ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ভাষা আন্দোলন ছিল একটি ঐতিহাসিক আন্দোলন। ১৯৫২ সালে এ আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। চলুন যেনে নেওয়া যাক ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য।
ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ভূমিকা

ভাষা আন্দোলন বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে ভারত-পাকিস্তান নামে দুটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ যেসব রাজনৈতিক আন্দোলন করেছিল তার মধ্যে ভাষা আন্দোলনই ছিল সবচেয়ে ব্যাপক, তীব্র ও গুরুত্বপূর্ণ।

১৮ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব অনস্বীকার্য। ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে। তবে এটি নিছক ভাষার জন্য আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ভাষা আন্দোলনের গভীরে প্রোথিত ছিল পূর্ব বাংলার সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা।

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দেশবিভাগের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। স্বাভাবিকভাবে বাংলা ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার অন্যতম দাবিদার। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ও মুসলিম লীগ চক্র তা না করে মুষ্টিমেয় লোকের ভাষা উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

বাঙালি জাতি তাদের এ অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় বাঙালি ছাত্রসমাজ, যুব সম্প্রদায়, বুদ্ধিজীবী ও আপামর জনসাধারণ এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন পরিচালনা করে, ইতিহাসে যা ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন নামে পরিচিত। এ আন্দোলন ছিল সন্দেহাতীতভাবে একটি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন।

বাঙালির ভাষা আন্দোলন বিশ্ব সমাজে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের অমর স্বাক্ষর হিসেবে বিবেচিত। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি একটি অসাম্প্রদায়িক জাতীয় চরিত্র লাভ করে। মূলত ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত জাতীয় চেতনার পথ ধরেই অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।

ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ভাষা আন্দোলন একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হলেও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এর গুরুত্ব ছিল  অপরিসীম। বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ এবং স্বাধিকার আন্দোলনের ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন শুধু ভাষার আন্দোলন ছিল না।

এটি প্রাথমিকভাবে বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য পরিচালিত হলেও কালক্রমে তা রাজনৈতিক চরিত্র ওতাৎপর্য লাভ করে। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশের আপামর জনসাধারণ রাজনৈতিক স্বাধিকারের ব্যাপারে সচেতন হয়ে ওঠে। ভাষা আন্দোলন পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রামের দৃঢ় মনোবল আত্মপ্রত্যয় সৃষ্টি করেছে।
নিম্নে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোচনা করা হলোঃ

১.বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান: ভাষা আন্দোলনের সুদূরপ্রসারী ফলাফল
হচ্ছে বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এ আন্দোলনের মাধ্যমে ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটে। ১৯৪০ সালে দেওয়া জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের অসারতা বেরিয়ে আসে এর মধ্য দিয়ে। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি একটি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের সাথে শুধু ধর্মের বন্ধন ছাড়া বাঙালির যে আর কোন বন্ধন নেই, তা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় বাংলার জনগণ। এমনিতেই বাঙালি জাতিসত্তার ভাষিক পরিচয় হচ্ছে বাংলা। এ জাতিসত্তাকে নিশ্চিহ্ন করার পাকিস্তানি ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

ভাষা আন্দোলন বাঙালির মধ্যে যে অধিকার চেতনা জন্ম দেয় তা যেমন ছিল ভাষাকেন্দ্রিক তেমনি জাতিসত্তা ও ভূখণ্ডভিত্তিক। এভাবে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটে

২.মুসলিম লীগের পতন ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শাসকদল মুসলিম লীগের প্রতি পূর্ব বাংলার জনগণের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ছিল খুবই উল্লেখযোগ্য। যে দলটির নেতৃত্বে পাকিস্তান আন্দোলন হয়েছিল। অল্প দিনের মধ্যেই ভাষা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে পূর্ব বাংলায় দলটির জনপ্রিয়তা শূন্যের কোটায় নেমে আসে।

১৯৪৯ সালে টাঙ্গাইল উপনির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রার্থী শামসুল হকের নিকট মুসলিম লীগের প্রার্থী খুররম খান পন্নী পরাজিত হয়। শ্রেণি চরিত্র এবং আঞ্চলিক স্বার্থে জড়িত হবার দরুন দলটি ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

পূর্ব বাংলার জনগণের নিকট মুসলিম লীগের খোলস উন্মোচিত হয়ে পড়ে। বস্তুত ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের নিকট শোচনীয়ভাবে পরাজয়ের মাধ্যমে বাংলার মাটিতে দলটির কবর রচিত হয়।

৩. অসাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টি: ভাষা আন্দোলন ছিল অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ধর্মের দোহাই এবং সংকীর্ণ আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উপর উর্দুকে জোর করে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলার প্রগতিশীল ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে সাধারণ জনগণ তা হতে দেয়নি।

ভাষা আন্দোলনই এদেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পথ প্রশস্ত করে। ভাষা আন্দোলনের প্রভাবে ১৯৫০-৫৩ সালের মধ্যে গণতান্ত্রিক যুবলীগ, গণতন্ত্রী দল, ছাত্র ইউনিয়ন প্রভৃতি অসাম্প্রদায়িক ছাএ ও রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। এ সময় পূর্ব পাকিস্তান 'মুসলিম ছাত্রলীগ' মুসলিম কথাটি বর্জন করে। এতে পূর্ব বাংলায় হিন্দু- মুসলমান সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়।
৪. ছাত্রসমাজের গুরুত্ব বৃদ্ধি : ভাষা আন্দোলনের সাফল্য পূর্ব বাংলার ছাত্রসমাজকে একটি প্রচ্ছন্ন রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করে। ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের সংগ্রামী ভূমিকা এবং আত্মদান ছিল খুবই প্রশংসাযোগ্য। মূলত এ আন্দোলনের প্রভাবে ছাত্র রাজনীতির সাংগঠনিক দুর্বলতা দূরীভূত হয়।

পরবর্তী সকল আন্দোলন সংগ্রামে শামিল হতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে ভাষা আন্দোলন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট আন্দোলন, ৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন এবং ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ছাত্রদের যে সাহসী ভূমিকা তা ছিল ভাষা আন্দোলনেরই ফলশ্রুতি।

৫. অধিকার আদায়ের শিক্ষা: রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন এদেশের বঞ্চিত ও শোষিত মানুষকে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে অধিকার আদায়ের শিক্ষা দেয়। যে আশা- আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষ পাকিস্তান আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিমাতাসুলভ আচরণের ফলে তা অচিরেই ধূলিসাৎ হয়ে যায়।
বিশেষকরে পাকিস্তান স্বাধীনতার পর পর ভাষাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানিদের মনোভাব বাঙালিদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণার সৃষ্টি করে। বাঙালি ছাত্র ও তরুণ সমাজ রক্তের বিনিময়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। এ রক্তদানের মাধ্যমে বাংলার জনগণ পরবর্তীতে অন্যান্য অধিকার আদায়ের প্রশ্নে সচেতন হয়ে ওঠে।

৬. গণতান্ত্রিক চেতনা সৃষ্টি: ভাষা আন্দোলন এ দেশের মানুষের মনে গণতন্ত্রের প্রতি অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। বাংলা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা। অধিকাংশ মানুষ চেয়েছিল বাংলা হবে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু পাকিস্তান সরকার অধিকাংশ মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর এরূপ স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ বাংলার সাধারণ মানুষের মনে  প্রকৃত গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা জন্ম দেয়। দাবি উত্থাপন, দাবি আদায় সর্বোপরি রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে ভাষা আন্দোলন এ দেশের মানুষকে গণতন্ত্রকামী করে তোলে।

৭. জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা: ভাষা আন্দোলন বাংলার জনগণের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার অভিন্ন দাবিতে একত্রিত হয়ে সে দিন আন্দোলন করেছিল। বিশেষ করে এ আন্দোলনের মাধ্যমে বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়।
ছাত্র, বুদ্ধিজীবী ও পেশাদার শ্রেণির ঐক্য জাতীয় ঐক্যের সূত্রপাত করে। পরবর্তীতে এ ঐক্য জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে সহায়ক হয়েছে।

৮. বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণির গুরুত্ব বৃদ্ধি: পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী মুসলিম লীগ ছিল সামন্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির দল। পাকিস্তান সৃষ্টির পর মুসলিম লীগ  ক্ষমতাসীন হলে বিশেষ করে বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণি নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়ে।

কিন্তু ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিশেষ করে পূর্ব বাংলার রাজনীতিতে বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণির সক্রিয় হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গঠন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালি মধ্যবিত্ত শ্রেণিই গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে।

৯. আন্দোলন সংগ্রামের অনুপ্রেরণা সৃষ্টি: ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলার জনগণের মধ্যে যে সংগ্রামী চেতনা ও ঐক্যের সৃষ্টি হয় তা পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রামে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে নির্মিত শহিদ মিনার এবং প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি 'শহিদ দিবস' পালনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে আন্দোলনের প্রাণশক্তি।
তাই বলা যায়, ভাষা আন্দোলন শুধু একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল না, এটি ছিল বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম সোপান। ৫৪ এর যুক্তফন্ট আন্দোলন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন সর্বোপরি আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব ছিল অত্যন্ত সুস্পষ্ট।

১০.রাজনৈতিক গুরুত্ব: ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন। এ আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলার জনগণের পক্ষে ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অধিকার অর্জনের পথ প্রশস্ত হয়। ভারত বিভাগের পর থেকে বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিমাতাসুলভ আচরণ পাকিস্তানের প্রতি এদেশের মানুষের মোহভঙ্গ ঘটে।

প্রথমে এ আন্দোলন ছিল ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য। কিন্তু ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সালের ঘটনাপ্রবাহ ভাষা আন্দোলনকে বাংলার মানুষের আর্থসামাজিক রাজনৈতিক বিভিন্ন সমস্যার সাথে গভীর সূত্রে গ্রথিত করে। সাধারণ মানুষ এর দ্বারা নিজেদের স্বতন্ত্র রাজনীতি, অর্থনীতি শিক্ষা ও সংস্কৃতি গড়ে তোলার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে থাকে।

আর এরূপ উপলব্ধি মানুষের মনে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে তীব্রতর করে তোলে। তাই বলা যায়, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ছিল অপরিসীম।

ভাষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব অত্যন্ত গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ। ভাষা আন্দোলনের মূল লক্ষ্যই ছিল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা ও সমুন্নত রাখা। ফলে ভাষা আন্দোলন আমাদের সংস্কৃতিকে যেমন পরিপুষ্ট করেছে তেমনি ভাষা ও সাহিত্যকে করেছে সুসমৃদ্ধ। 

ভাষা আন্দোলনে বাঙালি ছাত্র ও তরুণ সমাজের রক্তদান এবং আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া শহিদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি এবং শহিদ মিনার এখন আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, জাতীয় জাগরণের অনন্য প্রতীক। প্রথম শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছিল ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রী একরাতের মধ্যেই শহিদ মিনারটি বানিয়েছিল। এর নকশা প্রণয়ন করেছিলেন মেডিকেল কলেজের ছাত্র সাঈদ হায়দার। ১৯৫২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শহিদ শফিউরের পিতা শহীদমিনার উদ্বোধন করেন।২৬ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন আবুল কালাম শামসুদ্দিন।

এ দিন অপরাহ্নে পুলিশ এটি নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে কাগজের শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়। ১৯৬৩ সালে অস্থায়ী শহিদ মিনারের স্থলে শিল্পী হামিদুর রহমানের নকশায় স্থায়ী শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী দ্বিতীয়বারের মতো সে শহিদ মিনার ভেঙে ফেলে।

দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালে সে নকশা অনুযায়ী শহিদ মিনার পুনঃনির্মিত হয়। এছাড়া আন্দোলনের প্রত্যক্ষ প্রভাব ও চেতনায় অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৫ সালে বাংলা একাডেমি, ১৯৬৩ সালে ছায়ানট, ১৯৬৪ সালে নজরুল একাডেমি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

এসব প্রতিষ্ঠান বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে গড়ে উঠেছে একুশের বইমেলা। এটি এখন বাঙালির প্রাণের মেলা হিসেবে খ্যাত। প্রতি বছর 'একুশ পদক' বিতরণ এদেশের সংস্কৃতি ও সাহিত্যচর্চাকে সুসমৃদ্ধ করেছে নিঃসন্দেহে।

বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা সাহিত্যেভাষা আন্দোলনের প্রভাব কতখানি তা 'একুশে সাহিত্য' নামক সাহিত্যের আলাদা ধারা এবং তার বিশালতা থেকে কিছুটা অনুমান করা যায়। একুশের প্রথম তিনটি সংকলন হলো: (১) ওরা প্রাণ দিল, প্রকাশ সেপ্টেম্বর ১৯৫২,

সম্পাদক প্রমথ নন্দী, (২) হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত 'একুশে ফেব্রুয়ারি' প্রকাশকাল মার্চ, ১৯৫৩ ও (৩) ডি. এ. রশীদ এবং মহিউদ্দিন আহমদ সম্পাদিত 'একুশের সংকলন' প্রকাশকাল ১৯৫৬। একুশের প্রথম গান লিখেন কবি ও গীতিকার অধ্যাপক আনিসুল হক চৌধুরী। এতে সুরারোপ করেন গণসংগীত শিল্পী শেখ লুৎফুর রহমান।

একুশের প্রথম কবিতা কবি মাহবুব আলম চৌধুরীর। কবিতাটির নাম ছিল, 'কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি'। একুশের প্রথম স্মরণিকা ছিল ঢাকা কলেজ থেকে প্রকাশিত 'শহিদ স্মরণে'। এখানেই প্রকাশিত হয়েছিল আবদুল গাফফার চৌধুরীর বিখ্যাত কবিতা 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।' ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এটি প্রকাশিত হয়।

এ কবিতাটির সুর করেন মহৎ সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদ। প্রভাতফেরির অনিবার্য গান হিসেবে এটি বিবেচিত। ১৯৫৩ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে মুনীর চৌধুরী কবর নাটক রচনা করেন। এছাড়া জহির রায়হানের উপন্যাস আরেক ফাল্গুন, শওকত ওসমানের আর্তনাদ, সেলিনা হোসেনের নিরন্তর ঘণ্টা ধ্বনি,

সিনেমা, 'জীবন থেকে নেয়া', শামসুর রাহমানের 'বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্ণমালা', কাব্য একুশে সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সংযোজন। ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলা একাডেমির পরিচালক আমিরুল মোমেনীন সংকলিত ও সম্পাদিত একুশের সংকলন: গ্রন্থপঞ্জি যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ১২৪২ তা থেকে একুশে সাহিত্যের সমৃদ্ধ ধারার বিশালতা অনুমান করা চলে।

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থসংখ্যাও প্রচুর। বদরুদ্দিন উমর লিখিত পূর্ব বাংলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি (তিন খণ্ডে) একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ।এভাবে শহিদদের আত্মত্যাগের মহিমায় ভাস্বর ভাষা আন্দোলন। এদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী।

ভাষা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে রচিত হয়েছে স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন। ভাষা শহিদদের রক্তভেজা সিঁড়ি বেয়ে অর্জিত হয়েছে লাল সবুজের পতাকা, সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যুদয়। তাই ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য ও একুশের চেতনার যথাযথ অনুধাবন ও গুরুত্বদানের মধ্যেই স্বাধীনতার সাফল্য নিহিত।

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে

১৯৫২ সালের ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার জন্য যারা শহিদ হয়েছিলেন তাদের স্মরণে পরবর্তী ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি 'শহিদ দিবস' হিসেবে গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালিত হয়ে আসছে। প্রভাতফেরি, শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, আবৃত্তি অনুষ্ঠান ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশব্যাপী শহিদ দিবস পালিত হয়।

বাঙালি জাতির কাছে দিনটি একটি শোক ও আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। গর্বভরে বাঙালি জাতি এ দিনটি পালন করে। কারণ বাঙালিই হচ্ছে প্রথম জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছে। বাঙালির এ আত্মত্যাগ এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো (UNESCO) বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারির শহিদ দিবসকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।

এ স্বীকৃতির পিছনে কানাডা প্রবাসী কয়েকজন বাঙালি, কানাডায় অবস্থিত একটি বহুভাষী ও বহুজাতিক ভাষাপ্রেমী সংগঠন 'Mother Language Lover of the World' এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও তৎপরতা যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রাখে।

এ প্রক্রিয়ার শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ২৯ মার্চ। এদিন কানাডা প্রবাসী বাঙালি রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালামের উদ্যোগে Mother Language Lover of the World তৎকালীন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের নিকট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাঙালি জাতির শহিদ দিবস ২১ ফেব্রুয়ারিকে

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য একটি আবেদনপত্র প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে জাতিসংঘের পরামর্শক্রমে ১৯৯৯ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকার

এবং বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রসমূহে উদ্যাপন করার জন্য প্রস্তাব পেশ করে। ইউনেস্কোর ২৮টি রাষ্ট্র বাংলাদেশের এ প্রস্তাব লিখিতভাবে সমর্থন করে। প্রস্তাবটি ইউনেস্কোতে খসড়া প্রস্তাব-৩৫ (Draft Resolution-35) হিসেবে উত্থাপিত হয়।

১৯৯৯ সালের ১২ এবং ১৬ নভেম্বর এ প্রস্তাব কমিশন-২ কর্তৃক সর্বসম্মতভাবে পাস হয় এবং সাধারণ সম্মেলনে উত্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়। ১৭ নভেম্বর সাধারণ সম্মেলনে সকল সদস্য রাষ্ট্রের সম্মতিক্রমে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে।

পরবর্তী ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর ইউনেস্কোর সকল সদস্য রাষ্ট্র এবং ইউনেস্কো সদর দফতরে দিনটি যথাযোগ্য শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হচ্ছে। এ স্বীকৃতির মাধ্যমে বিশ্ববাসীর নিকট ভাষার জন্য বাঙালির রক্তদান ও আত্মত্যাগের ইতিহাস উপস্থাপিত হওয়ার সুযোগ হয়।

ভাষা আন্দোলনে কারা শহীদ হয়েছিলেন

‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দিয়ে ছাত্রদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে সামনের দিকে এগোতে থাকলে পুলিশ প্রথমে কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেফতার করে। তারপর তারা হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনে প্রবেশ এবং কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।

এক পর্যায় পুলিশ মেডিকেল কলেজ হোস্টেল গেটের সামনে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সমবেত ছাত্র জনতার উপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় পুলিশের গুলিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল বরকত, আবদুল জাব্বার, যুবক আবদুস সালাম এবং বাদামতলীর কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের পুত্র রফিক উদ্দিন শহিদ হন এবং আহত হন অনেকে।

ছাত্র হত্যার খবর শহরময় ছড়িয়ে পড়লে পুরো ঢাকা শহর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ দিন পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক আইনসভার অধিবেশন থেকে ছাত্রদের উপর নির্বিচারে গুলি ও ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে আবুল কালাম শামসুদ্দিন, মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, খয়রাত হোসেন, আনোয়ারা খাতুন প্রমুখ সদস্য ওয়াক আউট করেন।
উল্লেখ্য, ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন স্থানে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।২১ ফেব্রুয়ারির রক্তাক্ত ঘটনার প্রতিবাদে ২২ ফেব্রুয়ারি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঢাকা শহরে হরতাল পালিত হয়। এ দিন শহিদদের জানাজা শেষে ঢাকায় বিশাল শোক র‍্যালি বের হয়। এ দিন পুলিশের গুলিতে শহিদ হন শফিউর রহমান, রিকশাচালক আউয়াল এবং অজ্ঞাত এক কিশোর।

অহিউল্লাহ নামক এক কিশোরও এদিন শহিদ হয়েছিলেন। এভাবে বাঙালি জাতি স্বীয় মাতৃভাষাকে রক্ষা করার জন্য আত্মত্যাগ করে ইতিহাসে অমর হয়ে থাকল।ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মৃতি রক্ষার্থে ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীগণ ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে যেখানে আবুল বরকত শহিদ হয়েছিলেন সেই স্থানে একটি শহিদমিনার নির্মাণ করেন।

২৪ ফেব্রুয়ারি এটি শহিদ শফিউরের পিতা উদ্বোধন করেন, পরবর্তীতে ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে 'আজাদ' পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন শহিদ মিনারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন। উল্লেখ্য, এ দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শহিদ মিনারটি ভেঙে দেয়। কিন্তু বাঙালির মন থেকে তা তারা কখনো মুছে দিতে পারেনি।

এভাবে ভাষার জন্য বাঙালিদের দুর্বার আন্দোলন এবং আত্মত্যাগের প্রেক্ষাপটে সরকারকে রাষ্ট্রভাষার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করে। পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমিন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব দিতে বাধ্য হন। অবশেষে ১৯৫৬ সালের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক উপরোক্ত আর্টিকেলটিতে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা সবাই জানি আমাদের এই মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠা করতে অনেক সংগ্রাম এবং রক্ত ঝরাতে হয়েছে। তাই একজন বাংলাদেশের হিসেবে এর ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের সবারই জানা উচিত।

আর সবাইকে জানানোর এই ক্ষুদ্র প্রয়াসই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল। আশা করি আর্টিকেলটি পরে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে এটি আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন যাতে করে তারাও এই সম্পর্কে সম্যক ধারণা করতে পারে।

আর আপনি যদি এরকমই বাংলাদেশের ইতিহাস, বিজ্ঞান ভিত্তিক আর্টিকেল, সাধারণ জ্ঞানমূলক, বিভিন্ন আবিষ্কার ও আবিষ্কারক, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে নিয়ম করতে পারেন। কারণ এ ধরনের আর্টিকেল আমরা নিয়মিত প্রকাশ করে থাকি।

আমাদের ওয়েবসাইটের আরও অন্যান্য আর্টিকেলগুলো পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজকে এখানেই শেষ করছি ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। পরিশেষে আর্টিকেলটা সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ💚।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বিপ্লব আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রত্যেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url