রেডিও কে আবিষ্কার করেন
রেডিও হল তারবিহীন যোগাযোগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আপনারা কোন কিছু জানতে বা মনোরঞ্জনের জন্য অনেকেই রেডিও ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন এই রেডিও কে কবে এবং কিভাবে আবিষ্কার করেছিলেন ?চলন জেনে নেয়া যাক
ভুমিকা
বর্তমানে আমরা মনরঞ্জনের জন্য টিভি দেখি কিন্তু আজ থেকে কয়েক দশক আগে যখন টিভির প্রচলন এত বেশি ছিল না, তখন কিন্তু আমাদের মনরঞ্জনের একটা উৎস ছিল রেডিও। খবর, গান বা কোন নাটক এগুল শোনার জন্য রেডিও সেই সময়ে খুবই জনপ্রিয় ছিল। তখনকার দিনে গ্রামের মানুষরা এক জোট হয়ে এই রেডিও প্রগ্রাম শুনত।তবে মাঝে টিভি আর স্মার্টফোন আসার পর রেডিও ব্যাবহার কিছু কমে গেলেও বর্তমানে স্মার্ট ফোন এমনকি গাড়িতেও রেডিওর ব্যবস্থা আছে। যার ফলে একশো বছর পার হয়ে গেলেও রেডিও নিয়ে মানুষের আবেগ সেই একইরকম রয়ে গেছে।
রেডিও কে আবিষ্কার করেন
রেডিও আবিষ্কার করেন ইতালীয় বিজ্ঞানী গুগলীয়েলমি মার্কনি ।১৯০৯ সালে মার্কনী তার রেডিও যন্ত্র আবিষ্কারের জন্য নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন।আরো পড়ুনঃ ক্যামেরা কে আবিষ্কার করেন
রেডিও আবিষ্কারের ইতিহাস
কোন জিনিসের আবিষ্কার কখনো একদিনে কিংবা হঠাৎ করে সম্ভব নয় । প্রত্যেকটা আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের ত্যাগ ও নিরলস পরিশ্রম। রেডিও আবিষ্কার ও তেমনি একদিন হয়নি। রেডিওর মাধ্যমে যে পদ্ধতিতে বার্তা পাঠানো হয় তাকে বলা হয় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েব। এটি এক ধরনের চুম্বকীয় তরঙ্গ গুণ যা খুব সহজেই একটি বস্তুকে ভেদ করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। ১৮৮০ সালে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হেনরি রুডলফ বিজ্ঞানী আবার কেরে প্রথমবার এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ আবিষ্কার করেন।যা ছিল রেডিও আবিষ্কারের দিকে প্রথম পদক্ষেপ।
তিনি লক্ষ্য করেন যে এই তরঙ্গ বিভিন্ন বস্তুকে ভেদ করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় খুব সহজে চলে যেতে পারে। তখন তিনি ভাবেন যদি কোন উপায়ে এই তরঙ্গের মাধ্যমে কোন বার্তা প্রেরণ করা যায় আর সেই বার তাকে গ্রহণ করা যায় তাহলে মানুষের জীবনে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বিপুল বিপ্লবের সূচনা হবে।
তখন থেকেই মূলত তিনি রেডিও আবিষ্কারের চেষ্টা শুরু করে দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি তার আবিষ্কার কে বেশি দূরে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। তার মৃত্যুর পর তার সহযোগী বিজ্ঞানীরা হেনরি রুডলফের আবিষ্কৃত চুম্বকীয় তরঙ্গ এবং রেডিও আবিষ্কার করতে গিয়ে তিনি যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তা নিয়ে একটি বই বের করেন।
যাতে পরবর্তীকালে যেসব বিজ্ঞানীরা চৌম্বকীয় তরঙ্গ নিয়ে কাজ করবেন তাদের যেন অসুবিধা না হয়। এরপর ভারতের একজন মহান বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানী হেনরি রুডলফের চৌম্বকীয় তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তার আবিষ্কারের লক্ষ্য ছিল কিভাবে এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েব কে কাজে লাগানো যায়।
কিছুদিন পর ১৮৯০ সালে জগদীশচন্দ্র বসু একটি বিজ্ঞানের প্রদর্শনীতে এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েব এর সাহায্যে কিছুটা দূরত্বে থাকা একটি যন্ত্র যার মধ্যে যার মধ্যে একটা ঘন্টা ছিল তা তিনি বাজিয়ে দেখান। আর এটা সেই সময় বিজ্ঞানী মহলে যথেষ্ট আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল।
কারণ কোন প্রকার তাদের সংযোগ ছাড়াই এভাবে যে সংকেত পাঠানো যেতে পারে তা একেবারে কল্পনা্তীত ছিল। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তার এই আবিষ্কার কে আরো উন্নত মানের বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। অন্যদিকে আরেক ইংরেজ বিজ্ঞানী যার নাম ছিল গুগলীয়েলমি মার্কনি।
তিনিও এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েব অর্থাৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ নিয়ে কাজ করছিলেন। তার আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিল এই তরঙ্গেকে কাজে লাগিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বার্তা প্রেরণ করা। একদিন মার ফোনে যখন তার ল্যাবরেটরীতে কাজ করছিল তখন তিনি তার পাশে থাকা একটি যন্ত্রকে প্রেস করতেই দূরে থাকা একটি যন্ত্র বেজে ওঠে।
এরপর মার্কনী এই যন্ত্রটিকে আরো আপগ্রেড করেন। এরপর তিনিও একদিন একটি ছোট পাহাড়ের কাছে যান এই যন্ত্র নিয়ে। পাহাড়ের একপাশে তিনি ছিলেন আর অন্য পাশে ছিল তার ভাই। মার্কনী যখন রেডিও যন্ত্রের মাধ্যমে পাহাড়ের এপাস থেকে সিগনাল পাঠান তখন অন্য পাশ থেকে তার ভাইয়ের রিসিভারের মাধ্যমে সেই সিগন্যাল রিসিভ করে নেয়।
আর এটা দেখে তারা দুজনেই খুব খুশি হয়ে যান। এরপর থেকে মার কনে তার বেতার যন্ত্র বিভিন্ন প্রদর্শনীতে নিয়ে যান। আর তার আবিষ্কার দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। তবে এখনো এই আবিষ্কার সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য প্রস্তুত করা হয়নি। ১৮৯৭ সালে মার্কনী প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে এই সংকেত পাঠান।
আর ১৯০১ সালে তিনি তার এই যন্ত্রের মাধ্যমে আটলান্টিক মহাসাগর পার করে আমেরিকার যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য পাঠান। গোটা ইউরোপ জুড়ে তখন মার্কনের জয়জয় করা হচ্ছিল। ১৯০৯ সালে মার্কনী তার রেডিও যন্ত্র আবিষ্কারের জন্য নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন। তবে মার্কনির আবিষ্কারে একটি সমস্যা ছিল।
কারণ এই যন্ত্রের মাধ্যমে শুধুমাত্র একজন গ্রাহক বা একজন ব্যক্তির কাছে তথ্য পাঠানো যেত। এই সমস্যার সমাধান বের করেন একজন কানাডিয়ান বিজ্ঞানী রেজিনাল্ড ফেসেনডেন (reginald fessenden)।তিনি মার্কনের এই রেডিওকে আরো উন্নতমানের তৈরি করেন।
এরপর তিনি ১৯০৬ সালের২৪ শে সেপ্টেম্বর এই রেডিওর সামনে বসে বেহালা বাজান। আর তার তৈরি যন্ত্রের মাধ্যমে সেই সময় আটলান্টিক মহাসাগরে থাকা সমস্ত জাহাজের রেডিওতে সেই বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ শোনা যায়। আর এটি ছিল রেডিওতে হওয়া প্রথম ব্রডকাস্ট, যা একের অধিক ব্যক্তিরা একই সময় শুনতে পেয়েছিলেন।
তবে রেডিও কোন সাধারণ মানুষের জন্য ব্যবহার করা হতো না, কারণ রেডিও তখন ব্যবহার করা হতো বেশিরভাগ নৌ সেনাদের জন্য , বা গভীর সমুদ্রে থাকা কোনো জাহাজের জন্য। এখানে আপনাদের জানিয়ে রাখি ১৯১২ সালের টাইটানিক জাহাজের দুর্ঘটনার সময় এই রেডিওর মাধ্যমেই কাছে থাকা একটি জাহাজকে সংকেত পাঠানো হয়েছিল।
যার কারণে বহু মানুষের জীবন বেঁচে গিয়েছিল। আর শুধুমাত্র টাইটানিক নয় সে সময় বহু দুর্ঘটনার হাত থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে রেডিও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ১৯১৪ সালে যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন সেনাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাঠানোর জন্য রেডিওর ব্যবহার করা হতো।
সেই সময় যাতে সংকেত পাঠাতে কোন রকম অসুবিধা না হয় এই কারণে সাধারণ নাগরিকদের রেডিও ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
বিশ্বের প্রথম রেডিও স্টেশন কে স্থাপন করেন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে ১৯২০ সালে একজন প্রাক্তন আমেরিকান নেভি অফিসার ফ্রাঙ্ক কোনার্ড বিশ্বের প্রথম রেডিও স্টেশন স্থাপনা করেন। আর এরপর থেকে রেডিও সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।শুরুর দিকে কোন ব্যক্তি যদি তার বাড়িতে রেডিও রাখতে চাইতো তবে তার থেকে ১০ পাউন্ডের ট্যাক্স নেওয়া হতো। তবে পরে রেডিওর ব্যবহার বাড়তে থাকলে এই ট্যাক্স ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশে কবে রেডিও চালু হয়
১৯৩৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর পুরান ঢাকায় রাস্ট্রীর মালিকানার অধীনে "বাংলাদেশ বেতার" নামে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশে রেডিও চালু করা করা হয়।ভারতে কবে প্রথম রেডিও আসে
ভারতে সর্বপ্রথম রেডিও আসে ১৯২৪ সালে। সেসময় মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রথম রেডিও নিয়ে আসা হয়।১৯২৭ সালে কিছু ব্যবসায়ী মিলে একটি রেডিও স্টেশন স্থাপনা করেন। আর বোম্বে এবং কলকাতায় রেডিও ব্রডকাস্ট শুরু করে দেন। ১৯৩২ সালে ব্রিটিশ সরকার এই কোম্পানিকে নিজেদের দখলে করে নেয়।আর তখন এই কোম্পানির নামকরণ করা হয় ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং সার্ভিস। ১৯৩৭ সালে এ কোম্পানির নাম বদলে আবার “অল ইন্ডিয়া রেডিও” রাখা হয়,যা স্বাধীনতার পরে আকাশবাণী নামে পরিচিত হয়। স্বাধীনতার পর থেকে রেডিওর মাধ্যমে হওয়া সম্প্রচার একটি রাষ্ট্রীয় সেবার মধ্যে ধরা হয়।
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি রেডিও ভারতের স্বাধীনতায় রেডিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। গান্ধীজী রেডিওর মাধ্যমে ১৯৪২ সালে “ভারত ছাড়” এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন।
বর্তমানে এই রেডিও ওয়েভকে কাজে লাগিয়ে বহু উন্নত মানের যোগাযোগের যন্ত্র নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে মানুষের জীবন আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে এই রেডিও ওয়েভকে কাজে লাগিয়ে বহু উন্নত মানের যোগাযোগের যন্ত্র নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে মানুষের জীবন আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে।
ক্যামেরা কে আবিষ্কার করেন
প্রথম ক্যামেরা আবিষ্কার করেন 'কোডাক' কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা জর্জ ইস্টম্যান।বিশ্বের প্রথম ক্যামেরার নাম কি
বিশ্বের প্রথম ক্যামেরার নাম হলো ‘কোডাক’। ১৮৮৫ সালে জর্জ ইস্ট ম্যান তার প্রথম ক্যামেরা ‘কোডাক’ এর জন্য পেপার ফিল্ম উৎপাদন করেন। বাণিজ্যিকভাবে এটিই ছিল বিক্রির জন্য তৈরি প্রথম ক্যামেরা। এরপরে ১৯৪৮ সালে প্রথম আবিষ্কৃত হয় পোলারয়েড ক্যামেরা, যা দ্বারা মাত্র এক মিনিটে ছবিকে নেগেটিভ ইমেজ থেকে পজেটিভ ইমেজে রূপান্তর করা সম্ভব হয়।ক্যামেরা আবিষ্কারের ইতিহাস
৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে একজন ইরাকি বিজ্ঞানী যার নাম ছিল আল হাসেন, তিনি একটি নতুন ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করেন যার নাম দেন ক্যামেরা অফ স্কুরা। আল হাসেন দেখেন যদি একটি অন্ধকার ঘরের দেয়ালে একটি ছিদ্র করে দেওয়া হয় তাহলে সেই ছিদ্র দিয়ে সেই ঘরটির অন্যপাশের দেয়ালে বাহিরের কোন জিনিসের ছবি এসে পড়ে।তখন তিনি এরকম অন্ধকার ঘরের নাম রাখেন “ক্যামেরা অফ স্কুরা”যার বাংলা অর্থ হলো অন্ধকার ঘর। বলা হয় এই ক্যামেরা অফ স্কুরার ধারণার উপর ভিত্তি করে বর্তমান ক্যামেরা তৈরি হয়েছে। এরপর ১৪৫২ সালে মহান বৈজ্ঞানিক লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এই ক্যামেরা অফ স্কুরার ব্যবহার করে পেন্টিং করেন।
আর এরপর থেকে ক্যামেরা অফ স্কুরা পেন্টিং এর কাজে ব্যবহৃত হতে থাকে। এর সাহায্যে যে ব্যক্তি বা বস্তুর পেইন্টিং করা হতো তা খুবই নিখুঁত হতো। তবে ক্যামেরা অফ স্কুরাতে একটু সমস্যা ছিল। কারণ এতে যে ছবির তৈরি হতো তা উল্টো ছিল। এরপর কয়েকজন চিত্রশিল্পী ক্যামেরা অফ স্কুরাতে একটি কাচের ব্যবহার করেন এবং ছবিটিকে সোজা বানান।
এরপর ১৮২৬ সালে জোসেফ নাইস্ফল নিপ্সি দেখেন সিলভার ক্লোরাইডের ওপর যখন আলো পড়ে তখন সেটি ধীরে ধীরে কালো হতে শুরু করে। তখন জোসেফ নাইস্ফল নিপ্সি ক্যামেরা অফ স্কুরার আকার ছোট করে বাক্সের আকারে নিয়ে আসেন, আর এই বাক্সের নাম রাখেন “পিন হোল ক্যামেরা”।
এরপর তিনি সিলভার ক্লোরাইডের একটি মিশ্রণ নিয়ে একটি কাগজে তার প্রলেপ লাগিয়ে দেন। আর এই কাগজটিকে তিনি পিন হোল ক্যামেরার ভিতরে লাগিয়ে দেন। তারপর বেশ কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর তিনি যখন সেই কাগজ থেকে বাইরে বের করেন তখন দেখেন বাইরের দৃশ্যের মত হুবহু একটি সাদা কালো ছবি সেই কাগজে তৈরি হয়েছে।
আর এভাবেই বিশ্বের প্রথম ক্যামেরা আবিষ্কার করেন জোসেফ নাইস্ফল নিপ্সি, যেখানে কোন ছবি পেইন্টারের বদলে মেশিনের মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল। আর এই কারণেই জোসেফ নাইস্ফল নিপ্সিকে ফটোগ্রাফির জনক বলা হয়। তবে জোসেফ নাইস্ফল নিপ্সির তৈরিকৃত ক্যামেরার দুটি সমস্যা ছিল।
প্রথমত সময়, এই ক্যামেরা দিয়ে একটি ছবি তুলতে প্রায় আট ঘণ্টা সময় লাগতো আর তাই এই ক্যামেরা দিয়ে যদি কেউ ছবি তুলতে চাই সেক্ষেত্রে তাকে টানা ৮ ঘণ্টা একই রকম ভাবে ক্যামেরার সামনে বসে থাকতে হবে। আর দ্বিতীয় সমস্যা ছিল এই ক্যামেরা থেকে তোলা ছবি খুব তাড়াতাড়ি অস্পষ্ট হয়ে যেত।
ছবির কাগজটি বাইরে বের করলে তার ওপরে সরাসরি আলো পড়তো, আর সিলভার ক্লোরাইড আলোর সাথে বিক্রিয়া করত। তখন এই সমস্যা দূর করতে জোসেফ নাইস্ফল এবং তার সহযোগী বিজ্ঞানী লুইস দুজনে মিলে একটি উপায় বের করেন। তারা কাগজে সিলভার ক্লোরাইডের বদলে বিটুমিন নামক একটি পদার্থের ব্যবহার করেন।
এতে ছবির অস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর হয় ঠিকই কিন্তু এখনো ছবি তোলার জন্য ৮ ঘন্টা সময় লাগতো। আর এই কারণে আগেকার দিনের ছবিতে থাকা ব্যক্তিরা হাসতো না। কারণ তাদেরকে একনাগাড়ে আট ঘন্টা বসে থাকতে হতো, এমনকি তারা নড়াচড়া করতে পারতো না।
তখন এই দুজন বিজ্ঞানী বিটুমিনের বদলে পারদের ব্যবহার করেন। তখনই ছবি তোলার সময় ৮ ঘন্টা থেকে ৩০ মিনিটে গিয়ে দাঁড়ায়। এরপরে “পিন হোল ক্যামেরা” বিক্রি শুরু হয়। তখন একজন সাধারণ মানুষ চাইলেই ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে পারতো।
পৃথিবীর প্রথম ক্যামেরা কোম্পানির নাম কি
১৮৮৮ সালে নিউইয়র্কের একজন বিজনেসম্যান জর্জ ইস্টম্যান একটি ড্রাই প্লেট আবিষ্কার করেন যার সাহায্যে তিনি একটি মজবুত ফটো ফিল্ম বানান। এরপর তিনি ১৮৮৯ সালে কোডাক নামে একটি ক্যামেরা কোম্পানি খুলেন। ১৯০০ সালের দিকে কোডাক কোম্পানি তাদের ব্রাউনি (Brownie) মডেলের ক্যামেরা লঞ্চ করে।আর এতে তখন ১৭০ টি ফিল্ম ছিল এবং এটি ছিল তখন সবচেয়ে সস্তা ক্যামেরা। তখন এটির দাম ছিল মাত্র ১ ডলার যা বর্তমানে ৩১ ডলারের সমান। যেটা সেই সময় যে কোন সাধারণ ব্যক্তি ও কিনতে পারত। আর সেই সময় মার্কেটে কোডাকের কোন প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল না। তাই খুব শীঘ্রই কোডাক কোম্পানি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
তবে এতদিন ধরে মার্কেটে যে সমস্ত ক্যামেরা চলছিল তারা সবই ছিল ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট (সাদা-কালো)। তখন বিজ্ঞানীদের মধ্যে একটি রঙিন ক্যামেরা বানানোর প্রবণতা শুরু হয়। শেষে ১৯০৭ সালে আগাস্ট লুইস ব্রাদার অটো ক্রোমের সাহায্যে একটি কালার ক্যামেরা বানিয়ে ফেলেন, যা দিয়ে রঙিন ছবি তোলা যেত। এরপর দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়।
১৯৪৮ সালে একজন আমেরিকান আবিষ্কারক যার নাম ছিল এডুইন ল্যান্ড। তিনি একটি ইনস্ট্যান্ট ক্যামেরা আবিষ্কার করেন যা দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে কোন ছবি তুলে সেটিকে বের করা যেত।
ডিজিটাল ক্যামেরার আবিষ্কারক কে
১৯৭৫ সালে কোডাক কোম্পানিতে কাজ করা এক জন ইঞ্জিনিয়ার স্টিভেন স্যাসন পৃথিবীর প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা আবিষ্কার করেন। আর এই ক্যামেরায় কোন রিল বা ফিল্ম লাগানো হতো না।এই ডিজিটাল ক্যামেরা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কোন বস্তু বা ব্যক্তির ছবি তুলে সেটিকে একটি মেমোরি কার্ডের মধ্যে সেভ করে নিতে সক্ষম ছিল। এরপর সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন আপগ্রেডের সাথে এই ডিজিটাল ক্যামেরা আরো উন্নত হয়।
কত সালে মোবাইলের সাথে ক্যামেরা যুক্ত করা হয়
স্যামসাং কোম্পানি ২০০০ সালে প্রথম ক্যামেরা মোবাইল লঞ্চ করে। পরবর্তীতে এর সাথে সাথেই মোবাইলে ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হয়ে যায়।লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত আর্টিকেলটিতে রেডিও এবং ক্যামেরার আবিষ্কারক এবং আবিষ্কারের ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বর্তমানে এই দুইটি উদ্ভাবন অত্যন্ত জনপ্রিয় বিশেষ করে ক্যামেরা। বর্তমানে ক্যামেরার জনপ্রিয়তা সর্বাধিক কারণ প্রত্যেকটা মানুষই তার জীবনের স্মৃতিচারণ গুলো ধরে রাখতে চায় আর চাই ক্যামেরার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।আবার রেডিও হল মনোরঞ্জনের একটি যন্ত্র তবে এটি সীমাবদ্ধ না থেকে বর্তমানে এর বিস্তৃতি ব্যাপক। ছোট ফোন থেকে শুরু করে আধুনিক ঘড়ি, গাড়ি এবং স্মার্টফোনের মধ্যেও রেডিও রয়েছে। এখন যে কোন জায়গার ব্রডকাস্ট পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে শোনা যায়। আমরা প্রত্যেকেই এই দুইটি জিনিস ব্যবহার করে থাকি।
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি রেডিও এবং ক্যামেরার আবিষ্কার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করেছেন। যদি আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে এটি আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন যাতে করে তারাও এ বিষয়ে সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে।
এরকমই বিভিন্ন ধরনের আবিষ্কারের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট দিতে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। এছাড়াও আমরা আমাদের আর্টিকেলটিতে বিজ্ঞানমনস্ক, সাধারণ জ্ঞানমূলক, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী, স্বাস্থ্য বিষয়ক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে আর্টিকেল প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকি।
এই আর্টিকেল সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন , মতামত কিংবা পরামর্শ থাকে তাহলে তা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন যাতে করে অন্যরাও উপকৃত হতে পারে। আমাদের আরো অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে এখানে শেষ করছি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
পরিশেষে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ’💚।
বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url