সার্বভৌমত্ব কাকে বলে

সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের চূড়ান্ত, স্থায়ী, অবিভাজ্য,স্থানান্তরযোগ্য ও সার্বজনীন ক্ষমতা। চলুন নিম্নে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
সার্বভৌমত্ব কাকে বলে

ভূমিকা

সার্বভৌমত্ব বা সার্বভৌমিকতা রাষ্ট্রদেহের প্রাণস্বরূপ। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব সম্পূর্ণভাবে সার্বভৌমত্বের উপর নির্ভরশীল।রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যতই ক্ষমতার অধিকারী হোক না কেন রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতাকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। সার্বভৌমত্ব একক, অবাধ, চূড়ান্ত এবং অবিভাজ্য ক্ষমতা।

অর্থাৎ সার্বভৌমত্ব ধারণাটি হচ্ছে আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি। সার্বভৌমত্বের এই স্বরূপ বিশ্লেষণ করলে এর কতিপয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় সেগুলো রাষ্ট্রের অন্যান্য উপাদান থেকে ভিন্নতর। সার্বভৌমত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের অপরিসীম ক্ষমতার উৎস বা আধার। এর কতকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। 

সার্বভৌমত্ব কাকে বলে

সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের চূড়ান্ত, স্থায়ী, অবিভাজ্য, অহস্তান্তরযোগ্য ও সর্বজনীন ক্ষমতা। এ ক্ষমতার বলে রাষ্ট্র তার অধীন নাগরিকদের আদেশ ও নির্দেশ প্রদান করে, তাদের আনুগত্য লাভ করে এবং আইন প্রণয়ন করে এবং তা প্রয়োগ করে।

সার্বভৌমত্ব কত প্রকার ও কি কি

সার্বভৌমত্বের রূপ পৃথিবীর সব দেশে এক রকম নয়। স্বরূপ, প্রকৃতি ও প্রায়োগিক দিক বিচার করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সার্বভৌমত্বকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছেন। এর মধ্যে আইনগত সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধরন। সার্বভৌমত্বের এ দুটি রূপের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

আইনগত সার্বভৌমত্ব কাকে বলে

দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে যে কর্তৃপক্ষ ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারী তাকে আইনগত সার্বভৌমত্ব বলা হয়। এ সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ রীতিনীতি, প্রথা, ঐশ্বরিক আইন ইত্যাদির ঊর্ধ্বে এবং প্রয়োজনে এগুলো অবজ্ঞা করতে পারে। এ কর্তৃপক্ষ আইনগত দিক থেকে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। এ সার্বভৌমের আদেশের পিছনে আইনের অনুমোদন থাকে।
কেউ যদি এ সার্বভৌমের আদেশ লঙ্ঘন বা অমান্য করে তাহলে তাকে শাস্তি পেতে হয়। মূলত আইনগত সার্বভৌমত্বের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা চরম এবং শর্তহীন, এর ইচ্ছা সীমাহীন ও অহস্তান্তরযোগ্য। এ প্রসঙ্গে রিচি বলেন, "আইনগত সার্বভৌমত্ব হচ্ছে আইনজীবীদের সার্বভৌমত্ব; এটি এমন এক সার্বভৌম ক্ষমতা, যার বাইরে আইনবিদরা তথা আদালত দৃষ্টি দেয় না।"

রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব কাকে বলে

সাধারণত রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলতে জনগণের সার্বভৌমত্বকে বুঝায়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচকমণ্ডলীই রাজনৈতিক সার্বভৌম। এক্ষেত্রে নির্বাচকমণ্ডলী আইনের আকারে তাদের আদেশ প্রকাশ করে না বরং আইনানুগ সার্বভৌমত্বের আদেশকে তারা চরমভাবে প্রভাবিত করে।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলতে কখনো জনমতকে, কখনো নির্বাচকমণ্ডলীর মতকে, আবার কখনো ধর্মীয় ও নৈতিক অনুশাসনকে বুঝানো হয়। সংক্ষেপে জনমত গঠনকারী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও নির্বাচকমণ্ডলীকেই সংযুক্তভাবে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলা যায়।

এ প্রসঙ্গে এ. ভি. ডাইসি বলেন, "রাজনৈতিক সার্বভৌম হলো সেই সংস্থা, যার ইচ্ছার প্রতি নাগরিকরা শেষ পর্যন্ত আনুগত্য স্বীকার করে।" বস্তুত রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অনির্দিষ্ট এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোট প্রদান, জনমত, নীতিবোধ প্রভৃতির মাধ্যমে এর প্রকাশ ঘটে।

আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের মধ্যে পার্থক্য

আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের মধ্যকার পার্থক্য আলোচনা করা হলো:

১।সংজ্ঞাগতঃ আইনগত সার্বভৌমত্ব বলতে সে সার্বভৌমত্বকে বুঝায় যা আনুষ্ঠানিক আইনের মাধ্যমে বৈধতা লাভ করে এবং জনগণের নিকট থেকে স্বাভাবিক আনুগত্য লাভ করে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের মধ্যে যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি রাষ্ট্রের চরম আজ্ঞাকে আইন হিসেবে ঘোষণা করেন, তিনি বা তারাই হলেন আইনগত সার্বভৌম।
অপরদিকে, আইনগত সার্বভৌমত্বের পিছনে যে সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান এবং যাকে বা যাদেরকে আইনগত সার্বভৌম স্বীকৃতি প্রদান করে, তাকে বা তাদেরকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলে। অর্থাৎ যে শক্তির কাছে আইনগত সার্বভৌমিকতাকে নতি স্বীকার করতে হয় তা-ই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব।

২। সুনির্দিষ্টতা: আইনগত সার্বভৌমত্ব আইন-আদালত কর্তৃক স্বীকৃত ও কার্যকর হয়। প্রত্যেক রাষ্ট্রেই সুনির্দিষ্টভাবে এ সার্বভৌমত্ব বিদ্যমান। আইনগত সার্বভৌমত্বের ক্ষমতা অসীম, অবাধ ও চরম।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অনির্দিষ্ট ও অস্পষ্ট, তবে তা আইনগত সার্বভৌমত্বকে প্রভাবিত করে। বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের প্রকাশ ঘটে। ভোটদান, সংবাদপত্র, সভা-সমিতি ইত্যাদির মাধ্যমে এ সার্বভৌমত্ব ব্যক্ত হয়।

৩। গুরুত্ব বিচার: গুরুত্বের দিক থেকে আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের পার্থক্য রয়েছে। অনির্দিষ্ট হলেও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের নিকট আইনগত সার্বভৌমত্বকে নতি স্বীকার করতে হয়। আইন প্রণয়নকালে, শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনগত সার্বভৌমত্বকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়।

৪। স্পষ্টতা: আদালত কর্তৃক স্বীকৃত হয় বলে আইনগত সার্বভৌমত্ব অত্যন্ত সুস্পষ্ট। অর্থাৎ সব রাষ্ট্রেই সুনির্দিষ্টভাবে এ সার্বভৌমিকতা রয়েছে। আইনগত সার্বভৌমের ক্ষমতা অসীম ও অবাধ। পক্ষান্তরে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অনির্দিষ্ট ও অস্পষ্ট। তবে তা আইনগত সার্বভৌমের উপর প্রভাব বিস্তার করে।

৫। সংগঠন ও কর্তৃত্ব: আইনগত সার্বভৌমত্ব সংগঠিত ও নিশ্চিত। কিন্তু রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অসংগঠিত, অনিশ্চিত এবং অস্পষ্ট। তাছাড়া আইনগত সার্বভৌমত্ব কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিসংস্থার হাতে থাকে। কিন্তু রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের আধার জনগণ।

৬। সরকারি নীতি: সরকারি নীতি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আইনগত সার্বভৌমত্ব বিশেষ প্রাধান্য পায়। আইনগত সার্বভৌমত্বের এ প্রাধান্য রাষ্ট্রকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। পক্ষান্তরে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব গড়ে উঠে গণতন্ত্রকে ভিত্তি করে। এটি একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জনগণের সাধারণ ইচ্ছাকে সার্বভৌম বলে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস পায়।

৭। মর্যাদাগত অবস্থান: মর্যাদার দিক থেকে আইনগত সার্বভৌমত্বের চেয়ে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের ক্ষমতা বেশি। কেননা আইনগত সার্বভৌম যতই ক্ষমতাশালী হোক না কেন রাজনৈতিক সার্বভৌমকে মান্য করে চলতে হয়। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডাইসি রাজনৈতিক সার্বভৌমকে অধিকতর মর্যাদা দান করেছেন

৮। দায়িত্বশীলতা : আইনগত সার্বভৌমত্ব রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের কাছে দায়িত্বশীল ও অবনত থাকে। অর্থাৎ রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের কাছে আইনগত সার্বভৌমত্বকে দায়িত্বশীল থেকে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হয়।

৯। অধিকারের উৎস ও নিয়ন্ত্রক: আইনগত সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ নিজেকে সমুদয় অধিকার ও ক্ষমতা চর্চার উৎস ও নিয়ন্ত্রক বলে মনে করে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা ও অধিকার চর্চার উৎস, কিন্তু নিয়ন্ত্রক নয়।

রাজনৈতিক সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্র জনসাধারণের সাধারণ ইচ্ছার মাধ্যমে সার্বভৌমত্বের প্রকৃতি ও ধারণা লাভ করে এবং আইনগত কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন ও নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস পায়।

১০। আইনজ্ঞদের মতামত: আইনজ্ঞগণ শুধু আইনগত সার্বভৌমিকতাকে স্বীকার করেন। কিন্তু রাজনৈতিক সার্বভৌমিকতাকে তারা স্বীকার করেন না। রাজনৈতিক সার্বভৌমিকতা তাদের মতে সার্বভৌম নয়।

উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এদের মধ্যে যথেষ্ট মিল পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ এরা বিচ্ছিন্ন নয়।

প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আইন প্রণয়ন করেন এবং তারা আইনগত সার্বভৌম। আর নির্বাচকমণ্ডলী রাজনৈতিক সার্বভৌম। আইন ও শাসনব্যবস্থাকে সফলভাবে কার্যকর করার ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

সার্বভৌমত্বের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর

১। চরম ক্ষমতা: রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা হলো চরম, চূড়ান্ত, নিরঙ্কুশ ও সীমাহীন। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কোনো শক্তির দ্বারা সার্বভৌম ক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয় না। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই সার্বভৌমকে মেনে চলতে বাধ্য। রাষ্ট্র ছাড়া কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের হাতে এরূপ চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতা থাকে না।
২ সর্বজনীনতা: সার্বভৌম ক্ষমতার সর্বজনীনতার অর্থ হচ্ছে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সমস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সার্বভৌম শক্তির অধীন। রাষ্ট্রের অন্তর্গত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংঘ সার্বভৌম শক্তির কর্তৃত্বকে অস্বীকার করতে পারে না। তবে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকগণ সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীন নয়।

৩। অত্যাবশ্যকতা: সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের জন্য অত্যাবশ্যক। সার্বভৌমত্ব ব্যতিরেকে রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। যতদিন সার্বভৌমত্ব থাকবে রাষ্ট্রও ততদিন থাকবে। একটি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হলেই সার্বভৌমত্ব বাস্তবতা লাভ করে।

৪। স্থায়িত্ব: সার্বভৌমত্ব স্থায়ীত্ব। সরকারের পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্র টিকে থাকে। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যতদিন থাকে ততদিন সার্বভৌমত্ব স্থায়ী হয়। সরকারের পরিবর্তন সার্বভৌমত্বের স্থায়িত্ব নষ্ট করে না। কেবল রাষ্ট্রের বিলুপ্তি হলেই সার্বভৌমত্বের বিলুপ্তি সম্ভব।

৫। অবিভাজ্যতা: সার্বভৌমত্ব এক ও অবিভাজ্য। একে কোনোভাবেই ভাগ করা যায় না। বস্তুত রাষ্ট্র হলো আইনানুসারে সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ জনসমাজ। সমাজব্যবস্থায় ঐক্য ও সংহতি অব্যাহত রাখার জন্য সার্বভৌম ক্ষমতার অবিভাজ্যতা একান্ত অপরিহার্য।

অধ্যাপক আর. জি. গেটেল বলেন, "A divided sovereignty is a contradiction in terms." অর্থাৎ সার্বভৌমিকতার বিভাজন একটি স্ববিরোধী ধারণা। একইভাবে অধ্যাপক গার্নার বলেন, "Sovereignty is a unit and therefore cannot be divided." অর্থাৎ সার্বভৌমত্ব হলো সম্পূর্ণ একক এবং সুতরাং একে বিভক্ত করা যায় না।
৬। এককত্ব: এককত্ব সার্বভৌমত্বের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এককত্ব অবিভাজ্যতারই অনুসিদ্ধান্ত। রাষ্ট্রের পুরো ভূখণ্ড একই সার্বভৌম ক্ষমতার অধীনে থাকবে। কেননা একাধিক ক্ষেত্রে সার্বভৌম ক্ষমতা ন্যস্ত হলে রাষ্ট্রের ঐক্য, স্থায়িত্ব ও সংহতি বিনষ্ট হবে।

৭। হস্তান্তরের অযোগ্য: সার্বভৌমত্ব হস্তান্তরের অযোগ্য। মানুষ যেমন নিজের জীবন অন্যের কাছে হস্তান্তর করে বাঁচতে পারে না, তেমনি রাষ্ট্রও সার্বভৌমত্ব অন্য রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করে টিকে থাকতে পারে না। সার্বভৌমত্ব হস্তান্তরের অর্থই রাষ্ট্রের মৃত্যু। এ প্রসঙ্গে দ্যগুই (Duguit) বলেছেন, "To alienate sovereignty would be a tantamount to commit suicide." অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতার হস্তান্তর আত্মহত্যার শামিল।

৮।মৌলিকত্ব: সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের মৌলিক ক্ষমতা, এর কোনো বিকল্প নেই। সার্বভৌম ক্ষমতা রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে এবং সকল ক্ষমতা সার্বভৌম ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়।

৯।সর্বব্যাপী: সার্বভৌম ক্ষমতার অস্তিত্ব রাষ্ট্রের সর্বব্যাপী। অর্থাৎ ভূখণ্ডব্যাপীই রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বিদ্যমান, রাষ্ট্রের আদেশ সকল ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উপর বাধ্যতামূলকভাবে প্রযোজ্য হয়। কোনো নাগরিক সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করতে পারে না।

১০। আইনানুগ : রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা আইনানুগ। সার্বভৌম ক্ষমতা আইনের দ্বারা স্বীকৃত ও অনুমোদিত। এ ক্ষমতা সর্বদা শক্তিশালী আইন হিসেবে কাজ করে।

কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করলেই রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার উপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না কিংবা সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারী কোনো ব্যক্তির আদেশ-নিষেধ অমান্য করতে পারে না। কেউ আইন অমান্য করলে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়।

১১। অবিনশ্বরতা: সার্বভৌমত্বের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর অবিনশ্বরতা। রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতাকে অবিনশ্বর বলে স্বীকার করেন। তারা রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতাকে অবিনশ্বর হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, এ ক্ষমতা অবিনাশী। এর কোনো ক্ষয় বা লয় নেই। সার্বভৌম ক্ষমতার বিনাশ হলে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলোপ হতে বাধ্য।

১২।কর্তৃত্বসম্পন্ন: রাষ্ট্রের সার্বভৌম ধারণা কর্তৃত্বসম্পন্ন। এ কর্তৃত্বের বলেই রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে থাকে। সার্বভৌম কর্তৃত্বের উপর হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারো নেই। কেউ এ কর্তৃত্বের উপর হস্তক্ষেপ করতে চাইলে রাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। এ কর্তৃত্ব মৌলিক ও সর্বজনীন।

১৩। অনন্যতা: সার্বভৌম ক্ষমতা অনন্য। এটি অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অধীনতা মেনে চলে না। এ ক্ষমতা শুধু রাষ্ট্রের হাতেই ন্যস্ত থাকে। রাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী নয়।

১৪. সীমাহীনতা: সার্বভৌম ক্ষমতা অন্য কোনো শক্তির দ্বারা সীমিত নয়; বরং এটি অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী। আইনগতভাবে এর অসীম ক্ষমতার প্রয়োগ সর্বত্র হতে পারে। এছাড়া সার্বভৌমত্বই আইনের উৎস হিসেবে কাজ করে।

১৫. জন অস্টিনের অভিমত: জন অস্টিন বলেন, "যদি কোনো সমাজে কোনো নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি অপর কোনো ঊর্ধ্বতনের প্রতি আনুগত্য স্বীকার না করে কিন্তু সমাজের অধিকাংশ স্বভাবজাত আনুগত্য পেয়ে আসতে থাকে; তবে সে সমাজে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি সার্বভৌম এবং এরূপ সমাজ রাজনৈতিক দিক দিয়ে স্বাধীন।"

পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব সার্বভৌমত্বের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে অধ্যাপক গেটেল বলেন, "সার্বভৌমত্বের ধারণাই হলো আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তি। সুতরাং সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রাণ।" 

সার্বভৌমিকতার সাহায্যে রাষ্ট্রকে অন্যান্য সংঘ, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে সহজেই পৃথক করা যায়। তবে বর্তমান একুশ শতকে এসে দেখা যায় যে, সার্বভৌমত্ব যে স্বরূপে বজায় থাকার কথা তা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং সার্বভৌমত্বের ভিত্তিসমূহেরও নিয়ত পরিবর্তন ঘটছে।

সার্বভৌমিকতার বিভিন্ন ধরন বর্ণনা কর

সার্বভৌম ক্ষমতার অবস্থান এবং এর বিভিন্ন ব্যাখ্যা সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে গিয়ে সার্বভৌমত্ব বিভিন্ন রূপ পরিগ্রহ করেছে। এছাড়া দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা হেতু সার্বভৌমত্ব শব্দটি বর্তমানে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। অবস্থান ও প্রায়োগিক দৃষ্টিকোণ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানিগণ রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতাকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করেছেন।

অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতার ব্যবহারকারী কর্তৃপক্ষের ইচ্ছানুযায়ী একে বিভিন্ন রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই সার্বভৌমত্বের শ্রেণিবিভাগ করা একটি জটিল বিষয়। সার্বভৌমত্বের বিভিন্ন রূপ/শ্রেণিবিভাগ/প্রকারভেদ সার্বভৌমত্বের রূপ পৃথিবীর সব দেশে এক রকম নয়। প্রকৃতি ও ব্যবহারভেদে এর রূপ ভিন্ন হয়ে থাকে।

নিম্নে সার্বভৌমত্বের বিভিন্ন রূপ/প্রকারভেদ/শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করা হলো:
১।নামসর্বস্ব সার্বভৌমত্ব: রাষ্ট্রের মধ্যে যদি কারো নামে সার্বভৌম ক্ষমতা ব্যবহৃত হয় কিন্তু তিনি যদি প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী না হন তাহলে তাকে নামসর্বস্ব সার্বভৌমত্ব বলে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতা কোনো নামমাত্র কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত হলে তাকে নামসর্বস্ব সার্বভৌম ক্ষমতা বলে।

ইংল্যান্ডের রাজা বা রানি, জাপানের সম্রাট প্রমুখ নামসর্বস্ব সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। কেননা এসব দেশের রাজা ও রানি 'রাজত্ব করেন মাত্র, শাসন করে না।' এখানে রাষ্ট্রের সমুদয় ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতেই ন্যস্ত থাকে। একইভাবে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও নামসর্বস্ব সার্বভৌমত্বের অধিকারী।

২।প্রকৃত সার্বভৌমত্ব: রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা সরাসরি কোনো কর্তৃপক্ষের দ্বারা পরিচালিত হলে তাকে প্রকৃত সার্বভৌমত্ব বলে। তত্ত্বগতভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রকৃত সার্বভৌমের হাতে অর্পিত না হলেও এ কর্তৃপক্ষই সার্বভৌম ক্ষমতা ভোগ করে থাকে।

রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা সরাসরি কোনো কর্তৃপক্ষের দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হলে তাকে প্রকৃত সার্বভৌমত্ব বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ভারতের মন্ত্রিপরিষদ প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।

৩।আইনগত সার্বভৌমত্ব: দেশের প্রচলিত আইনানুসারে যে কর্তৃপক্ষ ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারী তাকে আইনগত সার্বভৌমত্ব বলে। আইনগত সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ রীতিনীতি, প্রথা, ঐশ্বরিক আইন ইত্যাদির ঊর্ধ্বে এবং প্রয়োজনে এগুলো অবজ্ঞা করতে পারে। আইনগত দিক থেকে এ কর্তৃপক্ষ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী।

আইনানুগ সার্বভৌমের আদেশের পিছনে আইনের অনুমোদন থাকে। কেউ যদি আইনানুগ সার্বভৌমের আদেশ লঙ্ঘন করে তবে তাকে শাস্তি পেতে হয়। আইনগত সার্বভৌমত্বের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা চরম এবং শর্তহীন, এর ইচ্ছা সীমাহীন ও অহস্তান্তরযোগ্য। অস্টিনের মতে, ব্রিটেনের রাজা ও রানিসহ পার্লামেন্ট আইনগত সার্বভৌমত্বের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

এখানে পার্লামেন্ট ইচ্ছা করলেই যেকোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে। আইনগত সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করতে গিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রিচি বলেন, "আইনগত সার্বভৌমত্ব হচ্ছে আইনজীবীদের সার্বভৌমত্ব; এটি এমন এক সার্বভৌম ক্ষমতা যার বাইরে আইনবিদরা তথা আদালত দৃষ্টি দেয় না।"

৪।রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব: রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলতে সাধারণত জনগণের সার্বভৌমত্বকে বুঝায়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচকমণ্ডলীই রাজনৈতিক সার্বভৌম। এক্ষেত্রে নির্বাচকমন্ডলী আইনের আকারে তাদের আদেশ প্রকাশ করে না; বরং আইনানুগ সার্বভৌমত্বের আদেশকে তারা চরমভাবে প্রভাবিত করে।

এ দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলতে কখনো জনমতকে, কখনো নির্বাচকমণ্ডলীর মতকে আবার কখনো ধর্মীয় ও নৈতিক অনুশাসনকে বুঝায়। সংক্ষেপে জনমত গঠনকারী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও নির্বাচকমণ্ডলীকেই সংযুক্তভাবে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলা যায়।

এ. ভি. ডাইসি বলেন, "আইনবিদ যাকে সার্বভৌম বলে স্বীকার করেন তার পিছনে আরো একটি সার্বভৌম আছে, যাকে আইনগত সার্বভৌম মান্য না করে পারে না, একে রাজনৈতিক সার্বভৌম বলে।" তিনি আরো বলেন, "That body is politically sovereign, the will of which is ultimately obeyed by citizens of the state."

অর্থাৎ রাজনৈতিক সার্বভৌম হলো সেই সংস্থা যার ইচ্ছার প্রতি নাগরিকরা শেষ পর্যন্ত আনুগত্য স্বীকার করে।আর. এন. গিলক্রিস্ট বলেন, "Political sovereignty is the sum total of the influences in a state which lie behind the law." অর্থাৎ রাষ্ট্রের মধ্যে আইনের পশ্চাতে যে সমষ্টিগত প্রভাব অবস্থান করে সেগুলোর সমষ্টিকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলে।

বস্তুত, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অনির্দিষ্ট এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভোট প্রদান, জনমত, নীতিবোধ প্রভৃতির মাধ্যমে এর প্রকাশ ঘটে।

৫। বাস্তব সার্বভৌমত্ব : যখন কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ আইনসম্মত না হয়েও রাষ্ট্রের মধ্যে চরম ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং সকলে তা মানতে বাধ্য হয় তখন তাকে বাস্তব সার্বভৌমত্ব বলে অভিহিত করা হয়। 

লর্ড ব্রাইস বলেন, “যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রতি প্রকৃতপক্ষে আনুগত্য দেখানো হয় এবং যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ আইন অনুসারে বা বেআইনিভাবে নিজের বা নিজেদের চূড়ান্ত ইচ্ছাকে বলবৎ করে তিনি বা তারাই হলেন বাস্তব সাবভৌমত্ব।" 

অধ্যাপক গার্নার বলেন, "যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ সাময়িকভাবে স্বীয় আদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বলবৎ করতে সক্ষম হয় এবং জনগণ উক্ত আদেশ মেনে নিতে সম্মত থাকে, সে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে বাস্তব সার্বভৌম বলে আখ্যায়িত করা হয়।"

এখানে দেখা যাচ্ছে যে, বাস্তব সার্বভৌমত্বের ভিত্তি আইন নয়; বরং এর ভিত্তি হচ্ছে বল বা শক্তি এবং একই সাথে বাস্তব অবস্থা। বিশেষ করে দেশের যেকোনো ধরনের দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বাস্তব সার্বভৌমত্বই প্রকৃত ক্ষমতার আধারে পরিণত হয়। 

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় সর্বত্র বাস্তব সার্বভৌমত্বের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। সামরিক শাসনকে বাস্তব সার্বভৌমত্বের মধ্যে গণ্য করা যায়। বাস্তব সার্বভৌমত্ব অবৈধভাবেও আসতে পারে।

যেমন-স্পেনে ফ্রাঙ্কো আইনানুগ কর্তৃত্বের বলপূর্বক উচ্ছেদ করে বাস্তব সার্বভৌমত্বের অধিকারী হন। তবে বাস্তব সার্বভৌম যদি আইনগত সমর্থন পায় সেক্ষেত্রে তা আইনানুগ সার্বভৌমে রূপ লাভ করে

৬।আইনানুমোদিত সার্বভৌমত্ব: আইনানুমোদিত সার্বভৌমত্ব হচ্ছে এমন এক সার্বভৌমত্ব যেখানে কর্তৃপক্ষ আইনানুসারে ক্ষমতা প্রয়োগ করে। এ ধরনের সার্বভৌমত্ব আইনানুসারে স্বীকৃত সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারী।

সংবিধান অনুসারে কর্তৃপক্ষ এ ধরনের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগ করে। তবে আইনানুমোদিত সার্বভৌমত্ব অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত ক্ষমতা ভোগ করে না। আইনানুমোদিত সার্বভৌমত্বের ভিত্তি হলো আইন। এ সার্বভৌমত্ব আইনগতভাবে জনগণের আনুগত্য দাবি করে। সাংবিধানিকভাবে বা আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠিত সরকার মাত্রই আইনানুমোদিত সার্বভৌমত্বের অধিকারী।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আর্টিকেলটিতে সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে জানা উচিত। সেইদিক বিবেচনা করেই যাচাইকৃত তথ্য দ্বারা এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে।

আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে এসম্পর্কে আপনি ধারণা পেয়েছেন।যদি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এটি আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা সহপাঠীদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে তারাও এই বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে।

এছাড়াও আরো অন্যান্য আর্টিকেল গুলো যেমন বিজ্ঞান ভিত্তিক, সাধারণ জ্ঞানমূলক , চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী,বিভিন্ন আবিষ্কার ও আবিষ্কারক, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকলে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন।

কারণ এ ধরনের আর্টিকেলগুলো আমরা নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি।আর এই পোস্ট সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন মতামত কিংবা কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে যাবেন। যাতে করে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। আরো অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে এখানে শেষ করছি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

পরিশেষে আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url