মৌলিক পদার্থ কাকে বলে

প্রত্যেক পদার্থরই বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে যে মৌলিক পদার্থ এবং যৌগিক পদার্থ কাকে বলে ও এর মধ্যে পার্থক্য কি? চলুন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
মৌলিক পদার্থ কাকে বলে

ভূমিকা

প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকেরা ভাবতেন মাটি, পানি, বায়ু এবং আগুন ইত্যাদি মৌলিক পদার্থ আর অন্য সকল বস্তু এদের মিশ্রণে তৈরি। গ্রিসের দার্শনিক ডেমোক্রিটাস প্রথম বলেছিলেন, প্রত্যেক পদার্থের একক আছে যা অতি ক্ষুদ্র আর অবিভাজ্য। তিনি এর নাম দেন এটম। কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দিয়ে এটি প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি বলে এটি কোনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

অবশেষে 1803 সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন ডাল্টন বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পরমাণু সম্পর্কে একটি মতবাদ দেন যে, প্রতিটি পদার্থ অজস্র ক্ষুদ্র এবং অবিভাজ্য কণার সমন্বয়ে গঠিত। তিনি দার্শনিক ডেমোক্রিটাসের সম্মানে এ একক কণার নাম দেন Atom, যার অর্থ পরমাণু। এর পরে প্রমাণিত হয় যে, পরমাণু অবিভাজ্য নয়।

এদের ভাংলে পরমানুর চেয়েও ক্ষুদ্র কণিকা ইলেকট্রন ,প্রোটন ,নিউট্রন ইত্যাদি পাওয়া যায়। পরমাণুর বিভিন্ন মডেল, পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস ইত্যাদি সম্পর্কে আর্টিকেলে বিস্তারিত জানব।

মৌলিক পদার্থ কাকে বলে

আপনি নিশ্চয় সোনা, রূপা বা লোহা দেখছেন। বিশুদ্ধ সোনাকে আপনি যতইা ভাঙ্গেন না কেন সেখানে সোনা ছাড়া আর কিছু পাবে। না। রূপা এবং লোহার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যে পদার্থকে ভাঙলে সেই পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না তাকে মৌলিক পদার্থ বা মৌল বলে।

এরকম আরও কিছু মৌলের উদাহরণ হলো নাইট্রোজেন, ফসফরাস, কার্বন, অক্সিজেন, হিলিয়াম, ক্যালসিয়াম, আর্গন, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার ইত্যাদি। এ পর্যন্ত 118টি মৌল আবিষ্কৃত হয়েছে।

এগুলোর মধ্যে ৭৪টি মৌল প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। বাকি মৌলগুলো গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে। এগুলোকে কৃত্রিম মৌল বলে। আপনি কি জানেন আমাদের শরীরে মোট 26 ধরনের ভিন্ন ভিন্ন মৌল আছে?

যৌগিক পদার্থ কাকে বলে

আপনারা জেনেছন যে, মৌলিক পদার্থকে ভাঙলে শুধু ঐ পদার্থই পাওয়া যাবে। পানিকে যদি ভাঙা হয় (অর্থাৎ রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করা যায়) তবে কিন্তু দুটি ভিন্ন মৌল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পাওয়া যায়। আবার, লেখার চককে যদি ভাঙা যায় তাহলে সেখানে ক্যালসিয়াম, কার্বন ও অক্সিজেন এ তিনটি মৌল পাওয়া যাবে।

যে সকল পদার্থকে ভাঙলে দুই বা দুইয়ের অধিক মৌল পাওয়া যায় তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলে। যৌগের মধ্যে মৌলসমূহের সংখ্যার অনুপাত সব সময় একই থাকে। যেমন- যেখান থেকেই পানির নমুনা সংগ্রহ করা হোক না কেন রাসায়নিকভাবে বিশ্লেষণ করা হলে সব সময় দুই ভাগ হাইড্রোজেন এবং এক ভাগ অক্সিজেন পাওয়া যাবে।

অর্থাৎ পানিতে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের পরমাণুর সংখ্যার অনুপাত 2: 1। যৌগের ধর্ম কিন্তু মৌলসমূহের ধর্ম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। যেমন- সাধারণ তাপমাত্রায় হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাসীয় কিন্তু এদের থেকে উৎপন্ন যৌগ পানি সাধারণ তাপমাত্রায় তরল।

অনু কাকে বলে

দুই বা দুইয়ের অধিক সংখ্যক পরমাণু পরস্পরের সাথে রাসায়নিক বন্ধন এর মাধ্যমে যুক্ত থাকলে তাকে অণু বলে।

পরমাণু কাকে বলে

পরমাণু হলো মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যার মধ্যে মৌলের গুণাগুণ থাকে।

পরমাণু কি দিয়ে তৈরি

পরমাণু মূলত তিনটি কণা দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। সেগুলো হচ্ছে ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন। পরমাণুর কেন্দ্রের নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রন থাকে এবং ইলেকট্রন নিউক্লাস কে ঘিরে ঘুরতে থাকে।

ভরসংখ্যা কাকে বলে

কোনো পরমাণুতে উপস্থিত প্রোটন ও নিউট্রন সংখ্যার যোগফলকে ঐ পরমাণুর ভরসংখ্যা বলে। ভরসংখ্যাকে A দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেহেতু ভরসংখ্যা হলো প্রোটন সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যার যোগফল, কাজেই ভরসংখ্যা থেকে প্রোটন সংখ্যা বিয়োগ করলে নিউট্রন সংখ্যা পাওয়া যায়।

 সোডিয়ামের (Na) ভরসংখ্যা হলো 23, এর প্রোটন সংখ্যা 11, ফলে এর নিউট্রন সংখ্যা হচ্ছে 23-11 = 12।

পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে

কোনো মৌলের একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে উপস্থিত প্রোটনের সংখ্যাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলা হয়। যেমন- হিলিয়াম (He) এর একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে দুটি প্রোটন থাকে। তাই হিলিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা হলো দুই।

আবার, অক্সিজেন (০) পরমাণুর নিউক্লিয়াসে আটটি প্রোটন থাকে। তাই অক্সিজেনের পারমাণবিক সংখ্যা হলো আট।কোনো পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা দ্বারা ঐ পরমাণুকে চেনা যায়। পারমাণবিক সংখ্যা 1 হলে ঐ পরমাণুটি হাইড্রোজেন, পারমাণবিক সংখ্যা 2 হলে ঐ পরমাণুটি হিলিয়াম। পারমাণবিক সংখ্যা ৭ হলে ঐ পরমাণুটি ফ্লোরিন।
অর্থাৎ পারমাণবিক সংখ্যাই কোনো পরমাণুর আসল পরিচয়। প্রোটন সংখ্যা বা পারমাণবিক সংখ্যাকে Z দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেহেতু প্রত্যেকটা পরমাণুই চার্জ নিরপেক্ষ অর্থাৎ মোট চার্জ বা আধান শূন্য তাই পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যে কয়টি প্রোটন থাকে নিউক্লিয়াসের বাইরে ঠিক সেই কয়টি ইলেকট্রন থাকে।

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল

1911 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড পরমাণুর গঠন সম্পর্কে একটি মডেল প্রদান করেন। মডেলটি এরকমঃ

১। পরমাণুর একটি কেন্দ্র আছে। এই কেন্দ্রের নাম নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসের ভেতরে প্রোটন এবং নিউক্লিয়াসের বাইরে ইলেকট্রন অবস্থান করে। যেহেতু আপেক্ষিকভাবে ইলেকট্রনের ভর শূন্য ধরা হয় কাজেই নিউক্লিয়াসের ভেতরে অবস্থিত প্রোটন এবং নিউট্রনের ভরই পরমাণুর ভর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২।নিউক্লিয়াস অত্যন্ত ক্ষুদ্র এবং পরমাণুর ভেতরে বেশির ভাগ জায়গাই ফাঁকা।
৩।সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কক্ষপথে যেমন গ্রহগুলো ঘুরে তেমনি নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কক্ষপথে ইলেকট্রনগুলো ঘুরছে। কোনো পরমাণুর নিউক্লিয়াসে যে কয়টি প্রোটন থাকে নিউক্লিয়াসের বাইরে সেই কয়টি ইলেকট্রন থাকে। যেহেতু প্রোটন এবং ইলেকট্রনের চার্জ একে অপরের সমান ও বিপরীত চিহ্নের, তাই পরমাণুর সামগ্রিকভাবে চার্জ শূন্য।

৪।ধনাত্মক চার্জবাহী নিউক্লিয়াসের প্রতি ঋণাত্মক চার্জবাহী ইলেকট্রন এক ধরনের আকর্ষণ বল অনুভব করে। এই আকর্ষণ বল কেন্দ্রমুখী এবং এই কেন্দ্রমুখী বলের কারণে পৃথিবী যেরকম সূর্যের চারদিকে ঘুরে ইলেকট্রন সেরকম নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঘুরে।

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলকে সৌরজগতের সাথে তুলনা করা হয়েছে বলে এ মডেলটিকে সোলার সিস্টেম মডেল বা সৌর মডেল বলে। আবার, এ মডেলের মাধ্যমে বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড সর্বপ্রথম নিউক্লিন নিউক্লিয়ার মডেলও বলা হয়।

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের সীমাবদ্ধতা

রাদারফোর্ডই সর্বপ্রথম নিউক্লিয়াস এবং ইলেকট্রনের কক্ষপথ সম্বন্ধে ধারণা দেন। তিনিই সর্বপ্রথম একটি গ্রহণযোগ্য পরমাণু মডেল প্রদান করলেও তার পরমাণু মডেলের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল।
সেগুলো হলো:

১।এই মডেল ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার (ব্যাসার্ধ) ও আকৃতি সম্বন্ধে কোনো ধারণা দিতে পারেনি।

২।সৌরজগতের সূর্য ও গ্রহগুলোর সামগ্রিকভাবে কোনো আধান বা চার্জ নেই কিন্তু পরমাণুতে ইলেকট্রন এবং নিউক্লিয়াসের আধান বা চার্জ আছে। কাজেই চার্জহীন সূর্য এবং গ্রহগুলোর সাথে চার্যযুক্ত নিউক্লিয়াস এবং ইলেকট্রনের তুলনা করা হয়েছে। কাজেই চার্জহীন বস্তুর সাথে চার্জযুক্ত বস্তুর তুলনা সঠিক নয়।

৩।একের অধিক ইলেকট্রনবিশিষ্ট পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো কীভাবে নিউক্লিয়াসের চারদিকে পরিভ্রমণ করছে তার কোনো ধারণা এ মডেলে দেওয়া হয়নি।

৪।ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বানুসারে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণনের সময় ক্রমাগত শক্তি হারাতে থাকবে। ফলে ইলেকট্রনের ঘূর্ণন পথও ছোট হতে থাকবে এবং এক সময় সেটি নিউক্লিয়াসের উপর পতিত হবে। অর্থাৎ পরমাণুর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে বা পরমাণু স্থায়ী হবে না। কিন্তু প্রকৃতিতে সেটা ঘটে না অর্থাৎ ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বানুসারে রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল সঠিক নয়।

বোরের পরমানু মডেল বিশ্লেষন

রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলের ত্রুটিগুলোকে সংশোধন করে 1913 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী নীলস্ বোর পরমাণুর একটি মডেল প্রদান করেন। এই মডেলকে বোরের পরমাণু মডেল বলা হয়। বোর পরমাণু মডেলের মতবাদগুলো এরকম-

১।পরমাণুতে যে সকল ইলেকট্রন থাকে সেগুলো নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ইচ্ছামতো যেকোনো কক্ষপথে ঘুরতে পারে না। শুধু নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধের কতগুলো অনুমোদিত বৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরে। এই নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধের অনুমোদিত বৃত্তাকার কক্ষপথগুলোকে অনুমোদিত কক্ষপথ বা প্রধান শক্তিস্তর বা কক্ষপথ বা শেল বা অরবিট বা স্থির কক্ষপথ বলে।

স্থির কক্ষপথে ঘুরার সময় ইলেকট্রনগুলো কোনোরূপ শক্তি শোষণ বা বিকিরণ করে না। স্থির কক্ষপথকে। দ্বারা প্রকাশ করা হয়। n = 1, 2, 3, 4 ইত্যাদি। অন্যভাবে বলা যায়, n = 1 হলে K প্রধান শক্তিস্তর, n = 2 হলে L প্রধান শক্তিস্তর, n = 3 হলে M প্রধান শক্তিস্তর, n = 4 হলে N প্রধান শক্তিস্তর ইত্যাদি।

২।বোর মডেল অনুসারে কোন শক্তিস্তরে ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ
mvr=nh/2π
  • m হচ্ছে ইলেকট্রনের ভর (9.11 × 10-31 kg)
  • r হচ্ছে ইলেকট্রন যে কক্ষপথ বা শক্তিস্তরে ঘুরবে তার ব্যাসার্ধ r
  • ✓ হচ্ছে ইলেকট্রন যে কক্ষপথ বা শক্তিস্তরে ঘুরবে সেই কক্ষপথে ইলেকট্রনের বেগ v
  • h হচ্ছে প্লাংক ধ্রুবক (h = 6.626 × 10-34 m² kg/s)
  • n হচ্ছে প্রধান শক্তিস্তর বা প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা (n = 1, 2, 3 ইত্যাদি।)
  • এখানে যে শক্তিস্তরের n এর মান কম সেই শক্তিস্তর নিম্ন শক্তিস্তর এবং যে শক্তিস্তরের n এর মান বেশি সেই শক্তিস্তর উচ্চ শক্তিস্তর হিসেবে পরিচিত।
৩। কোনো প্রধান শক্তিস্তরে ইলেকট্রন ঘুরার সময় ইলেকট্রনের কোনো শক্তি শোষিত বা বিকিরিত হয় না, তবে ইলেকট্রন যদি নিম্ন শক্তিস্তর থেকে উচ্চ শক্তিস্তর এ যায় তখন শক্তি শোষিত হয়। আবার, যদি ইলেকট্রন উচ্চ শক্তিস্তর থেকে নিম্ন শক্তিস্তর এ যায় তখন শক্তি বিকিরিত হয়।
এই শোষিত বা বিকিরিত শক্তির পরিমাণ
hv=hc/γ
  • c হচ্ছে আলোর বেগ (3 × 10° ms¯¹)
  • ✓ হচ্ছে শোষিত বা বিকিরিত শক্তির কম্পাঙ্ক (একক s¹ বা Hz)
  • এ হচ্ছে শোষিত বা বিকিরিত শক্তির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (একক m)
  • ইলেকট্রন উচ্চ শক্তিস্তর থেকে নিম্ন শক্তিস্তরে যাবার সময় যে আলো বিকিরণ করে তাকে প্রিজমের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করালে পারমাণবিক বর্ণালি (atomic spectra) সৃষ্টি হয়

বোরের পরমাণু মডেলের সাফল্য

  • রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে সৌরজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহ-উপগ্রহগুলো যেমন ঘুরছে, পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলোও তেমন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এখানে ইলেকট্রনের শক্তিস্তরের আকার সম্পর্কে কোনো কথা বলা হয়নি কিন্তু বোরের পারমাণবিক মডেলে পরমাণুর শক্তিস্তরের আকার বৃত্তাকার বলা হয়েছে।
  • রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলে পরমাণু শক্তি শোষণ করলে বা শক্তি বিকিরণ করলে পরমাণুর গঠনে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে সে কথা বলা হয়নি কিন্তু বোর পরমাণু মডেলে বলা হয়েছে পরমাণু শক্তি শোষণ করলে ইলেকট্রন নিম্ন শক্তিস্তর থেকে উচ্চ শক্তিস্তরে ওঠে। আবার, পরমাণু শক্তি বিকিরণ করলে ইলেকট্রন উচ্চ শক্তিস্তর থেকে নিম্ন শক্তিস্তরে নেমে আসে।
  • রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে কোনো মৌলের পারমাণবিক বর্ণালি ব্যাখ্যা করা যায় না কিন্তু বোরের পরমাণু মডেল অনুসারে এক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণু হাইড্রোজেন (H) এর বর্ণালি ব্যাখ্যা করা যায়।

বোরের পরমাণু মডেলের সীমাবদ্ধতা

বোর মডেলেরও কিছু সীমাবদ্ধতা বা ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো হচ্ছে:

  • বোর মডেলের সাহায্যে এক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুর পারমাণবিক বর্ণালি ব্যাখ্যা করা যায় সত্যি কিন্তু একাধিক ইলেকট্রন বিশিষ্ট পরমাণুর পারমাণবিক বর্ণালি ব্যাখ্যা করা যায় না।
  • বোরের পারমাণবিক মডেল অনুসারে এক শক্তিস্তর থেকে ইলেকট্রন অন্য শক্তিস্তরে গমন করলে পারমাণবিক বর্ণালিতে একটিমাত্র রেখা পাবার কথা। কিন্তু শক্তিশালী যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যায় প্রতিটি রেখা অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেখার সমষ্টি। প্রতিটি রেখা কেন অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রেখার সমষ্টি হয় বোর মতবাদ অনুসারে তার ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না।
  • বোরের পরমাণুর মডেল অনুসারে পরমাণুতে শুধু বৃত্তাকার কক্ষপথ বিদ্যমান। কিন্তু পরে প্রমাণিত হয়েছে পরমাণুতে ইলেকট্রন শুধু বৃত্তাকার কক্ষপথেই নয় উপবৃত্তাকার কক্ষপথেও ঘুরে।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক উপত্য আর্টিকেলটিকে পদার্থের বিভিন্ন ধরন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে অনু,পরমানু এবং বিভিন্ন ধরনের পরমাণু মডেল ও এর গঠন প্রণালী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা লাভ করেছে।

যদি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এটি আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে তারাও এই বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। এছাড়াও আরো অন্যান্য আর্টিকেল গুলো যেমন বিজ্ঞান ভিত্তিক, সাধারণ জ্ঞানমূলক , চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য , বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী,

বিভিন্ন আবিষ্কার ও আবিষ্কারক, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকলে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। কারণ এ ধরনের আর্টিকেলগুলো আমরা নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি।

আর এই পোস্ট সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন মতামত কিংবা কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন। যাতে করে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। আরো অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে এখানে শেষ করছি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। 

পরিশেষে আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url