কেমন থাকে বিড়াল ছানা লিখে আমায় পত্র দিও। কুকুর ছানা ঘুমায় রাতে? দুষ্টু ইঁদুর পালায় কোথা, ক'বার কাঁদেন ব্যাঙের পিসীঃ লিখো আমায় সকল কথা।শিশুমনের কথা ভেবে শিশুদের আনন্দ দেবার জন্য 'এক পয়সার বাণী' কাব্য রচিত হলেও সমকালীন সমাজের অবিচার ও শোষণের বিরুদ্ধে কবি সোচ্চার ছিলেন। তাই লিখেছেন,

লক্ষ যুগের অত্যাচারের শোধ লইতে সকল মারের তোমার মুখে বাজবে বাঁশী অগ্নি শিখায় জ্বলে।তাঁর অন্যান্য কাব্যগুলি ততটা উল্লেখযোগ্য নয়। তবে 'হলুদবরণী'-র রোমানি সৌন্দর্য 'জলের লেখন' কাব্যের প্রেম ও সৌন্দর্যলোেক, 'মা গো জ্বালিয়ে রাখিস আলো’ কাব্যে গ্রামীন লোকসংস্কৃতির পরিচয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

আসলে জসীমদ্দীন আধুনিক কাব্যের ধারায় উল্লেখযোগ্য এই কারনে যে তিনি কল্লোল গোষ্টী ও রনীন্দ্রনাথ এই উভয় প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে সহজ সরল মেঠো সুরে পল্লী বাংলার প্রকৃতি ও সমাজজীবনকে উপলব্ধী করেছেন।আর সেই উপলব্ধী প্রকাশও ঘটেছে আঞ্চলিক ভাষায়। এই জন্যয় তার কবিতা আমাদের আর্কষন করে।

জসীম উদ্দিনের নাটক গুলো কি কি

পদ্মাপার,
বেদের মেয়ে,
মধুমালা,
পল্লীবধূ,
গ্রামের মেয়ে,
ওগো পুস্পধনু,
আসমান সিংহ।

জসীম উদ্দিনের আত্মকথা

যাদের দেখেছি ((১৯৫১)
ঠাকুর বাড়ির আঙ্গিনায় (১৯৬১)
জীবন কথা ( ১৯৬৪)
স্মৃতিপট (১৯৬৪)
স্মরণের সরণী বাহি (১৯৭৮)

জসীম উদ্দিনের ভ্রমণ কাহিনী

চলে মুসাফির (১৯৫২)
হলদে পরির দেশে ( ১৯৬৭)
যে দেশে মানুষ বড় (১৯৬৮)
জার্মানীর শহরে বন্দরে (১৯৭৫)

জসীম উদ্দিনের উপন্যাস কয়টি ও কি কি

জসীম উদ্দীন তার জিবনে একটি উপন্যাস রচনা করেছেন। উপন্যাসের নাম হলো “বোবা কাহিনী”।এই উপন্যাস টি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়।

কবি জসীম উদ্দিনের বিখ্যাত উক্তি

  • চলে মুসাফির গাহি, এই জীবনে তার ব্যথা আছে ব্যথার
  • এই গাঁয়ের এক চাষার ছেলে লম্বা মাথার চুল, কালো মুখেই কালো ভ্রমর কিসের রঙিন ফুল।।
  • একদিন মোরা ভুলে যাব তোরে এই মায়ার দেশ পরে, কেউ কারো স্মৃতি চিরদিন ভরি রাখিতে পারে না ধরে।
  • আমাদের খেলা জমে না যে ভাই! তোর সেই আদর ছাড়া, আজ মনে হয় কেউ নাহি জানে হেন মমতার ধারা।
  • শিয়রের কাছে নিব নবু দীপ ঘুরিয়া ঘুরিয়া জ্বলে, তারি সাথে সাথে বিরহী মায়ের একেলা পরাণ দোলে।।
  • গভীর রাতে ভাটীর সুরে বাঁশি তাহার ফেরে উদাস, তারি সাথে কেঁপে কেঁপে কাঁদে রাতের কালো বাতাস।
  • ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিছে ঘন আবিরের রাগে অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।
  • বাজায় রুপাই বাঁশিটি বাজায় মনের মতন করে, যে ব্যথা বুকে ধরতে পারেনি সে ব্যথা বাঁশীতে ঝরে।
  • মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি মাটিতে মিশায়ে বুক, আয়- আয় দাদু গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।
  • তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি, যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।
  • তোমারে যা দেছি, অপরে তা যবে জোর করে চাবে কি হবে উপায়!
  • মন সেতো নহে কুমড়ার ফালি যাহারে তাহারে কাটিয়া বিলান যায়।
  • নিজেরি স্বার্থ দেখিলে আজকে বুঝিলে না এই অসহায় বালিকার, দীর্ঘ জীবনে কি করে কাটিবে তাহারি সঙ্গে, কিছু নাহি জানি যার।
  • মনে যে রাখিবো, ভেঙে গেছে সে যে কভু নারে লাগে জোড়া।।কপালে রাখিবো! এই ধরার গাঁয়ে আমার কপাল পোঁড়া;
  • নয়নে রাখিবো! হায়রে অভাগা, ভাসিয়া যাইবে জলে;।বুকে যে তোমারে রাখিবো বন্ধু, বুকেতে শ্মশান জ্বলে।
  •  পরান বন্ধু! তুমি এলে মোর ঘরে আমিতো জানিনে কি করে যে আজ তোমারে আদর করে!
  • যে মোরে করিল পথের বিবাগী,- পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি।
  • আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা, আমি বাঁধি তার ঘর; আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
  • যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ আমি দিই তারে বুকভরা গান।
  • মাঠের রাখাল, বেদনা তাহার আমরা কি এত বুঝি? মিছেই মোদের সুখ-দুখ দিয়ে তার সুখ-দুঃখ খুঁজি।

জসীম উদ্দিন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

বাংলার কবি সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম যা চাকরী পরীক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাবলী –(বিসিএস + অন্যান্য চাকুরী)
  • জসীমউদ্দীনের "নিমন্ত্রণ' কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত? উঃ মাত্রাবৃত্ত।
  • দীনবন্ধু মিত্রের 'নীলদর্পণ' নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় –উঃ ঢাকা।
  • বোবা কাহিনী উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়-উঃ ১৯৬৪ সালে।
  • কোনটি জসিম উদদীন এর কাব্যগ্রন্থ?উঃ রাখালী , ধানখেত , বালুচর ।
  • “চলে মুসাফির “ কার ভ্রমণ কাহিনী?উঃ জসিম উদ্দিন।
  • জসীমউদ্দিনের ‘আসমানী’ কবিতাটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত?উঃ এক পয়সার বাঁশি।
  • কোনটি জসীমউদ্‌দীনের রচনা?উঃ ঠাকুরবাড়ির আঙিনা ।
  • জসীম উদ্দীনের রচনা কোনটি?উঃ যাদের দেখেছি ।
  • কোনটি জসীম উদ্দীনের নাটক?উঃ বেদের মেয়ে ।
  • জসীমউদ্‌দীনের 'কবর' কবিতা কোন পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় ?উঃ কল্লোল ।
  • জসীমউদ্‌দীনের কবর কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত ?উঃ মাত্রাবৃত্ত ।
  • জসীম উদ্‌দীনের কাব্য কোনটি ?উঃ মা যে জননী কান্দে ।
  • জসীমউদ্‌দীন রচিত শিশুতোষ কাব্য-উঃ এক পয়সার বাঁশী ।
  • কবি জসীমউদদীনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ কোনটি ?উঃ রাখালী ।
  • কবি জসীমউদদীনের জীবনকাল-উঃ ১৯০৩ - ১৯৭৬ ।
  • কোনটি জসীমউদ্দিনের লেখা উপন্যাস ?উঃ বোবা কাহিনী।
  • জসীমউদ্দিনের কোন কাব্যগ্রন্থ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে?উঃ নকশি কাঁথার মাঠ
  • ‘কবর’ কবিতাটি জসীমউদ্দিনের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?উঃ রাখালী।
  • ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ এর রচয়িতা কে?উঃ জসীমউদ্দিন।
  • তাম্বুলখানা গ্রামে কোন কবি জন্ম গ্রহন করেন?উঃ জসীম উদ্দীন
  • কবি জসিমউদ্দিন রচতি কাব্য কোনটি?উঃ রাখালী
  • ‘কবর’ কবিতায় কতটি পঙক্তি রয়েছে?উঃ ১১৮টি
  • জসীম উদ্দীনের শ্রেষ্ঠকাহিনীকাব্য কোনটি?উঃ নক্সী কাঁথার মাঠ
  • ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ বইয়ের লেখক কে?উঃ কবি জসীম উদ্দীন
  • "The filed of embroidered quilt" : কাব্যটি কবি জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যের ইংরেজী অনুবাদ?উঃ নকশী কাঁথার মাঠ
  • ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ এর রচয়িতা কে?উঃ জসীম উদ্দীন
  • ‘রঙ্গিলা নায়ের মাঝি’ এর লেখক হলেন-উঃ জসীমউদ্দীন
  • জসীমউদ্দীনের নাটক-উঃ বেদের মেয়ে
  • কোন কবির নামানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একট ছাত্রাবাসের নামকরণ হয়েছে?উঃ জসীম উদ্দীন

জসিম উদ্দিন কবে মৃত্যুবরন গ্রহন করেন

তিনি ১৩ মার্চ ১৯৭৬ সনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে তাঁর নিজ গ্রাম গোবিন্দপুরে দাফন করা হয়।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক উপলক্ষে আর্টিকেলটিতে পল্লী কবি জসীম উদ্দীন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। উক্ত আর্টিকেলটিতে পল্লী কবি জসীম উদ্দীন সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু তিনি আমাদের জাতীয় কবি তাই দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তার সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী।

কারণ বাংলায় তার অবদান অনস্বীকার্য। এর সাথে এই আর্টিকেল কবির জন্ম-মৃত্যু, শৈশবকাল, যৌবন কাল, শিক্ষা জীবন, তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস , ছোট গল্প এবং তার বিখ্যাত যত বাণী রয়েছে সেই বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এখানে চেষ্টা করা হয়েছে যথাসম্ভব সর্বোচ্চ সঠিক তথ্য প্রদানের। আশা করি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন।

যদি পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন যাতে করে তারাও আমাদের এই বিখ্যাত কবির সম্পর্কে আরো পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারে। সেই সাথে আরো অন্যান্য বিখ্যাত কবিদের সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করতে পারেন।

আর এই পোস্ট সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন মতামত কিংবা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। যাতে করে আপনার মাধ্যমে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। পরিশেষে পোস্টটি সম্পন্ন পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url